সম্মানিত ইসলামী মাস, বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, মুহূর্ত ও সময়সমূহ সম্পর্কে এবং চন্দ্র ও সূর্যের গতিবিধির ব্যাপারে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফের আয়াত শরীফ উনাদের তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
, ০৯ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৪ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ২২ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০৭ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
تُوْلِجُ اللَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَتُوْلِجُ النَّهَارَ فِى اللَّيْلِ وَتُخْرِجُ الْحَى مِنَ الْمَيّتِ وَتُخْرِجُ الْمَيّتَ مِنَ الْحَى وَتَرْزُقُ مَنْ تَشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ.
অর্থ: আপনি রাতকে দিনের ভিতরে প্রবেশ করান এবং দিনকে রাতের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দেন। আর আপনিই জীবিতকে মৃতের ভিতর থেকে বের করে আনেন এবং মৃতকে জীবিতের ভিতর থেকে বের করে আনেন। আপনিই যাকে ইচ্ছা বেহিসাব রিয্ক দান করে থাকেন। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ- ২৭)
আয়াত উনার বিশুদ্ধ তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ:
{تُولِجُ اليل فِى النهار} يقول تزيد النهار على الليل فيكون النهار أطول من الليل {وَتُولِجُ النهار فِى اليل} يقول تزيد الليل على النهار فيكون الليل اطول من النهار.
অর্থ: (আপনি রাতকে দিনের ভিতরে প্রবেশ করান) দিনকে রাতের চেয়ে বড় করেন, তখন দিন রাতের চেয়ে বড় হয় (এবং দিনকে রাতের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দেন) রাতকে দিনের চেয়ে বড় করেন, তখন দিনের চেয়ে রাত বড় হয়। (তানবীরুল মাক্ববাস মিন তাফসীরি ইবনি আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা ওয়াফাত মুবারক: ৬৮ হিজরী পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ ২৭ নম্বর আয়াত শরীফ সংকলনকারী: হযরত মুহম্মাদ বিন ইয়া’কূব ফীরোযাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৮১৭ হিজরী)
{تُولِجُ اللَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَتُولِجُ النَّهَارَ فِى اللَّيْلِ} اى تأخذ من طول هذا فتزيده فى قصر هذا فيعتدلان ثم تأخذ من هذا فى هذا فيتفاوتان ثم يعتدلان. وهكذا فى فصول السنة ربيعًا وصيفًا وخريفًا وشتاء.
অর্থ: (আপনি রাতকে দিনের ভিতরে প্রবেশ করান এবং দিনকে রাতের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দেন) আপনি রাতের অতিরিক্ত অংশ দিনে যোগ করে দিনকে রাতের সমান করে দেন এবং এক দিকের এক অংশ অন্য দিকে সংযোজন করে একটিকে বড় ও অপরটি ছোট করে থাকেন। তারপর আবার উভয়কে সমান সমান করে থাকেন। আপনিই একটি বছরের মধ্যে গ্রীষ্ম, বসন্ত, হেমন্ত, শীত ইত্যাকার বিভিন্ন ঋতু পরিবর্তন করে থাকেন। (তাফসীরুল্ কুরআনিল আযীম অর্থাৎ তাফসীরু ইবনি কাছীর পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ ২৭ নম্বর আয়াত শরীফ লেখক: হযরত আবুল ফিদা ইসমাঈল বিন উমর বিন কাছীর কুরাশী দামিশকী শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৭০০ হিজরী ওয়াফাত: ৭৭৪ হিজরী)
عَنْ عَبْدِ اللهِ رضى الله عنه فِى قوله: {تُولِجُ اللَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَتُولِجُ النَّهَارَ فِى اللَّيْلِ} قَالَ: اَخْذُ الشِّتَاءِ مِنَ الصَّيْفِ وَالصَّيْفِ مِنَ الشِّتَاءِ،
عَنْ الحسن رحمة الله عليه فِى قوله عَزَّ وَجَلَّ : {تُولِجُ اللَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَتُولِجُ النَّهَارَ فِى اللَّيْلِ} قَالَ اللَّيْل اثنتا عشرة ساعة والنهار اثنتا عشرة ساعة، فَاذَا اَولج اللَّيْل فِى النَّهَار اخذ النَّهَار من ساعات اللَّيْل فطال النَّهَار وقصر اللَّيْل، واذا اولج النَّهَار فِى اللَّيْلِ اخذ اللَّيْل من ساعات النَّهَار فطال اللَّيْل وقصر النَّهَار.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম মুবারক (আপনি রাতকে দিনের ভিতরে প্রবেশ করান এবং দিনকে রাতের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দেন) অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বলেন, গ্রীষ্মকাল থেকে শীতকাল কিছু দিন গ্রহণ করে এবং শীতকাল থেকে গ্রীষ্মকাল কিছু দিন গ্রহণ করে।
হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম মুবারক (আপনি রাতকে দিনের ভিতরে প্রবেশ করান এবং দিনকে রাতের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দেন) অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বলেন, সাধারণতঃ রাত ১২ ঘন্টায় হয়ে থাকে এবং অনুরূপ দিনও ১২ ঘন্টায় হয়ে থাকে। যখন রাত দিনের মধ্যে প্রবেশ করে, এতে দিন রাতের কতক ঘন্টা সময় গ্রহণ করে, সুতরাং তখন দিন লম্বা হয় আর রাত ছোট হয়। আর যখন দিন রাতের মধ্যে প্রবেশ করে, এতে রাত দিনের কতক ঘন্টা সময় গ্রহণ করে, সুতরাং তখন রাত লম্বা হয় আর দিন ছোট হয়। (তাফসীরু ইবনিল মুনযির অর্থাৎ তাফসীরুন্ নীসাবূরী পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ ২৭ নম্বর আয়াত শরীফ লেখক: হযরত আবূ বকর মুহম্মাদ বিন ইবরাহীম বিন মুনযির নীসাবূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩১৯ হিজরী)
{تُولِجُ الليل فِى النهار} يعنى ما نقص من الليل دخل فى النهار حتى يبلغ خمسة عشرة ساعة هو اطول ما يكون والليل تسع ساعات وهو أقصر ما يكون {وَتُولِجُ النهار فِى الليل} يعنى ان ما نقص من النهار دخل فى الليل حتى يصير الليل خمس عشرة ساعة والنهار تسع ساعات.
অর্থ: (আপনি রাতকে দিনের ভিতরে প্রবেশ করান) অর্থাৎ রাত কমে গিয়ে দিনে প্রবেশ করে, এমনকি দিন সর্ব্বোচ্চ ১৫ ঘন্টা পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছে আর এমতাবস্থায় রাত সর্বনিম্ন ৯ ঘন্টায় নামে। (এবং দিনকে রাতের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দেন) অর্থাৎ দিন কমে গিয়ে রাতে প্রবেশ করে, এমনকি রাত সর্বোচ্চ ১৫ ঘন্টা পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছে আর এমতাবস্থায় দিন সর্বনিম্ন ৯ ঘন্টায় নামে।
(বাহরুল উলূম অর্থাৎ তাফসীরুস্ সামারকান্দী পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ ২৭ নম্বর আয়াত শরীফ লেখক: হযরত আবুল লাইছ নছর বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন ইবরাহীম সামারকান্দী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৭৩ হিজরী)
উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীর থেকে প্রমাণিত হলো যে, এলাকাভিত্তিক সাধারণত: দিন রাত ১২ ঘন্টা করে ২৪ ঘন্টায় হয়ে থাকে। তবে ঋতুর পরিবর্তনের কারণে দিন রাত বাড়ে ও কমে। দিন রাত সর্বোচ্চ ১৫ ঘন্টা আর সর্বনিম্ন ৯ ঘন্টা হয়ে থাকে।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৩০)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)