সমুদ্রে ভাসমান মরক্কোর ঐতিহাসিক দ্বিতীয় হাসান মসজিদ
, ০৭ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০১ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন, ৩০শে জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ১৬ই মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) স্থাপত্য নিদর্শন

দ্বিতীয় হাসান মসজিদ মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। এটি আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম সক্রিয় মসজিদ এবং বিশ্বের ৭ম বৃহত্তম মসজিদ। এর ২১০ মিটার (৬৮৯ ফুট) উঁচু মিনারটি বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম মিনার।
অবস্থানগত দিক থেকে এই মসজিদ বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণী ও মনোমুগ্ধকর স্থানে অবস্থিত। আলান্টিক মহাসাগর ও ভূমধ্য সাগরের মিলিতস্থলের এমন একটি স্থানকে এই মসজিদ নির্মাণের জন্যে নির্বাচন করা হয়েছে, যেখানে উল্লেখিত উভয় সমুদ্রের উত্তাল পানিরাশি ও ঢেউ পরস্পরকে আলিঙ্গন করছে। এতএব স্থান নির্বাচনে যে বিচক্ষণতা ও সৌন্দর্যবোধের পরিচয় দিয়েছেন মরক্কোর প্রয়াত শাসক দ্বিতীয় হাসান, তা সর্ব মহলেই ব্যাপকভাবে প্রসংশিত হয়েছে। ইসলামী স্থাপত্যকলার এই অপরূপ স্থাপনাটি মরক্কোর শাসক দ্বিতীয় হাসান ১৯৮৩ খৃ: কাসাব্লাংকার ফানা নামক অঞ্চলে ঠিক আটলান্টিকের পাড় ঘেষে এই মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
মরক্কোর শাসক দ্বিতীয় হাসান এর নির্দেশনায় সমগ্র রাজ্যের মরোক্কীয় কারিগরদের দ্বারা নির্মিত এ মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে ১৯৯৩ খৃ:।
মসজিদের দেয়ালগুলো হাতে কারুকাজ করা মার্বেলের তৈরি এবং ছাদটি সংকোচনযোগ্য। মসজিদে ১০৫,০০০ জন মুসল্লী একসাথে নামাজ আদায় করতে পারেন। ২৫,০০০ জন মসজিদের ভিতরে এবং আরও ৮০,০০০ জন মসজিদের বাইরের প্রাঙ্গণে।
৩০ আগস্ট ১৯৯৩ খৃ: হিজরী অনুযায়ী সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহুর শরীফ পবিত্র রবিউল আউয়াল শরীফ মাসে জুমুয়াহ আদায়ের মাধ্যমে এর শুভ উদ্ভোধন করা হয়। সর্বাধুনিক নির্মাণশৈলীতে নির্মিত এই সুবিশাল মসজিদের এক সাথে প্রায় শোয়া লক্ষ মুসল্লী নামায আদায় করতে পারেন। মসজিদের ছাদে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় রুফটপ সিস্টেম বসানো আছে, যার দ্বারা স্বংক্রিয়ভাবে ছাঁদে যে কোন অংশ প্রয়োজনে খোলা যায়। এর সুউচ্চ মিনার চূড়ায় এমন শক্তিশালী ও সর্বাধুনিক লেজার রশ্নি স্থাপন করা হয়েছে, যার মনোমুগ্ধকর আলোকচ্ছটা পবিত্র মক্কা শরীফ উনার দিকে ৩০ কিঃমি পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম।
মসজিদের ভৌগলিক অবস্থান:
মসজিদটি কাসাব্লাঙ্কার বিডি সিদি মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহতে অবস্থিত। ৯-হেক্টর (২২ একর) সুবিশাল যায়গা জুড়ে মসজিদ কমপ্লেক্সটি বন্দর এবং এল হ্যাঙ্ক বাতিঘরের মাঝখানে অবস্থিত। মসজিদটি কাসা-বন্দর এর নিকটতম ট্রেন স্টেশন থেকে প্রায় ২০ মিনিটের হাঁটা পথের দূরত্বে অবস্থিত। মসজিদের দক্ষিণ দিকের দিকে রয়েছে কেনাকাটার রাস্তাসহ দশ লেনের একটি প্রশস্ত পথ, এটি শহরের মাঝখানে অবস্থিত প্রাসাদ ওয়েদ এল মাখাজিনের প্রবেশদ্বার পর্যন্ত বিস্তৃত।
মসজিদটি আটলান্টিক মহাসাগরের উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ইসলমিক এই স্থাপনাটি আংশিকভাবে স্থলে এবং আংশিকভাবে সমুদ্রের উপর নির্মিত। সমুদ্র থেকে পুনরুদ্ধার করা একটি প্রাকৃতিক শিলাকে সংযুক্ত করার জন্য একটি কাঠামো তৈরি করে এই মসজিদের অবস্থানটি সম্পন্ন করা হয়। সমুদ্রের ঢেউয়ের ক্ষয়কারী ক্রিয়া থেকে মসজিদটিকে সুরক্ষা প্রদান করার জন্য দুটি বড় ব্রেকওয়াটারও তৈরি করা হয়, যা উচ্চতায় ১০ মিটার (৩৩ ফুট) পর্যন্ত। নির্মাণের সময় সমুদ্র থেকে স্তম্ভগুলির ভিত্তি সুরক্ষার জন্য ৮০০ মিটার (২,৬০০ ফুট) দৈর্ঘ্যের একটি অস্থায়ী জেটি স্থাপন করতে হয়েছিল। এর পরিবেশগত সুবিধা হল এটি শব্দ ও দূষণ মুক্ত এবং সমুদ্র থেকে সতেজ বাতাস প্রাপ্ত হয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তাজ-উল-মসজিদ ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ
২৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
টাইম ম্যাগাজিনের তালিকায় আশুলিয়ার জেবুন নেসা মসজিদ
২১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক চুনাখোলা মসজিদ
১৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১৪)
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (৩)
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (২)
০৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (১)
২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১১)
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ (৩)
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১০)
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ (২)
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ (১)
০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)