সুন্নতী মুবারক তা’লীম
সন্তানের জন্য আক্বীক্বা করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
, ২৫ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০১ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৪ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِنْ كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيْدٌ.
অর্থ: যদি তোমরা নেয়ামত মুবারক উনার শুকরিয়া আদায় করো; তাহলে অবশ্যই তোমাদের নিয়ামতসমূহ বৃদ্ধি করে দিব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও তাহলে- নিশ্চয়ই আমার শাস্তি কঠোর। (পবিত্র সূরা ইবরাহীম শরীফ; পবিত্র আয়াত শরীফ নং: ৭)
মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে অসংখ্য নিয়ামত মুবারক উনার মধ্যে অন্যতম নিয়ামত হচ্ছে, সন্তান। সন্তান লাভ করার পর পিতা-মাতার দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করা। আর শুকরিয়া আদায় করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে, মহাসম্মানিত সুন্নতী আমলসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সন্তানের হক্ব আদায় করা। পিতা-মাতার পক্ষ থেকে সন্তানের হক্বসমূহের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে, আক্বীক্বা করা। নি¤েœ আক্বীক্বা সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো।
আক্বীক্বার পরিচয়ঃ
পরিভাষায় সন্তান জন্ম গ্রহণ করার পর মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের শুকরিয়া মুবারক ও খুশি বহিঃপ্রকাশ হিসাবে উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের উদ্দেশ্যে যে পশু জবাই করা হয়, তাকে আক্বীক্বা বলা হয়।
পবিত্র আক্বীক্বা উনার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও ফায়দাঃ
সন্তানের জন্য আক্বীক্বা করা পিতা-মাতার দায়িত্ব-কর্তব্য। নবজাতক শিশুর জন্য আক্বীক্বা এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, এর ফযীলত মুবারক বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। আক্বীক্বা করা খাছ সুন্নত মুবারক হওয়ায়, আক্বীক্বা উনার বরকত মুবারকে নবজাতক শিশুর আপদ-বিপদ, বালা-মুসীবত দূর হয়ে যায়। নবজাতক শিশু সন্তানের শুকরিয়া আদায়ের নিদর্শন হিসেবে পিতা-মাতাকে সন্তানের জন্য আক্বীক্বা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সন্তান ছেলে বা মেয়ে যাই হোক না কেন, উভয়ের জন্য আক্বীক্বা করতে হবে।
সর্বোপরি, আক্বীক্বার উদ্দেশ্য হচ্ছে, মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক পালন করার মাধ্যম দিয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের রিযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করা।
আক্বীক্বা করা খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্তঃ
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য মহাসম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক:
আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উল্লেখ করেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন-
لَمَّا وُلِدَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَقَّ عَنْـهُ حَضْرَتْ عَبْـدُ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَسَمَّاهُ سَيِّدَنَا مَوْلٰنَا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহাসম্মানিত মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক করেন এবং উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নাম মুবারক রাখেন সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। (শাহরহুয যারকানী আলা মুয়াত্তা মালেক, পৃ. ৫৫৮; ইবনে আব্দিল বার, আল-ইস্তিয়াব)
উল্লেখ্য, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, রঊফুর রহীম, রহমাতুল্লিল আলামীন, ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, ছাহিবে নেয়ামত, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি প্রতি আরবী মাসের ১২ই শরীফে ও বিশেষভাবে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম (পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফে) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে বিশেষ আয়োজনে আক্বীক্বা মুবারক করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ নিসবত মুবারক হাছিল করার উত্তম মাধ্যম হচ্ছে, উনার সম্মানার্থে আক্বীক্বা মুবারক করা। তাই, সকলের জন্য আবশ্যক হলো উক্ত আক্বীক্বা মুবারকে আর্থিকভাবে শরীক থাকা।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘কিস্সা’
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)