শিক্ষা ব্যবস্থা কেন ধ্বংস করা হয়? (১)
, ১৭ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৯ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) আপনাদের মতামত
শিক্ষা জাতির মেরুদ-। কোন জাতির শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা মানে তার মেরুদ- ধ্বংস করা। কোন ব্যক্তির মেরুদ- ক্ষতিগ্রস্ত হলে যেমন সে আর সোজা হয়ে দাড়াতে পারে না, তেমনি কোন জাতির শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হলে সে জাতি আর মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারে না। নুয়ে থাকে।
ব্রিটিশরা এ অঞ্চলে আসার আগে এ অঞ্চলে মুসলমান প্রবর্তিত শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত উচু দরের ছিলো। সেই সময় মুসলমান প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থা ছিলো আরবী ও ফারসী ভাষার উপর নির্ভর। মুসলমানরা তো অবশ্যই হিন্দুরাও সেই ভাষায় শিক্ষা গ্রহণ করতো। কিন্তু উঁচু দরের শিক্ষা ব্যবস্থা থাকলে তো মানুষ উচু থাকবে, তাকে তো আর নিচু করা যাবে না, শাসন করা যাবে না। তাই এ অঞ্চলে এসে ব্রিটিশরা প্রথমে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছিলো। প্রবর্তন করেছিলো তাদের বানানো নিচু দরের শিক্ষা ব্যবস্থা।
কিন্তু ব্রিটিশরা যখন মুসলমান প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে ব্রিটিশ শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আসে, তখন শিক্ষিত মুসলমানরা সেই নিচু দরের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বর্জন করে। ইতিহাসে এ বিষয়টি ভিন্ন আঙ্গিকে লেখা হয়। বলা হয়, “মুসলমানরা নাকি ইংরেজী শিক্ষা গ্রহণ না করে পিছিয়ে পড়েছে। হিন্দুরা গ্রহণ করে এগিয়ে গিয়েছে। ” আসলে বিষয়টি এমন না। মুসলমানরা তখন উচ্চ শিক্ষিত এবং তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক উচু দরের। কিন্তু ব্রিটিশরা যখন সেই শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আসে , তখন মুসলমানরা সেটা বর্জন করে। কারণ উচু ছেড়ে কেউ নিচু জিনিস নিতে চায় না।
ইতিহাসের পাতায় ব্রিটিশরা কিন্তু এ কথা স্বীকার করে গেছে। যেমন-
১. এ এম ই সি বেইলি বলে- “তাদের কাছে এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল, যেটা আমরা ধ্বংস করেছি যা দ্বারা অত্যন্ত উচ্চমানের বুদ্ধিগত প্রশিক্ষন ও বিকাশ ঘটানো সম্ভব। এই শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তির মাঝে কোনরুপ ত্রুটি নেই, যদিও এটির উপস্থাপন পদ্ধতিটি অত্যন্ত পুরনো, তারপরও এটি তৎকালীন ভারতের যেকোন শিক্ষাব্যবস্থা থেকে অসীম মাত্রায় শ্রেষ্ঠ। এই শিক্ষাব্যবস্থাই তাদেরকে বুদ্ধিগত ও উপাদানগত শ্রেষ্ঠত্ব এনে দিয়েছে। ” (তথ্যসূত্র: ঐঁহঃবৎ, ড. ড. ওহফরধহ গঁংংধষসধহং, ঢ়. ১৩৩)
২. ইংরেজ প-িত জেনারেল স্লিম্যান মন্তব্য করে, “ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষার যে রকম অগ্রগতি হয়েছে, পৃথিবীর খুব কম সম্প্রদায়ের মধ্যেই সে রকম প্রসার হয়েছে। যে ব্যক্তি মাসে ২০ টাকা বেতনের চাকুরী করেন, তিনিও তার সন্তানকে প্রধানমন্ত্রীর সন্তানের সমতূল্য শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করেন। তারা আরবী ও ফারসী ভাষা মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করেন, যা আমাদের কলেজ যুবকেরা গ্রিক ও ল্যাটিন ভাষার মাধ্যমে ব্যকরণ, অলঙ্কারশাস্ত্র, তর্কোশাস্ত্র, শিক্ষা পেয়ে থাকে। মাত্র সাত বছরকাল অধ্যয়নের পর একজন মুসলমান যুবক মাথায় পাগড়ী পরিধান করে এবং অক্সফোর্ড থেকে পাশ করা নব্য যুবকের মতই- জ্ঞানের সেই সকল সংশ্লিষ্ট শাখায় পূর্ণতা লাভ করে থাকে। সে সক্রেটিস, এ্যারিস্টটল, প্লেটো, হিপোক্রেটিস, গ্যালন ও ইবনে সিনা সম্বন্ধে অনর্গল আলোচনা করতে পারে। ” (Z_¨m~Î: Sleeman, W. H. Rambles and Recollections of an Indian Official, Vol-II, London, 1893, pp. 523-524)
৩. উইলিয়াম অ্যাডম তার রিপোর্টে (১৮৩৫-১৮৩৮) বাংলায় এক লক্ষ প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিলো বলে উল্লেখ করেন। (Z_¨m~Î: Long, J., Adam's Reports. pp. 18-19 )
-শেখ মুহম্মদ রাফসানযানি।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুসলমানদের দমিয়ে রাখতেই ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ বুলি
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
এ সকল মুখোশধারীদের আসল পরিচয় অনেকেরই অজানা!
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
১০ ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যুব সমাজকে খেলাধুলার প্রতি ঝুঁকিয়ে দেয়া একটি ভয়াবহ চক্রান্ত
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, তাহলেই রাজধানী হবে সমস্যামুক্ত
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুলুমতন্ত্র থেকে খালিছ ইস্তিগফার-তওবা করুন
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
উপজাতিদের যেভাবে উস্কানি দিচ্ছে এনজিওগুলো
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিন্দুদের পূর্বপুরুষরাও একসময় মুসলমান ছিলো
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাবার খাবেন কোথায়?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের রক্তাক্ত ইতিহাস, যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জায়নবাদী ইহুদী পরিকল্পনার গোপন দস্তাবেজ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মীরা কখনোই চায়নি, এখনও চায় না মুসলমানদের উন্নতি
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)