শবে বরাতের হাদীছ শরীফ একদম ছহীহ; এ বিষয়ে সবাই একমত
, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারা শবে বরাত প্রমাণিত। রেজালবিদগণ সনদ ছহীহ হওয়ার ব্যাপারে একমত। বিশ্ববিখ্যাত হাদীছ শরীফের কিতাব “ইবনে হিব্বানে” ছহীহ সনদসহ বর্ণনা করেছেন-
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُعَافَى الْعَابِدُ بِصَيْدَا ، وَابْنُ قُتَيْبَةَ وَغَيْرُهُ ، قَالُوا: حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ خَالِدٍ الأَزْرَقُ ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو خُلَيْدٍ عُتْبَةُ بْنُ حَمَّادٍ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، وَابْنِ ثَوْبَانَ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ يُخَامِرَ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: يَطْلُعُ اللهُ إِلَى خَلْقِهِ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلاَّ لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ
অর্থ: হযরত মুয়ায বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মধ্য শাবানের রাতে মহান আল্লাহ পাক রহমতের ভান্ডার নিয়ে সকল সৃষ্টির প্রতি বিশেষ ভূমিকায় অবর্তীণ হন এবং মুশরিক অথবা হিংসুক ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (দলীল: সুনানে ইবনে হিব্বান- হাদীছ শরীফ নং ৫৬৩৬, মুজামুল কবীর লি তাবরানী ১৬৬৩৯, মুজামুল আওসাত লি তাবরানী ৬৭৭৬, সুনানে ইবনে মাজাহ ১৩৯০, শুয়াবুল ঈমান ৩৫৫২, হুলয়িতুল আওলিয়া ৫/১৯১)
পবিত্র এই হাদীছ শরীফ সম্পর্কে বিখ্যাত রিজাল বিশারদ আল্লামা হযরত নূরউদ্দীন ইবনে হাজার হায়ছামী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত কিতাব “মাযমাউয যাওয়ায়েদ ওয়া মানবাউল ফাওয়ায়েদ” কিতাবে বলেছেন-
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يطلع الله إلى جميع خلقه ليلة النصف من شعبان، فيغفر لجميع خلقه، إلا لمشرك، أو مشاحن رواه الطبراني في الكبير والأوسط ورجالهما ثقات
হাদীছ শরীফখানা উল্লেখ করে বলেছেন, “ইমাম তাবরানী উনার মু’জামুল কবীর ও আওসাত গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। হাদীছ শরীফের সকল রাবী ছেকাহ। (মাযমাউয যাওয়ায়েদ ওয়া মানবাউল ফাওয়ায়েদ ৬/১২৬: হাদীছ নম্বর ১২৯৬০)
বিখ্যাত ইমাম হযরত মুনযিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “আত তারগীব ওয়াত তারহীব” গ্রন্থে উক্ত হাদীছ উল্লেখ পূর্বক বলেছেন, ইমাম হিব্বান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছহীহ হিসাবে উনার কিতাবে উল্লেখ করেছেন। (আত তারগীব ওয়াত তারহীব হাদীছ নম্বর ১৫৪৪)
ইমাম মুনযিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উক্ত গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছেন এই কিতাবে যে হাদীছ শরীফ “ওয়া আন” দ্বারা শুরু সে সকল হাদীছ শরীফসমূহ সনদ ছহীহ। উক্ত হাদীছ শরীফখানা তিনি “ওয়া আন” দিয়েই শুরু করেছেন।
বর্তমানে যারা শবে বরাত অস্বীকার করে তাদের মূল গুরু সালাফী লা-মাযহাবীদের অন্যতম ইমাম, নাছির উদ্দীন আলবানী তার “সিলসিলাতু আহাদীছি আছ ছহীহা” কিতাবে পবিত্র শবে বরাতের হাদীছ শরীফকে ছহীহ বলে উল্লেখ করে লিখেছে-
أما حديث معاذ فيرويه مكحول عن مالك بن يخامر عنه مرفوعا به حديث صحيح ، روي عن جماعة من الصحابة من طرق مختلفة يشد بعضها بعضا وهم معاذ ابن جبل وأبو ثعلبة الخشني وعبد الله بن عمرو وأبي موسى الأشعري وأبي هريرة وأبي بكر الصديق وعوف ابن مالك وأم المؤمنين الثالثة الصديقة عائشة عليها السلام
হাদীছটি ছহীহ। কেননা একদল ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বিভিন্ন সূত্রে নিসফে শা’বানের মর্যাদার উপর একাধিক হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে। বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হওয়ার কারণে হাদীছ শরীফখানা মজবুতি লাভ করেছে। যে সকল ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম থেকে হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে উনারা হলেন, হযরত মু‘আয ইবনে জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু সালা’বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু মূসা আল আশআরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম, হযরত আউফ বিন মালেক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম। এছাড়াও অনেক আকাবীর ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেন। (দলীল: সিলসিলাতু আহাদীছি আছ ছহীহা ৩য় খন্ড ১৩৫ পৃষ্ঠা: হাদীছ নম্বর ১১৪৪, মূল কিতাবের স্ক্যান কপি দেয়া হলো)
সুতরাং প্রমাণ হলো, উক্ত হাদীছ শরীফ ছহীহ। এখন যারা এমন ছহীহ হাদীছ শরীফ অস্বীকার করবে এবং শবে বরাতের বিরোধিতা করবে তাদের জন্য বলতে হচ্ছে যে, উক্ত হাদীছ শরীফেই তাদের ফয়সালা বলা আছে। তারা হচ্ছে মুশরিক অথবা হিংসুক। এদের নছীবে শবে বরাত জুটবে না।
-খাজা মুহম্মদ নূরুদ্দীন পলাশ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)