পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে
রোযা অবস্থায়-ইনজেকশন, ইনহেলার, স্যালাইন ও টিকা নেয়া অবশ্যই রোযার ভঙ্গের কারণ (২)
, ২৫ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৭ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
অথচ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট বর্ণিত রয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُـؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ اِنَّـمَا الْاِفْطَارُ مِـمَّا دَخَلَ وَلَيْسَ مِـمَّا خَرَجَ وَفِـىْ رِوَايَةٍ اَلْفَطْرُ مِـمَّا دَخَلَ وَلَيْسَ مِـمَّا خَرَجَ.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন নিশ্চয়ই শরীরের ভিতর কিছু প্রবেশ করলে রোযা ভঙ্গ হবে। কিছু বের হলে ভঙ্গ হবে না। ” (আবূ ইয়ালা শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক উনার পরিপ্রেক্ষিতে অনুসরণীয় সমস্ত ইমাম, মুজতাহিদ ও ফক্বীহগণ ফতওয়া দিয়েছেন যে, রোযা অবস্থায় ইনজেকশন, ইনুসলিন, ইনহেলার ইত্যাদি নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ। যা ফিক্বাহ’র বিশ্বখ্যাত কিতাব- ফতওয়ায়ে শামী, বাহরুর রায়িক, ফতহুল ক্বাদীর, হিদায়া, আইনুল হিদায়া, জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ ইত্যাদি কিতাবে উল্লেখ আছে।
আর চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে ইনজেকশনের দ্বারা প্রবেশকৃত ওষুধ পাকস্থলী ও মগজে পৌঁছে থাকে। আর শরীয়তের বিধান হলো, পাকস্থলী বা মগজে কিছু প্রবেশ করলেই রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে; তা যেভাবে এবং যে স্থান দিয়েই প্রবেশ করুক না কেন।
অতএব, রোযা অবস্থায় ইনজেকশন, স্যালাইন, ইনহেলার, ইনসুলিন নেয়া হারাম ও রোযা ভঙ্গের কারণ। অর্থাৎ রোযা অবস্থায় ইনজেকশন, স্যালাইন, ইনহেলার, ইনসুলিন নিলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
দ্বীনপ্রিয় সরলপ্রাণ মুসলমান উনাদেরকে বিভ্রান্তি ও গুমরাহীমূলক ভুল ফতওয়া থেকে ফিরিয়ে এনে ছহীহ ও হক্ব মত, হক্ব পথ প্রদর্শনের লক্ষ্যে আমাদের এ প্রচেষ্টা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে না-হক্ব পথ থেকে ফিরে থাকার এবং হক্ব পথের উপর ইস্তিকামত থাকার তাওফীক্ব দান করেন। (আমীন)
মুক্বাদ্দিমাহ:
খালিক্ব, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا خَلَقْتُ الْـجِنَّ وَالْاِنْسَ اِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ.
অর্থ: “আমি জিন ও ইনসানকে একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছি। ” (পবিত্র সূরা যারিয়াহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
আর বান্দার জন্যে সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য নিয়ামত। এক কথায় এ পৃথিবীর সবকিছুই বান্দার ফায়দার জন্যে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে যে-
هُوَ الَّذِيْ خَلَقَ لَكُم مَّا فِي الْاَرْضِ جَـمِيْعًا.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক যিনি তোমাদের (ফায়দার) জন্য দুনিয়ার সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاِنَّكُمْ خُلِقْتُمْ لِلْاٰخِرَةِ وَاِنَّ الدُّنْيَا خُلِقَتْ لَكُمْ.
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই দুনিয়া তোমাদের (খিদমতের) জন্য তৈরী করা হয়েছে আর তোমরা সৃষ্টি হয়েছ পরকালের জন্য। ” (শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী: খ- ১৩, পৃষ্ঠা ১৫৩)
মূলকথা হলো- মহান আল্লাহ পাক তিনি যত কিছুই সৃষ্টি করেছেন, তার সবই ফায়দাজনক বা উপকারী, কোনটিই অহেতুক সৃষ্টি করেননি। আর তাই এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هٰذَا بَاطِلًا
অর্থ : “আমাদের রব এগুলো অহেতুক সৃষ্টি করেননি। ” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯১)
তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো- মানুষ এ পৃথিবীর কোন কিছুই নিজের ইচ্ছে মত ব্যবহার বা গ্রহণ করতে পারবেনা, তাকে এ ব্যাপারে অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মেনে চলতে হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সকল কাফিররাই মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৫)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৪)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৯)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)