রাষ্ট্র পদ্ধতিতে কালো টাকা এবং দ্বীন ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম টাকা (১)
, ২৭ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১২ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ১০ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২৬ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) আপনাদের মতামত
আমরা অনেক সময় কালো টাকা বা ব্ল্যাক মানি বলে একটা শব্দ শুনি। অনেকে এই ব্ল্যাক মানিকে হারাম বা অবৈধ টাকা বলেও মনে করে। আসলে রাষ্ট্র পদ্ধতিতে কালো টাকা আর দ্বীন ইসলামে হারাম টাকা এক জিনিস নয়। পবিত্র দ্বীন ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম বা অবৈধ টাকা বলা হয় সেই টাকাকে যে, যে টাকা হারাম (শরীয়তে নিষিদ্ধ) কোন উপায়ে উপার্জন করা হয়। অপরদিকে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় কালো টাকা বলা হয় সেই টাকাকে, যেই টাকার ইনকাম ট্যাক্স (আয়কর) পরিশোধ করা হয় না।
মূলতঃ পবিত্র দ্বীন ইসলামে উপার্জিত অর্থ পরিশুদ্ধ করার জন্য যাকাত দিতে হয়, ট্যাক্স দিতে হয় না। এক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি ইনকাম করে খরচ করার পর অবশিষ্ট নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পরিমাণ নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী জমা থাকলে তার যাকাত দিতে হয়। এর পরিমাণ শতকরা ২.৫%। অপরদিকে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় কোন ব্যক্তি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ইনকাম করলেই সেই ইনকামের একটা অংশ ট্যাক্স হিসেবে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। এর পরিমাণ সর্বনিম্ন ৫% থেকে শুরু করে ৩০% শতাংশ পর্যন্ত হয়। কেউ সেই ট্যাক্স না দিলেই মূল টাকাকে কালো টাকা বা ব্ল্যাক মানি বা অপ্রদর্শিত অর্থ বলে।
আসলে কষ্ট করে ইনকামের টাকার এত উচ্চহারে ট্যাক্স অনেকেই ইচ্ছুক থাকেন না। বিশেষ করে যারা বেশি ইনকাম করেন, তাদের ৩০% এর উপর কেটে নেয়া হয়, ফলে কেউ কেউ সেই টাকা রাষ্ট্রকে প্রদর্শন করতে চায় না। আমরা মাঝে মাঝে সংবাদে দেখি, অনেকে বিদেশে টাকা পাচার করে। পাচারকৃত এ অর্থের মধ্যে কালো টাকা রয়েছে।
আবার যেহেতু বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণ ট্যাক্স কেটে রাখা হয়, এজন্য অনেক ব্যবসায়ী সাদা টাকা দেশে ইনভেস্ট করতে চায় না, বিদেশে ইনভেস্ট করে। সরকার যদি এত বিপুল পরিমাণে টাক্স কেটে না রাখতো, তবে অনেক ব্যবসায়ী টাকা বিদেশে না পাঠিয়ে হয়ত দেশেই রাখতো বা দেশে ইনভেস্ট করতো, যা দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতো।
মূলতঃ বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকাগুলো বিদেশের বিভিন্ন ‘ট্যাক্স হেভেন’ এ চলে যায়। ট্যাক্স হেভেন হচ্ছে, সেই সব রাষ্ট্র, যেখানে ইনকাম ট্যাক্স নেই অথবা খুবই সামান্য।
লক্ষ্য করলে দেখবেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন বিদেশী ফান্ডপ্রাপ্ত এনজিওগুলো কালো টাকার বিরুদ্ধে বেশ সোচ্চার। তার সাথে কিছু সুশীল দৈনিক পত্রিকাও ‘বদলে যাও, বদলে দাও’ শ্লোগান দিয়ে কালো টাকার বিপক্ষে কথা বলে। ‘কালো টাকা মানেই দুর্নীতি’, ‘কালো টাকাকে কোনভাবেই সুযোগ দেয়া যাবে না’ ইত্যাদি নিয়ে বেশ জোরালো শ্লোগান তুলে। প্রশ্ন হচ্ছে, বিদেশী ফান্ডিং এ পরিচালিত এসমস্ত এনজিওগুলো কার স্বার্থে কথিত ‘কালো টাকা’ নিয়ে এত সোচ্চার? বিদেশীদের এখানে স্বার্থ কি? কেন তারা টাকা খরচ করে বাংলাদেশে এ সমস্ত এনজিও পরিচালনা করছে?
-এস হাবীব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিজাতীয়দের দেশগুলোর ‘সন্ত্রাসীপনার’ একটি পরিসংখ্যান
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খিলাফত মানে কী?
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নারিকেল দ্বীপে পর্যটকদের ভ্রমনে বাধা; নেপথ্যে রয়েছে ভয়াবহ ষড়যন্ত্র
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নারিকেল দ্বীপকে যেভাবে করা হয়েছিলো সেন্টমার্টিন
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (৬)
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দূষণের অজুহাতে নারিকেল দ্বীপে যাওয়া নিষিদ্ধ করতে হলে, সবার আগে রাজধানী ঢাকায় মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (৫)
২৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন রোগই ছোঁয়াচে নয়, ছোঁয়াচে বিশ্বাস করা কুফরী
২৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (৪)
২৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (৩)
২৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (৯)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)