রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি (১৫..)
, ২০ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৯ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ০৮ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ২৪ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সফর দলের কাজ হচ্ছে বছরের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাসে নির্দিষ্ট কয়েকদিনের জন্য দেশব্যাপী সফর করে যামানার সুমহান মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নির্দেশাবলী অন্য সকলের কাছে পৌঁছে দেয়া এবং উনার মুবারক নির্দেশাবলী অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করে সুমহান দরবার শরীফে ফিরে আসা। কিন্তু এই কার্যক্রম সম্পন্ন করার বিষয়টি লেখা যত সহজ বাস্তবে আনজাম দেয়া তত সহজ নয়। এই কাজ বাস্তবায়নের জন্য চাই তীক্ষè মেধা, তা’লীম-কৌশল, খালিছ দ্বীনী জযবা ও সমন্বিত সুষ্ঠু পরিকল্পনা ইত্যাদির সমন্বয়। আর এসব বিষয়ে নিখুঁতভাবে তা’লীম দিয়ে সফর দলের সকল সদস্যদের তৈরি করেন শাহদামাদে আউওয়াল সাইয়্যদুনা হযরত শাফীউল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
সফর দল যাত্রা শুরু করার বেশ অনেকদিন আগে থেকেই শুরু হয় উনাদের তা’লীম। সফর দল সাধারণভাবে যেসব বিষয়ের উপর তা’লীম নেন এবং সফরে গিয়ে মানুষকে উৎসাহিত করেন তা হচ্ছে-
(১) ‘ফালইয়াফরাহু’ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন:
(ক) কিভাবে সর্বত্র পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মজলিস ও মীলাদ শরীফ জারি করা যায় এবং কিভাবে প্রতিদিন ৩০টি মজলিস জারি রাখা যায় সে বিষয়ে উনারা সফররত এলাকার মানুষদের তা’লীম দিয়ে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
(খ) কিভাবে সম্মানিত সুন্নত প্রচারকেন্দ্র ও বাইতুল হিকমাহ (লাইব্রেরী) প্রতিষ্ঠা করা যায়- সে বিষয়ে সফর দল মানুষদেরকে উৎসাহিত করেন। কারণ জ্ঞান হচ্ছে মুসলমান উনাদের হারিয়ে যাওয়া ধন। কমপক্ষে একটি আলমারি কিনে বা তৈরি করে সেখানে কিতাব রেখে হলেও লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠার বিষয়ে উনারা জোর তাগিদ দিয়ে থাকেন।
(২) সফর দল সবার নাজাত ও বরকত লাভের জন্য বিভিন্ন দান কার্যক্রমে শরীক থাকার ব্যাপারে মানুষদেরকে উৎসাহিত করেন। যেমন ছদকায়ে জারিয়ার কাজ করা, যাকাত, ফিতরা, উশর, দানবক্স, হাদিয়া বক্স, মান্নত, কাফফারা, বাইতুল মাল ইত্যাদির কাজ করা। এছাড়া কুরবানীর চামড়ার টাকা উত্তোলন ও যবেহ করার টাকা সংগ্রহ করে দরবার শরীফস্থ ইয়াতীমখানায় দেয়ার ব্যাপারেও সফর দল মানুষকে উৎসাহিত করে থাকেন। মানুষ যেন এসব নেক কাজসমূহে নিজেকে সম্পৃক্ত করে নেয় সে ব্যাপারে সফর দল মানুষকে সম্মানিত শরীয়ত উনার তা’লীম, যা উনারা সম্মানিত দরবার শরীফ থেকে শিখে যান, তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে থাকেন।
(৩) মাদরাসা-মসজিদ প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা: জান্নাতে যেন মানুষরা নিজের স্থায়ী বাসস্থান গড়তে পারেন সেলক্ষ্যে সফর দল মানুষদেরকে মসজিদ-মাদরাসা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার জন্য জায়গা দান করতে বা ওয়াক্বফ করতে উৎসাহিত করে থাকেন।
(৪) যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহীদ, হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার হাত মুবারকে বায়াত করানোর লক্ষ্যে মানুষকে মুবারক ছোহবতে এনে আল্লাহওয়ালা বানানোর লক্ষ্যেও উনারা কাজ করে থাকেন।
প্রকাশনা
সকল হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উনাদের সুযোগ্য এবং খিলাফতপ্রাপ্ত সম্মানিত মুরীদ উনাদের মাধ্যমে সিলসিলার শিক্ষা রেখে গেছেন। ফলে ইলমে তাসাউফের অনেক সিলসিলার মাঝে লিখিত বিষয় কম পাওয়া যায়। আবার অনেক সময় অনেক ওলীআল্লাহ উনার সুযোগ্য মুরীদগণের মাঝে কেউ কেউ মজলিসের আলোচনা কিছু কিছু লিপিবদ্ধ করে গেছেন, যা পরবর্তী সময়ে কিতাব আকারে প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু তা ব্যাপক নয়।
তবে সম্মানিত মুজাদ্দিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের প্রায় সকলেই উনাদের আক্বীদা, ইজতিহাদ, ইলম লিখিতভাবে রেখে গেছেন। হয়তো উনাদের মাঝে কেউ কেউ অনেক বেশি আবার কেউ তুলনামূলকভাবে কম লিখেছেন। তারপরেও একটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে, পূর্ববর্তী সম্মানিত মুজাদ্দিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কারো একটি বিষয় মানুষের কাছে বিশেষভাবে প্রকাশিত হয়েছে অন্য বিষয়গুলো তেমন প্রকাশিত হয়নি। যেমন ইমামুল আইম্মাহ হযরত ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ফিকাহর বিষয়ে ইজতিহাদ যতটুকু প্রকাশিত হয়েছে তাসাউফের বিষয়টি ততটা প্রকাশিত হয়নি; আবার সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লেখায় ইলমে তাসাউফের বিষয়গুলো বেশি আলোচিত হয়েছে। আবার হুজ্জাতুল ইসলাম, মুজাদ্দিদে যামান হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ফিকাহ ও ইলমে তাসাউফ দুটো বিষয় নিয়েই বিস্তারিত লিখেছেন। কিন্তু যিনি পনেরো শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার সমস্ত কার্যক্রম ব্যতিক্রম এবং ব্যাপক।
বর্তমান শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার যখন যে বিষয়েই ইজতিহাদের প্রয়োজন পড়ছে; যেমন- আক্বীদা, ফিকাহ, তাসাউফ, সমসাময়িক বিষয়- এসব প্রতিটি বিষয়ের উপর লিখিত দলীল লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! আরো উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে- আক্বীদা ও ফিকাহর সমস্ত বিষয়গুলো তিনি নিজে পড়ে, লিখে এবং প্রয়োজনীয় নোট সংযোজন করে প্রকাশ করে আগামী প্রজন্মের জন্য স্পষ্ট করে যাচ্ছেন, যা ইতঃপূর্বে কারো মাঝে দেখা যায়নি। এছাড়া মুবারক মাজলিসে আলোচিত উনার সব নছীহত শরীফ রেকর্ড আকারে সংরক্ষিত হচ্ছে; যাতে উনার মুবারক জবান নিঃসৃত আলোচনা পুনরায় শুনে নছীহত হাছিল করা যায়। সুবহানাল্লাহ! রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার অনেক ধরনের প্রকাশনা থাকলেও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- সংবাদ প্রকাশনা, কিতাব প্রকাশনা, অডিও প্রকাশনা ইত্যাদি।
-আল হিলাল
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৩০)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)