রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি (১৪)
, ২৮ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২১ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ২১ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ০৭ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল অনন্তকালব্যাপী জারি এবং উনার কার্যক্রম :>>>>>>
বাংলাদেশসহ অনেক মুসলিম দেশে পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ পালিত হয় অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের সাথে। অবশ্য অনেক তথকথিত মুসলিম দেশ এই সুমহান দিনের মর্যাদা বুঝতে অক্ষম থাকায় তারা এই বিশেষ দিন পালন করার নিয়ামত অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! একটি বিষয় দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে- “পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ” পালন আসলে অন্তরের পরিশুদ্ধতা ও আক্বীদার বিশুদ্ধতার উপর নির্ভরশীল। চাইলেই কেউ এ মহিমান্বিত অনুষ্ঠান পালন করতে পারে না এবং পারবে না। কোনো দেশ, জাতি, সমাজ, গোত্র, সিলসিলা সম্পর্কে ধারণা করতে চাইলে কেবল এই একটি মাপকাঠিই যথেষ্ট। যারা এই বিশেষ দিবস মুবারকের মর্যাদার প্রতি যতœশীল উনারাই সর্বদিক থেকে শ্রেষ্ঠ। সুবহানাল্লাহ!
আমাদের দেশের তথাকথিত মৌলভী-মালানা-আলিম-উলামা শ্রেণী এই বিশেষ দিন পালন করতো ‘সীরাতুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম” হিসেবে। কিন্তু এই নামকরণের মধ্যেই ছিল চরম পর্যায়ের অপূর্ণতা, মূর্খতা ও বেয়াদবী। কেননা ‘সীরাত’ শব্দ দ্বারা কেবল ‘চরিত্র মুবারক’ বোঝায়। অর্থাৎ শুধুমাত্র উনার চরিত্র মুবারক আলোচনার অনুষ্ঠানই হলো “সীরাতুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম” পালনের অনুষ্ঠান। নাউযুবিল্লাহ! অথচ খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “তোমাদের জন্য তোমাদের রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনার মাঝে রয়েছে সর্ব বিষয়ের সর্বোত্তম আদর্শ মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! তাই হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ দিবসে অনুষ্ঠান পালন করতেন- “পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” হিসেবে। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেদিন এই যমীনে তাশরীফ মুবারক এনেছেন সেই দিন খুশি প্রকাশ করার সুমহান দিবস হিসেবে। কিন্তু বর্তমান যামানায় যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার আখাচ্ছুল খাছ লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে গভীর নিসবতযুক্ত, বর্তমান ১৫ হিজরী শতাব্দীর সুমহান মুজাদ্দিদ তথা মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি কেবল “ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” এই নাম মুবারক দ্বারা তৃপ্ত নন। মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি উনার পূত-পবিত্র অন্তর মুবারকের সেই ব্যাকুলতার কারণেই মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা উনাকে চরম পর্যায়ের পরিতৃপ্তি দান করেন। ফলে তিনি ‘পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ দিবস’ উনাকে ঘোষণা দেন- সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা সংক্ষেপে নাম করন করা হয়েছে “পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ” নাম মুবারকে। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সহজ অর্থ করলে দাঁড়ায় ‘শ্রেষ্ঠ দিবসসমূহের মধ্যে যেদিবস শ্রেষ্ঠতম”। আর এই শ্রেষ্ঠতম দিবস মুবারক পালনের অনুষ্ঠান হচ্ছেন “পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল”। যা অনন্তকালব্যাপী আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করার আয়োজনও করেছেন তিনি। আবার “পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” এই নাম মুবারককে তিনি আরো úূর্ণতা দান করেছেন “পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” হিসেবে ঘোষণা দিয়ে। সুবহানাল্লাহ!
ওহাবী, সালাফী আর লা-মাযহাবী বাতিল ফিরকারা ছাড়া সকল সুন্নী মুসলমান বিশেষভাবে যারা কোনো সিলসিলাভুক্ত উনারা পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ এই মর্যাদাবান দিবস কমপক্ষে ১ দিনের জন্যে হলেও পালন করে থাকেন। এই দিনে মাহফিলের আয়োজন করে তাবারুকের ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশে পরপর ৩ দিন বা এক নাগাড়ে ১২ দিন পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুষ্ঠান পালন করা সহজেই চোখে পড়ে। কিন্তু যিনি যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, গউসুল আ’যম হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বিশ্বে সর্বপ্রথম এই কায়িনাতের বুকে প্রথমে মাসব্যাপী, পরে ৪৫ দিনব্যাপী, পরে ৬৩ দিনব্যাপী পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল চালু করেন।
কিন্তু যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে নিবিড়ভাবে নিসবত মুবারক প্রাপ্ত, তিনি তো কেবল কয়েকদিন বা মাস বা বছরব্যাপী অনুষ্ঠান পালন করেই তৃপ্ত হবেন না- এটাই স্বাভাবিক। সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি যেহেতু পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক, তাই তিনি বিশ্ববাসীর হিদায়েত লাভের উদ্দেশ্যে, নাজাতের উদ্দেশ্যে প্রকাশ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ইজতিহাদ ও তাজদীদ- “পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা সকলের জন্য সকল সময়ের জন্য ফরয”। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, খলীফাতুল্লাহ, আস সাফফাহ, গউসুল আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে ঘোষণা মুবারক করেন, “হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা ২৪ ঘণ্টা তথা দায়িমীভাবে সারা জীবন সম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন।” ফলে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনিও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে সারাবছর তথা আজীবনব্যাপী তথা অনন্তকালব্যাপী সম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানিত মাহফিল মুবারক জারি করেন। আর এই অনন্তকালব্যাপী জারিকৃত মুবারক মাহফিল উনাকে আরো স্পষ্ট করার জন্য বিশেষভাবে জারি করেন ৬৩ দিনব্যাপী বিশেষ মাহফিল। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)