রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি (১৪)
, ০৮ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৮ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২৭ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ১৩ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَا اَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَّوْعِظَةٌ مّنْ رَّبّكُمْ وَشِفَاءٌ لّمَا فِي الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَّرَحْـمَةٌ لّلْمُؤْمِنِيْنَ ◌ قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْـمَتِهٖ فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مّـمَّا يَـجْمَعُوْنَ ◌
অর্থ: “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসীকে জানিয়ে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে, ফযল, করম ও রহমত মুবারক হিসেবে উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে, ঈদ পালন করে তথা মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা, ঈদ পালন করাটা, মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাটা সবকিছু থেকে উত্তম; যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ইউনূস শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ৫৮)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা প্রত্যেক মুসলমান, জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসীর জন্য ফরয করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এখন বলার বিষয় হচ্ছে, এই মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ কতক্ষণ সময় ধরে পালন করতে হবে? এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّـاۤ اَرْسَلْنٰكَ شَاهِدًا وَّمُبَشّـِرًا وَّنَذِيْرًا. لِتُؤْمِنُوْا بِاللهِ وَرَسُوْلِهٖ وَتُعَـزِّرُوْهُ وَتُوَقّـِرُوْهُ وَتُسَبّـِحُوْهُ بُكْرَةً وَّاَصِيْلًا
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি আমার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শাহিদ তথা (উপস্থিত, হাজির, নাযির) সাক্ষ্যদানকারী, সুসংবাদদানকারী ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে সৃষ্টি করেছি, প্রেরণ করেছি। যেন তোমরা ঈমান আনতে পারো মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি। অতএব, তোমরা যথাযথভাবে নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দাও, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করো এবং সকাল-সন্ধ্যা তথা দায়িমীভাবে অনন্তকালব্যাপী উনার ছানা-ছিফত মুবারক করো তথা উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ফাতহ শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ৮-৯)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত জিন-ইনসান ও কায়িনাতবাসীর জন্য উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে খুশি হয়ে সকাল-সন্ধ্যা, দায়িমীভাবে অনন্তকাল ধরে মহাসম্মনিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার নির্দেশ মুবারক প্রদান করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীকে নির্দেশ দেয়ার পূর্বেই তিনি নিজেই উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করার পর থেকে অদ্যবধি দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকাল ধরে মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!
আর যখন থেকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে, তখন থেকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাও নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُبَـىِّ بْنِ كَعْبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنّـِىْ أُكْثِرُ الصَّلٰوةَ عَلَيْكَ فَكَمْ اَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلٰوتِىْ فَقَالَ مَا شِئْتَ قُلْتُ اَلرُّبُعَ قَالَ مَا شِئْتَ فَاِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكَ. قُلْتُ اَلنّـِصْفَ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكَ قُلْتُ فَالثُّلُثَيْنِ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكَ قُلْتُ اَجْعَلُ لَكَ صَلٰوتِىْ كُلَّهَا قَالَ اِذًا تُكْفٰى هَمُّكَ وَيُكَفَّرُ لَكَ ذَۢنبُكَ
অর্থ: “হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি আপনার উপর বেশি বেশি ছলাত মুবারক পাঠ করতে চাই, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করতে চাই তথা আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতে চাই। তাহলে আমি কী পরিমাণ সময় আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমি কত ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো তথা আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা। আমি বললাম, এক-চতুর্থাংশ সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনি করুন। তবে যদি এর চেয়ে বেশি সময় করেন, তাহলে তা আপনার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি অর্ধেক সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনি করুন। তবে যদি এর চেয়ে বেশি সময় করেন, তাহলে তা আপনার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি আমার তিন ভাগের দুই ভাগ সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬ ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনি করুন। তবে যদি এর চেয়ে বেশি সময় করেন, তাহলে তা আপনার জন্য উত্তম হবে। তখন আমি বললাম, তাহলে আমি আমার সম্পূর্ণ সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৪ ঘণ্টাই আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? তখন আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, যদি আপনি এরূপ করতে পারেন, তাহলে আপনার সমস্ত নেক মাক্বছূদগুলো পূর্ণ করে দেয়া হবে এবং আপনার সমস্ত গুনাহখতাগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ ২/৪২১, শুয়াবুল ঈমন শরীফ ৩/১৩৮, মিশকাত শরীফ, জামিউল আহাদীছ শরীফ ৩২/৩৭৩, জামিউল উছূল শরীফ ১১/৮৪৬৭, রিয়াদুছ ছালিহীন ১/৩৪৭ ইত্যাদি)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৩০)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)