যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (১০)
, ১৪ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২০ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১৭ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
আর মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ سَعِيْدِ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ عَنْ رَّسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ رَاٰى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهٖ فَاِنْ لَّـمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهٖ فَاِنْ لَّـمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهٖ وَذٰلِكَ اَضْعَفُ الْاِيْـمَانِ
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের কেউ যখন শরীয়ত উনার খিলাফ কোনো কাজ দেখবে, তখন সে যেন তা হাত দিয়ে বাঁধা দেয়। যদি হাত দিয়ে বাঁধা দিতে সক্ষম না হয়, তাহলে সে যেন তা মুখ দিয়ে বাঁধা দেয়। যদি তাতেও সম্ভব না হয়, তাহলে যেন তা অন্তরে বাঁধা দেয়। অর্থাৎ অন্তরে খারাপ জেনে সেখান থেকে দূরে সরে যায়। এটা হচ্ছে সম্মানিত ঈমান উনার সর্বনিম্ন স্তর। ” (মুসলিম শরীফ, নাসাঈ শরীফ, মুসনাদে আহমদ, শরহুস সুন্নাহ, শু‘য়াবুল ঈমান, ছহীহ ইবনে হিব্বান, হিলইয়াতুল আউলিয়া)
অপর বর্ণনায় রয়েছে-
وَلَيْسَ وَرَاءَ ذٰلِكَ مِنَ الْاِيْـمَانِ حَبَّةُ خَرْدَلٍ
অর্থ: “এরপর আর সরিষার দানা পরিমাণও সম্মানিত ঈমান অবশিষ্ট থাকবে না। ” নাঊযুবিল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
অতএব, মূর্তি পাহারা দেয়ার জন্য মন্দিরে যাওয়া, মূর্তি পাহারা দেয়া, হিন্দুদের পূজায় যাওয়া, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করা, সমর্থন করা, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করা, তাদেরকে সম্মান করা, তাদের গীতা পাঠ করা, এই সকল কাজ করে আনন্দ প্রকাশ করা এবং শুকুরগুজারী করা সম্পূর্ণরূপে হারাম, নাজায়িয ও কাট্টা কুফরী। যেমন- এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
اجْتَمَعَتِ الْأُمَّةُ عَلَى أَنَّ الرِّضَا بِالْكُفْرِ كُفْرٌ
অর্থ: “সমস্ত উম্মত এটার উপর ইজমা করেছেন যে, নিশ্চয়ই কুফরীতে সম্মানিত দেয়াও কুফরী। ” নাঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরুর রাজী ২৬/৪২৫, আল লুবাব ফী উলূমিল কিতাব ১৬/৪৭৮)
আর আক্বাইদের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
اسْتِحْلَالُ الْمَعْصِيَةِ كُفْرٌ
অর্থ: “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী। ” নাঊযুবিল্লাহ! (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)
কাজেই, যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে, সমর্থন করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তাদের গীতা পাঠ করেছে, এই সকল কাজ করে আনন্দ প্রকাশ করেছে এবং শুকুরগুজারী করেছে সম্মানিত শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী তারা প্রত্যেকেই কাট্টা কাফির, মূর্তিপূজারী ও মুশরিক। এই সকল ওলামায়ে সূ’দের ব্যাপারেই মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ انس رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ويل لأمتي من عُلَمَاء السوء يتخذون هَذَا الْعلم تِجَارَة يبيعونها من أُمَرَاء زمانهم ربحا لأَنْفُسِهِمْ لَا أربح الله تِجَارَتهمْ
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার উম্মতের ওলামায়ে সূ’দের জন্য জাহান্নাম; যারা সম্মানিত ইলিম মুবারক উনাকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করে তাদের যামানার আমীর-উমরা, রাজা-বাদশাহদের কাছে অর্থ ও পদ লাভের জন্য তা বিক্রি করে থাকে। মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন তাদের এই ধর্মব্যবসায় কখনো বরকত না দেন। ” (দায়লামী শরীফ ৪/৩৯৮, রবীউল আবরার ৪/৩৮, আল গ¦রাইব ২৬৫৫ পৃষ্ঠা, কানযুল উম্মাল ১০/২০৫ জামিউল আহাদীছ ২২/৪৮০, জামউল জাওয়ামি’ ১০/৭২৩ ইত্যাদি)
শুধু তাই নয়; এই সকল ওলামায়ে সূ’রা দাজ্জালের চেয়েও অনেক বড় কঠিন ও ভয়ঙ্কর ফিতনাবাজ। এ সম্পর্কে হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘বিদায়াতুল হিদায়াহ্’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَنَا مِنْ غَيْرِ الدَّجَّالِ اَخْوَفُ عَلَيْكُمْ مّـِنَ الدَّجَّالِ فَقِيْلَ وَمَا هُوَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ عُلَمَاءُ السُّوْءِ
অর্থ: “আমি তোমাদের ব্যাপারে এক সম্প্রদায়কে দাজ্জালের চেয়েও অধিক বেশি ভয়ঙ্কর মনে করি এবং এই ব্যাপারে অধিক চিন্তিত রয়েছি; (যাদের ফিতনা হবে দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে অনেক বড় কঠিন ও ভয়ঙ্কর)। তখন একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সেটা কোন্ সম্প্রদায়? জবাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, ওলামায়ে সূ’। অর্থাৎ ওলামায়ে সূ’ বা ধর্মব্যবসায়ী মালানাদের ফিতনা দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে অনেক বড় কঠিন ও ভয়ঙ্কর। ” নাঊযুবিল্লাহ!
খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে এবং বিশ্বের সমস্ত মুসলমানদেরকে এই সকল মূর্তিপূজারী, মুশরিক ও দাজ্জালের চেয়ে কঠিন ভয়ঙ্কর ফেতনাবাজ ওলামায়ে সূ’দের ফেতনা থেকে হিফাযত করুন। আমীন! (সমাপ্ত)
-মুহাদ্দিস মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি কাফিরদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: সউদী রাজ পরিবারের পূর্বপুরুষ ইহুদী যে কারণে (৪)
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা ও ফযীলত মুবারক প্রসঙ্গে (৩৩)
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (২)
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৬)
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফিক্বাহ বা ফতওয়ার সকল কিতাবেই গান-বাজনা, বাদ্য-যন্ত্র ইত্যাদিকে হারাম ফতওয়া দেয়া হয়েছে
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: সউদী রাজ পরিবারের পূর্বপুরুষ ইহুদী যে কারণে (৩)
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)