সুন্নতী মুবারক তা’লীম
যেসব দিনে গোসল করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
, ১২ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২০ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ১৮ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ০৩ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
কখন গোসল করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক :
চার অবস্থায় গোসল করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক। যথা:
এক. পবিত্র জুমুয়ার নামাজের জন্য গোসল করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক।
দুই. পবিত্র ঈদের নামাজের জন্য গোসল করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক।
তিন. পবিত্র ইহরামের জন্য গোসল করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক।
চার. হজযাত্রীদের জন্য আরাফায় অবস্থানকালে গোসল করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক।
সপ্তাহে কতবার গোসল?
সাধারণভাবে সপ্তাহের সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল আ’যীম শরীফ) এবং পবিত্র জুমুয়ার দিন গোসল করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক। অন্যান্য দিনসমূহে গোসল করা মুস্তাহাব।
বসে গোসল করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক:
গোসল করার ক্ষেত্রে মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক হলো বসে গোসল করা। তবে বসার যদি কোনো ব্যবস্থা না থাকে তবে দাঁড়িয়ে গোসল করতে কোনো সমস্যা নেই।
গোসলে শরীর মাজার জন্য ধুন্দলের ছোবরা ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক:
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, রঊফুর রহীম, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, ছাহিবে নেয়ামত, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি জানিয়েছেন- গোসলে শরীর ঘষা-মাজার জন্য ধুন্দলের ছোবরা ব্যবহার করা খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
পা পরিস্কারের জন্য ঝামা পাথর ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক:
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, রঊফুর রহীম, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, ছাহিবে নেয়ামত, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন- পা পরিস্কারের জন্য ঝামা পাথর ব্যবহার করাও খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
গায়ের পোশাক পরিবর্তনের তারতীব:
গোসল করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। সম্পূর্ণ কাপড়বিহীন (উলঙ্গ) হয়ে গোসল করা যাবে না, যদিও তা আবদ্ধ ঘরে হোক না কেন। কমপক্ষে একটি কাপড় জড়িয়ে হলেও লজ্জাস্থান ঢেকে রাখতে হবে। কারণ মানুষের চোখের আড়াল হলেও হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম ও জ্বিনদের চোখের আড়াল হয় না। গোসল শেষে অত্যন্ত সাবধাণতার সাথে পোশাক পরিবর্তন করতে হবে। যাতে লজ্জাস্থান বেআবরু না হয়ে যায়। পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে ডানদিককে প্রাধান্য দিতে হবে।
গোসলের পানি রাখার গামলা বা পাত্র:
বড় গামলায় পানি রেখে সেই পানি দ্বারা গোসল করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ كُنْتُ أَغْتَسِلُ أَنَا وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ إِنَاءٍ وَاحِدٍ مِنْ قَدَحٍ يُقَالُ لَهُ الْفَرَقُ.
অর্থ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ আমরা একই পাত্র (কাদাহ) হতে (পানি নিয়ে) গোসল করতাম। সেই পাত্রকে ফারাক বলা হতো। (বুখারী শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং: ২৫০)
বরই পাতার পানি দিয়ে গোসল করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক:
বরই পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল করা খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حَضْرَتْ قَيْسِ بْنِ عَاصِمٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُرِيدُ الإِسْلاَمَ فَأَمَرَنِي أَنْ أَغْتَسِلَ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ .
অর্থ: হযরত ক্বাসিম ইবনু আসিম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের উদ্দেশ্যে এলে তিনি আমাকে বরই পাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল করার নির্দেশ মুবারক দিলেন। (আবু দাউদ শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং: ৩৫৫)
ওযূ বা গোসলের পর গামছা বা কাপড় দিয়ে শরীর মোছা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক:
গা মোছার জন্য এবং পা মোছার জন্য আলাদা কাপড় ব্যবহার করতে হবে। যা সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কখনও নূরুল মাগফিরহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) মুছতেন। আবার কখনও নূরুল মাগফিরহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) মুছতেন না।
হযরত কায়েছ বিন সায়াদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন-
أَتَانَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوَضَعْنَا لَهُ مَاءً فَاغْتَسَلَ ثُمَّ أَتَيْنَاهُ بِمِلْحَفَةٍ وَرْسِيَّةٍ فَاشْتَمَلَ بِهَا
অর্থ: আমাদের কাছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন। আমরা উনার জন্য পানির ব্যবস্থা করলাম। তিনি গোসল করলেন। তখন আমরা উনাকে খয়েরী রঙের একটি চাদর এনে দিলাম। তিনি সেটি নূরুল মুজাসসাম (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জিসিম) মুবারকে জড়িয়ে নিলেন। (ফলে সেটি শরীরের পানি মোছার জন্য রুমালের কাজ দিলো)। (ইবনে মাজাহ শরীফ: ৪৬৬)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت الصديق الاكبر عليه السلام أن النبي صلى الله عليه و سلم كانت له خرقة يتنشف بها بعد الوضوء
অর্থ: সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একটি গামছা বা কাপড়ের টুকরা মুবারক ছিল, যেটি দিয়ে তিনি ওযূর (বা গোছলের) পর নূরুল মুজাসসাম (মহাসম্মানিত জিসিম) মুবারক মুছতেন। (বাইহাক্বী শরীফ)
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী ফল “আঙ্গুর”
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বেমেছাল উপকারিতা সমৃদ্ধ মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার “কিছ্ছা”
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সকল ধরণের সুন্নতী খাবার
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কিয়ামত পর্যন্ত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধন হবে না
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী “টুপি
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহান আল্লাহ পাক ও উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত মুহব্বত মুবারক হাছিল করতে হলে অবশ্যই মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা করতে হবে
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘ডুমুর’
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র নামায উনার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারকসমূহ
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘তালবীনা
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মসজিদে প্রবেশ করার-বের হওয়ার ও অবস্থান করার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মেশ্ক মিশ্রিত সুন্নতী ইসমিদ সুরমা
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ক্বমীছ বা জামা নিছফে সাক্ব পর্যন্ত প্রলম্বিত হওয়া সম্মানিত সুন্নত মুবারক
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)