মৃত ব্যক্তির কবরে তালক্বীন দেয়ার গুরুত্ব-ফযীলত মুবারক এবং খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক-২
, ০৪ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ২১ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ ভাদ্র শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنِ حَضْرَتْ أَبِيْ أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰي عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا مَاتَ أَحَدٌ مِّنْ إِخْوَانِكُمْ فَسَوَّيْتُمُ التُّرَابَ عَلٰى قَبْرِهٖ فَلْيَقُمْ اَحَدُكُمْ عَلٰى رَأْسِ قَبْرِهٖ ثُمَّ لِيَقُلْ يَا فُلَانُ بْنَ فُلَانَةَ فَإِنَّهٗ يَسْمَعُهٗ وَلَا يُجِيْبُ ثُمَّ يَقُوْلُ يَا فُلَانُ بْنَ فُلَانَةَ فَإِنَّهٗ يَسْتَوِيْ قَاعِدًا ثُمَّ يَقُوْلُ يَا فُلَانُ بْنَ فُلَانَةَ فَإِنّهٗ يَقُوْلُ أَرْشِدْنَا رَحِمَكَ اللهُ وَلٰكِنْ لَا تَشْعُرُوْنَ فَلْيَقُلْ اُذْكُرْ مَا خَرَجْتَ عَلَيْهِ مِنَ الدُّنْيَا شَهَادَةَ أَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَّكَ رَضِيْتَ بِاللهِ رَبًّا وَبِالْإِسْلَامِ دِيْنًا وَبِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِيًّا وَبِالْقُرْآنِ إمَامًا فَإِنَّ مُنْكَرًا وَنَكِيْرًا يَأْخُذُ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا بِيَدِ صَاحِبِهٖ وَيَقُوْلُ انْطَلِقْ بِنَا مَا يُقْعِدُنَا عِنْدَ مَنْ لُقِّنَ حُجَّتَهٗ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِنْ لَمْ يَعْرِفْ أُمَّهٗ قَالَ فَلْيَنْسِبْهُ إَلٰى أُمِّهٖ حَوَّاءَ عَلَيْها السَلَّامُ يَا فُلَانُ بْنَ حَوَّاءَ عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ: হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আখিরী রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যখন তোমাদের কোন মুসলমান ভাই ইন্তিকাল করবে, তখন তাকে কবরে রেখে তার উপর ভালভাবে মাটি দিয়ে অর্থাৎ দাফন করে তার মাথার নিকট দাঁড়িয়ে বলবে- “হে অমুকের (মায়ের নাম) সন্তান অমুক” তখন মৃত ব্যক্তি এটা শুনবে কিন্তু কোন জবাব দিবে না। তারপর বলবে- “হে অমুকের সন্তান অমুক” এটা শুনে মৃত ব্যক্তি উঠে বসবে। অতঃপর আবার বলবে- “হে অমুকের সন্তান অমুক” এটা শুনে মৃত ব্যক্তি বলবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে দয়া ও ইহসান করুন, বলুন! কি বলতে চাচ্ছেন? যদিও তার কথা শুনা যাবে না। তখন তোমরা বলবে- যে বিষয়ের উপর দায়িম ক্বায়িম থেকে তুমি দুনিয়া থেকে এসেছো সে বিষয়ে তুমি এই সময় স্বরণ করো। অর্থাৎ (তুমি সাক্ষ্য দাও যে,) মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ব্যতীত কোন মা’বুদ নেই। আর আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ্ পাক উনার মহাসম্মানিত নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর নিশ্চয়ই তুমি মহান আল্লাহ্ পাক উনাকে রব হিসেবে, পবিত্র ইসলাম উনাকে দ্বীন হিসেবে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে, মহাসম্মানিত মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে পথ প্রদর্শক হিসেবে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নিয়েছো।” এ সময় মুনকার এবং নাকীর ফেরেশতা আলাইহিমাস সালাম উনারা একে অপরের হাত ধরে বলেন - এখান হতে চলুন, এর নিকট বসে কি করব? এই ব্যক্তিকে তো আখিরাতের দলীল শিখিয়ে দেয়া হয়েছে। অতঃপর এক ব্যক্তি উঠে জিজাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যদি তার মাতার নাম জানা না থাকে তখন উপায় কি? তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, তাহলে হযরত মা হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনার নাম মুবারক উল্লেখ করে বলবে, হে হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনার পুত্র অমুক। (ত্ববরানী শরীফ, আছনাল মাত্বালিব ফী শরহে রওদ্বিত ত্বালিব ১/৩২৯, কাশফুল ক্বিনা’ আ’ন মাতানিল ইক্বনা’ ৪/৪০৩)
অত্র মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মূল বিষয় হলো, মৃত ব্যক্তির কবরে তালক্বীন করা জায়েয ও সুন্নত এবং “যখন মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে কবরে তালক্বীন দেয়া হয় তখন মুনকার ও নাকীর ফেরেশতাদ্বয় আলাইহিমাস সালাম উনারা পরস্পর পরস্পরের হাতে ধরে বলেন যে, তাকে প্রশ্ন করে কি হবে, তাকে তো সব শিখিয়ে দেয়া হয়েছে। চলুন আমরা চলে যাই। অর্থাৎ তালক্বীনের কারণে মৃত ব্যক্তি সুওয়াল-জাওয়াব থেকে নিস্কৃতি বা নাযাত লাভ করে।” সুবহানাল্লাহ!
উপরোক্ত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা দ্বারা মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর কবরে তালক্বীন দেয়া মুস্তাহাব-সুন্নত প্রমাণিত হয়েছে।
-হাফিযুল হাদীছ মুহম্মদ ফজলুল হক্ব
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঠান্ডা ও মিঠা পানি পান করা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)