পবিত্র যাকাত প্রদানের খাত আটটি। এর মধ্যে উত্তম হচ্ছে তিনটি খাতে পবিত্র যাকাত দেয়া। যথা: ১. গরিব আত্মীয়-স্বজন ২. গরিব প্রতিবেশী ৩. গরিব ত্বলিবুল ইলম। তবে গরিব ত্বলিবুল ইলম উনাদেরকে পবিত্র যাকাত দেয়া লক্ষ-কোটি গুণ ফযীলতের কারণ। কোনো ত্বলিবুল ইলম উনাকে পবিত্র যাকাত দিতে হবে, তা পবিত্র যাকাত প্রদানকারী সকলেরই জানা ফরয এর অন্তর্ভুক্ত। প্রকৃত ত্বলিবুল ইলম উনার মূল বৈশিষ্ট্য হলো: ১. যাঁরা খালিছ আল্লাহওয়ালা হওয়ার জন্য ইলম অর্জনে রত ২. মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলই যাঁদের একমাত্র লক্ষ্য ৩. গণতন্ত্র, মৌলবাদ, রাজনীতি, সন্ত্রাসবাদ ইত্যাদি বাতিল দল-মতের সঙ্গে যাঁরা আদৌ সংশ্লিষ্ট নন ৪. ইসলামবিরোধী ধ্যান-খেয়াল ও কার্যকলাপের সঙ্গে যারা বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ কোনোভাবেই জড়িত নন ৫. যাঁরা পবিত্র সুন্নত উনার পাবন্দ ৬. যাঁরা শরঈ পর্দা পালনে অভ্যস্ত ৭. যাঁরা নিয়মিতভাবে পবিত্র তাহাজ্জুদ নামায আদায় করেন ৮. যারা হীনম্মনতার ব্যাধি হতে মুক্ত ৯. সর্বোপরি যাঁদের আক্বীদা বিশুদ্ধ।

এসব গুণগুলো ঢাকা রাজারবাগ শরীফস্থ মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা উনার ত্বলিবুল ইলম উনাদের মধ্যেই হাক্বীক্বীভাবে পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্য কোনো মাদরাসায় এসব গুণ-বৈশিষ্ট্যের অস্তিত্ব নেই। এছাড়া রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে সবার জন্য ইলমে তাছাউফ তথা রূহানী শিক্ষা। রয়েছে জনকল্যাণমূলক বহুমুখী কাজ। রয়েছে চিকিৎসা সেবা। অসহায় ও ক্ষুধার্তদের জন্য রয়েছে খাদ্য পানীয়ের সুব্যবস্থা। রয়েছে গরিব ও দুঃখীদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি। দুস্থ-বিধবাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা। আরো রয়েছে ইসলামবিরোধী সকল চিন্তা-চেতনা ও কার্যকলাপ নিরসনে জনসচেতনতামূলক নানা রকম পদক্ষেপ। এছাড়া দরবার শরীফে রয়েছে সুবিশাল রিসার্চ সেন্টার, লাইব্রেরী ও মসজিদ। কাজেই এখানে পবিত্র যাকাত দিলে তা অবশ্যই কবূলযোগ্য হবে। সুবহানাল্লাহ!

ধর্মব্যবসায়ী ও বাতিল গোষ্ঠীদের দ্বারা পরিচালিত কোনো মাদরাসা, মক্তব বা প্রতিষ্ঠানে যাকাত দিলে তা কখনোই কবূল হবে না। কারণ: ১. শিক্ষক ও ছাত্র মিলে তারা হারাম গণতন্ত্র করে। ২. তাদের আক্বীদা নষ্ট। ৩. তারা পর্দা পালন করে না এবং ছবি তুলে। ৪. তারা বিভিন্ন হারাম মত ও পথের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ৫. তারা হারাম হরতাল ও লংমার্চ করে। ৬. তারা হারাম ব্লাসফেমী আইন ত্বলব করে। ৭. তারা সুন্নত পালন করে না। ৮. তারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান, মান, মর্যাদা, মর্তবা, মাক্বাম উনাদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করে। ৯. তারা হীনম্মন্যতায় আক্রান্ত। ১০. তারা অজ্ঞানে, আবার কখনো স্বজ্ঞানে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের ভুল ও বিকৃত ব্যাখ্যায় অভ্যস্ত। ১১. তারা ওলীআল্লাহ, মুজাদ্দিদ উনাদের বিরোধিতা করে। ১২. বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পবিত্র যাকাত উনার টাকা মাদরাসার শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কমিটির লোকেরা আত্মসাৎ করে এবং ১৩. আরো রয়েছে অনেক কারণ। নাউযুবিল্লাহ!

উল্লিখিত কারণে ওহাবী, খারিজী, দেওবন্দী, তাবলিগী, জামাতী, লা-মাযহাবী ইত্যাদি বাতিল গোষ্ঠীদের মাদরাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পবিত্র যাকাত দিলে আদায় হবে না। এমনকি আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামকে যাকাত দিলেও তা আদায় হবে না। বরং এদেরকে পবিত্র যাকাত দিলে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধিতায় বাতিল গোষ্ঠীকে সহায়তা করা হবে। এতে পবিত্র ঈমান বিধ্বংস হবে। কাজেই বুঝা গেলো যে, পকিবত্র যাকাত ও ওশর দেয়ার শ্রেষ্ঠতম স্থান হলো মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা ও ইয়াতীমখানা, রাজারবাগ, ঢাকা।



-মুহম্মদ নোমান রাসেখ।