মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিভাজন তৈরি করে ফায়দা লুটছে গোটা কাফির বিশ্ব।
নিজেদের মধ্যে লড়াই করে শক্তিহীন হচ্ছে মুসলিম দেশগুলো, পিছিয়ে পড়ছে শক্তিতে সমৃদ্ধিতে এবং প্রভাব বিস্তারে। দ্বীন ইসলাম উনার আলোকে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ এবং অনাগ্রাসন চুক্তি এর একটি বিশেষ সমাধান।
, ১৮ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৭ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ০৬ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ২২ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোক মুসলিম উম্মাহ অর্থাৎ সমস্ত মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ, সমঝোতাবোধের মধ্যেই রয়েছে মুসলমানদের শান্তি, সমৃদ্ধি। অতীতে মুসলমানরা ভ্রাতৃত্ববোধ দৃঢ়করণের মাধ্যমেই পুরো বিশ্বব্যাপী প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। কামিয়াবীর শীর্ষে অবস্থান করেছিলেন।
কিন্তু মুসলমানরা যখন সম্মানিত দ্বীন ইসলাম থেকে সরে গিয়ে যখন ভ্রাতৃত্ববোধ হারিয়ে ফেললো, বিধর্মীদের উপর নির্ভরশীলতা দেখালো তখন মুসলমানদের কর্তৃত্ব, সমৃদ্ধি এবং শান-শওকতে বিপর্যয় ঘটলো। যার পরিণতি এখনকার বিশ্বব্যবস্থায় প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে।
বিদ্যমান বিশ্বব্যবস্থায় মুসলিম দেশগুলোর জোরালো কোনো উপস্থিতি নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে মুসলিম দেশগুলো নিজেরাই নিজেদের শত্রুতে পরিণত হয়েছে। গোটা কাফির বিশ্ব মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে এমন এক বিভাজন রেখা টেনে দিয়েছে যাতে মুসলিম দেশগুলো একে অপরের সাথে সার্বক্ষণিক দ্বন্দে জড়িয়ে রয়েছে। ইহুদীবাদীরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুসলিম দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রন করছে। বর্তমানে ইরান, সৌদি, ইয়েমেন, মিসর, লেবানন, কাতার, সিরিয়া প্রভৃতি দেশগুলোর মধ্যে বিরোধ তাদের নিজেদেরকে দুর্বল করে দিচ্ছে। ফলে এসব দেশের প্রায় সব সম্পদই অস্ত্রের জন্য পশ্চিমাদের কাছে চলে যাচ্ছে। তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, আফ্রিকার সমস্ত সম্পদ- যে অর্থ মুসলমানদের উন্নয়নে ব্যয় করার কথা তা পশ্চিমাদের কাছে পাচার হয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বা তার প্রতিপক্ষ শক্তি প্রকৃতপক্ষে মুসলিম বিশ্বে কোনো শক্তিশালী দেশ চায় না, যার মধ্যে রয়েছে তুরস্ক, ইরান, ইন্দোনেশিয়া। ফলে তারা এসব রাষ্ট্রের বিরোধ নানাভাবে জাগিয়ে রাখতে চায়।
বর্তমানে সৌদি ও ইরান পরস্পরকে হুমকি হিসেবে দেখছে। ইরান এবং তুরস্কের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে হলেও তাদের মধ্যে আঞ্চলিক শক্তি হওয়ার লড়াই সবসময় চলে। উপসাগরীয় দেশগুলো রয়েছে সৌদি আরবের অন্তস্তলে। কয়েক বছর আগে কাতার সঙ্কটে তারা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। কুয়েতে ইরাকের আক্রমণ ও মার্কিন দখলদারিত্ব তাদের কারো পক্ষেই যায়নি। আফ্রিকার বেশির ভাগ দেশে স্থিতিশীলতার সমস্যা আছে, প্রশাসনে রয়েছে দুর্বলতা।
আর এ সবকিছুই ফায়দা লুটছে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী ও ইহুদী অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে এরা এসব যুদ্ধগুলোতে নিজেদের অস্ত্র বিক্রি করছে। অস্ত্রের বাজার চাঙ্গা রাখছে। মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ ও দ্বন্দ্ব নিয়ে ব্যস্ততার সুযোগে মুসলমানদেরই আবিষ্কৃত প্রযুক্তি দিয়ে শক্তিশালী হচ্ছে পশ্চিমারা। ফলে জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রযুক্তির বিকাশে তাদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে মুসলিম উম্মাহকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যেভাবে পশ্চিমাদের বিশ্বব্যবস্থার ফাঁদে পড়ে মুসলিম দেশগুলো অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে দুর্বল হচ্ছে, এ অবস্থা যদি আরো দীর্ঘায়িত হয় তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি না করুন, মুসলিম দেশগুলোর করুন পরিণতি হবে। আর এ থেকে রক্ষা পেতে এখনই প্রয়োজন মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্য। যার অন্যতম একটি সমাধান হলো- অনাগ্রাসন চুক্তি। শক্তিশালী মুসলিম রাষ্ট্রগুলো একত্র হতে পারে এবং একটি অনাগ্রাসন চুক্তি গঠন করতে পারে। এ ধরনের চুক্তি মুসলমানদের একে অপরের সাথে সম্পর্কিত নিরাপত্তা উদ্বেগ হ্রাস করবে এবং একইভাবে তারা পশ্চিমাদের অবাঞ্ছিত প্রভাব থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখতে সক্ষম হবে। তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তান, মিসর এবং সৌদি আরব যদি একটি অনাগ্রাসন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে তবে পশ্চিমা কোনো দেশ মুসলিম দেশগুলোর দিকে তাকাতে সাহস করবেনা। কোনো মুসলিম দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা দিতে দশবার ভাববে।
তাই বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬৫টিরও বেশি মুসলিম দেশের উচিত- নিজেদের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব এই অনাগ্রাসন চুক্তি সম্পন্ন করা। নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক মজবুত করা। যেসব মুসলিম দেশের সরকার সা¤্রাজ্যবাদী ইহুদীদের দাসে পরিণত হয়েছে তাদেরকে সম্মিলিতভাবে বয়কট করা। ওআইসি, ডিএইট, আরব লীগ, ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক প্রভৃতি সংস্থাগুলোকে সক্রিয় এবং শক্তিশালী করা। তাদের প্রভাব বৃদ্ধি করা। অর্থনৈতিক সহযোগিতা গভীর করার জন্য একে অপরকে ট্যারিফ সুবিধা দেয়া। নিজেদের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক গভীর করা। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বয়কট করে নিজেদের মধ্যে রিজিওনাল গ্রুপিং করে অগ্রাধিকার মূলক বাজার ব্যবস্থা তৈরি করা। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে পণ্য পরিবহন ও মানুষজনের যাতায়াত সহজ করা। আর এসব পদক্ষেপ তখনই সম্ভব হবে যখন মুসলিম দেশগুলোর সরকার এবং জনগণ হাক্বীকীভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে। হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনার আদর্শ মুবারক নিজেদের মধ্যে ধারণ করতে পারবে।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
এবার রোযায় ইফতারীতে একটু মিষ্টি মুখে দিতে ব্যার্থ হবেন মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত রোযাদাররা। এবার রোযায় হোটেলের ইফতারী কিনতে ব্যর্থ হবেন মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত রোযাদাররা। এবার রোযায় মুখে এক টুকরা আপেল, আঙ্গুর বা মাল্টা মুখে দিতে ব্যার্থ হবেন মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত রোযাদাররা। উল্টো এবার রোযায় স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সরকারের তরফ থেকে বিক্রি হবে না গরু-খাসির গোশত
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মানবতা বা মনুষ্যত্ব শব্দ উচ্চারণের অধিকার বিশ্ববাসীর আর নাই গাজার শিশুদের আর্তনাদ, গাজার মায়ের আহাজারি যে বিশ্ব শুনতে পায় না- “সে বিশ্ব বধির”। গাজার শেষ হাসপাতাল ধ্বংস চরম নিষিদ্ধ ফসফরাস বোমার আক্রমণ যে বিশ্ব দেখতে পায় না- “সে বিশ্ব মহা অন্ধ”।
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -২)
১১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -১)
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে চীন ভারতের ভূ-রাজনীতি দেখতে চায় না দেশ প্রেমিক জনসাধারণ পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে করা গেলে তিস্তা মহাপরিকল্পনাও এদেশীয় অর্থায়নেই সম্ভব ইনশাআল্লাহ তিস্তা মহাপরিকল্পনা যথাযথ করতে পারলে এবং বাস্তবায়ন করলে দেশের উত্তারঞ্চল সোনালী সমৃদ্ধিতে আরো সমুজ্জল হবে ইনশাআল্লাহ
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কর্মক্ষম জনশক্তি তথা কর্মক্ষমতার স্বর্ণযুগে বাংলাদেশ বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৭৫ জনই কর্মক্ষম। এবং ইন্দোনেশিয়া নয়, বাংলাদেশই বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের মুসলমানের সংখ্যা ৪৫ কোটিরও উপরে। (সুবহানাল্লাহ)
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম মদের বিরুদ্ধে দিয়েছে অসংখ্য সতর্কবাণী ও নির্দেশনা। অথচ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশে দেয়া হবে মদের লাইসেন্স! মদ-জুয়ার প্রসার মহান আল্লাহ পাক উনার চরম অসন্তুষ্টির কারণ। যার পরিণতি হতে পারে খোদায়ী গযব। নাউযুবিল্লাহ!
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গঃ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন
০৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উন্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলমানকে ‘মুসলমানিত্ব’ বুঝতে হবে। ‘আশহাদু আন্না মুহম্মাদার রসূলুল্লাহ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাক্বীক্বীভাবে বলতে হবে ও আমলে আনতে হবে।
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)