মুসলমানের আত্মকেন্দ্রীকতা, অস্তিত্বের সংকট, আত্ম-পরিচয় অনুভব
, ২০ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৩ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০২ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৮ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
দেখা যায়, খারাপ মানুষগুলো তার খারাপ স্বভাব সমাজে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চায়, কিন্তু ভালো মানুষগুলো তার ভালো স্বভাব সবার মধ্য ছড়িয়ে দিতে চায় না, নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেই সন্তুষ্ট। অথচ সমাজে ছড়িয়ে পড়া খারাপ বিষয়গুলো তাকে স্পর্শ না করলেও তার পরবর্তী প্রজন্মকে যে স্পর্শ করবে না, সেটা কিন্তু সে নিশ্চিত বলতে পারে না।
‘আপনি কেন সামষ্টিক চিন্তাভাবনা লালন করেন না, কেন জোটবদ্ধ হতে চান না?’- এই কথা বললেই কেউ কেউ বলে, “ভাই সামষ্টিক কিছু করতে গেলে সময় দিতে হয়, সেই সময় কোথায়? কামাই রোজগার করতে করতে দিন শেষ। ” কথা সত্য, কিন্তু আংশিক। যে খারাপ মানুষদের কথা বললাম, তারাও কিন্তু কামাই রোজগার করে, এবং জোটবদ্ধ হওয়ার জন্য আলাদা সময় দেয়। তারা যদি জোটবদ্ধ হতে সময় দিতে পারে, তবে ভালো মানুষগুলোর সময় দিতে কমতি হয় কেন?
আসলে মানুষ জোটবদ্ধ হয় অস্তিত্বের সংকটের কারণে। যখন কেউ বুঝে তার অস্তিত্ব হুমকির মুখে, তখন সে টিকে থাকার জন্য জোটবদ্ধ হয়।
একজন মুসলমানের ক্ষেত্রে অস্তিত্বের সংকটের চিন্তা তখন আসবে, যখন একজন মুসলমান নিজেকে মুসলমান হিসেবে আত্ম পরিচয় অনুভব করবে। নিজেকে মুসলমান হিসেবে অনুভব করার পর যখন সে দেখবে, সমাজে তার মুসলিম পরিচয় বা ঈমান-আকিদ্বা ও আমলে আঘাত আসছে, তখন সে অস্তিত্বের সংকট অনুভব করবে। তখন সেই সংকট থেকে বাচতে সে সংঘবদ্ধ বা জোটবদ্ধ হবে, সমষ্টিগত চিন্তা করবে।
সমস্যা হচ্ছে, বর্তমান মুসলিম সমাজ নিজেদের মুসলমান হিসেবে আত্মপরিচয় অনুভবই করে না বা গুরুত্ব দেয় না। বরং নিজেকে সুশীল, ধর্মনিরপেক্ষ, অমুক দলের সমর্থক, তমুক এলাকাবাসী, তমুক পেশার প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। ফলে ঐ পরিচয়গুলোতে যখন আঘাত আসে, তখন সে ঐ পরিচয় থেকে অস্তিত্বের সংকট অনুভব করে। কিন্তু মুসলমান আত্মপরিচয়ে যখন আঘাত আসে, তখন অস্তিত্বের সংকট অনুভবই করে না, কারণ তার মুসলিম হিসেবে আত্মপরিচয়বোধই নেই।
এজন্য একজন মুসলমান যখন মুসলিম হিসেবে আত্মপরিচয়বোধ অনুভব করবে, ঐ পরিচয়ে যখন আঘাত আসবে, তখন সে অস্তিত্বের সংকট অনুভব করবে, আর সেই অস্তিত্বের সংকট থেকে সে দলবদ্ধ বা সমষ্টিবদ্ধ হয়ে সেই আঘাত প্রতিহত করতে যাবে, কারণ একা একা তার পক্ষে সেই আঘাত সামাল দেয়া সম্ভব নাও হতে পারে।
এজন্য আসলে আল্লাহ পাক মুসলমানদের জোটবদ্ধ বা একতাবদ্ধ থাকতে বলেছেন। মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন- “আর তোমরা সবাই আল্লাহ পাক উনার রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধর এবং পরস্পর বিভক্ত হয়ো না।” (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১০৩)। দ্বীন ইসলামে সমষ্টিবদ্ধতা থাকার গুরুত্ব কতটুকু, এটা ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায়ের তাগিদ দ্বারা অনুধাবন করা যায়। পুরুষকে জামাতে নামাজ পড়তে সর্বোচ্চ তাগিদ দেয়া হয়েছে, একা একা নামাজ পড়তে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তারমানে দিনে ৫ বার মুসলমানরা যদি জোটবদ্ধ হতে পারে, তবে তাদের মধ্যে আলাদা শক্তি, প্রভাব বৃদ্ধি পাবে, যার দ্বারা তারা শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করতে পারবে।
-আহমদ হাসানুজ্জামান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সকল কাফিররাই মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৫)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৪)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৯)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)