মুসলমানদের সাথে সন্ত্রাসী, দখলদার, অভিশপ্ত ইহুদী জাতির শত্রুতার মূল কারণ (২)
, ১৭ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০২ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৬ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেহেতু ইহুদী বংশে আগমন মুবারক করেননি। তাই তাদের অতীত স্বভাব-চরিত্র, একগুয়েমী ও জেদ অনুযায়ী বনী ইসরাঈলিরা অনেক হযরত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে অমান্য ও শহীদ করার মতো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেও অমান্য করা শুরু করলো, উনার বিরোধিতায় লিপ্ত হলো। এমনকি তারা উনাকেও শহীদ করার অনেক পরিকল্পনা করতে শুরু করলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! কিন্তু তারা তাতে কখনোই সফলকাম হতে পারেনি।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মাঝে বনী ইসরাঈল গোত্রীয় হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে ইহুদী জাতির বেঈমানীর ইতিহাসের বর্ণনা বার বার এসেছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেও তাদের চরম বেঈমানীর কথাও বলা হয়েছে।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফে হিজরত মুবারক করার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার বর্বর ইহুদী জাতি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গ্রহণ করতে পারেনি। সে সময় তারা বেশীর ভাগই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফে বসবাস করতো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে তারা নানা কূট-কৌশল রচনা করতে থাকে। এই চক্রান্ত্র ও ষড়যন্ত্রের জাল বিছাতে তাদের নারীরাও বিরত থাকেনি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শহীদ করার জন্য ইহুদী নারীরা কতই না ষড়যন্ত্র করেছে।
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, ‘খায়বর বিজয়ের পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন বিশ্রাম মুবারক নিচ্ছিলেন, তখন বিতাড়িত বনূ নাযীর গোত্রের কথিত নেতা ও কোষাধ্যক্ষ সালাম বিন মিশকামের স্ত্রী যয়নব বিনতুল হারেছ বকরীর ভূনা রান উনাকে হাদিয়া পাঠায়। সে আগেই জেনে নিয়েছিল যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রানের গোশত পছন্দ করেন। এজন্য উক্ত মহিলা সেই রানে ভালভাবে বিষ মাখায় এবং পুরো বকরীর মধ্যেই বিষ মেখে দেয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি গোশতের কিছু অংশ চিবিয়ে ফেলে দেন, গিলেননি। উনার সাথে ছিলেন হযরত বিশর ইবনে বারা ইবনে মা’রূর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেই স্থান থেকে গোশত মুবারক গ্রহন করেন তিনিও সেখান থেকে গোশত মুবারক গ্রহন করেন। কিন্তু হযরত বিশর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সেটা গিলে ফেলেন আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চিবিয়ে ফেলে দেন। অতঃপর ইরশাদ মুবারক করেন-
إنَّ هَذَا الْعَظْمَ لَيُخْبِرُنِي أَنَّهُ مَسْمُومٌ
‘এই হাড্ডি আমাকে বলছে যে, সে বিষ মিশ্রিত’। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন উক্ত ইহুদী মহিলাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তখন সে বিষের কথা স্বীকার করে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করেন, কোন্ জিনিস তোমাকে এই কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে? সে বলে- আপনি আমার সম্প্রদায়ের নিকট (নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক) সম্পর্কে যা পৌঁছিয়েছেন সেটা আপনার নিকট গোপন নয়। এর দ্বারা আমার উদ্দেশ্য ছিল এই যে,
إِنْ كَانَ مَلِكًا اسْتَرَحْتُ مِنْهُ، وَإِنْ كَانَ نَبِيًّا فَسَيُخْبَرُ
‘যদি (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি কোনো বাদশাহ হন, তাহলে আমরা উনার থেকে নিষ্কৃতি পাব। আর যদি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার প্রেরিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী ও রসূল হন, তাহলে উনাকে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে’। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাকে ছেড়ে দেন। আর হযরত বিশর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উক্ত বিষ মিশ্রিত গোশত খেয়ে ফেলার কারণে বিছাল শরীফ গ্রহন করেন।” (তাফসীরে বাগবী ৭/৩১১)
অন্য বর্ণনায় রয়েছে, প্রথমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাকে ছেড়ে দেন। কিন্তু হযরত বিশর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বিছাল শরীফ গ্রহন করার কারণে উক্ত ইহুদী মহিলাকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়।
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সত্যের মাপকাঠি
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৯)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কোনো স্থানেই সরাসরি বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করেননি। যা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুলন্দী শান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ মুবারক (৪)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (১)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)