মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফির মুশরিকদের চক্রান্ত এবং তা থেকে বাঁচার উপায় (৩)
, ০৬ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৯ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০৪ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
বর্তমানে কাফির মুশরিকদের অন্যতম সফলতা হচ্ছে মুসলমানদের কেন্দ্রস্থল তথা পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদীনা শরীফ উনাদের দেশ তথা সউদী আরবের ক্ষমতায় ইহুদী বংশোদ্ভূত সউদ পরিবারকে বসানো। দেখা যাচ্ছে বর্তমানে মুসলিম বিরোধী সমস্ত অরাজকতার মূল হচ্ছে এই সউদ পরিবার। তারা একদিকে যেমন বিশ্বজুড়ে ঈমানবিধ্বংসী ওহাবী-সালাফি আক্বীদা প্রচার-প্রসার করে যাচ্ছে, অন্যদিকে আমেরিকাসহ তাবৎ কাফিরদের মুসলমানদের উপর যুলুম-নির্যাতন চালানোর জন্য অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
ইহুদী এজেন্ট উলামায়ে সূ:
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “সৃষ্টির নিকৃষ্ট হচ্ছে ধর্মব্যবসায়ী মালানা তথা উলামায়ে সূ। ” বর্তমান সময়ে উলামায়ে সূ তথা ধর্মব্যবসায়ী মালানা গোষ্ঠী ইহুদী এজেন্ট রূপে কাজ করে যাচ্ছে। কাফির-মুশরিকদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণে এই ভ- মালানা গোষ্ঠী সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হারাম বিষয়সমূহসহ (যেমন- ছবি, টেলিভিশন, টিভিতে প্রোগাম, গান-বাজনা, খেলাধুলা, গণতন্ত্র, হরতাল, লংমার্চ ইত্যাদি) কে হালাল বলে ভুল ফতওয়া প্রচার করছে। নাউযুবিল্লাহ! এরাই পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, পবিত্র লাইলাতুল মি’রাজ শরীফ, পবিত্র লাইলাতুর রগায়িব শরীফ, পবিত্র লাইলাতুল বরাত শরীফ, পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর শরীফ, পবিত্র আশূরা শরীফ, পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফসহ সকল আইয়ামুল্লাহ শরীফ অর্থাৎ ইসলামী দিবসগুলোর বিরুদ্ধে ফতওয়া দিচ্ছে, কিন্তু কাফিরদের বিভিন্ন দিবস (যেমন- পহেলা বৈশাখ, থার্টি ফাস্ট নাইট, মে দিবস, ১লা এপ্রিল) ইত্যাদির পক্ষে ফতওয়া প্রচার করছে। নাউযুবিল্লাহ! মূলতঃ এই উলামায়ে সূ’দের থেকেই বাতিল ৭২ ফিরকার সূচনা, এদের বিভ্রান্তির কারণেই আজকে মুসলমানগণ ঈমান নষ্ট করে কাফির-মুশরিকদের পথ বেছে নিচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
মুসলমানদের জন্ম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা:
বর্তমানে কাফিররা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশে দ্রুত বর্ধনশীল জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদের বিভিন্ন এনজিও’র মাধ্যমে বিনা মূল্যে জন্মনিরোধক দিয়ে যাচ্ছে। কাফিররা মুসলমানদের খাওয়া-পরার ভয় দেখিয়ে হারাম জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে প্রলুব্ধ করে। তারা এদেশে স্লোগান চালু করেছে, “দুটি সন্তানের বেশি নয়, একটি হলে ভালো হয়। ” এরা মুসলিম দেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণকে উৎসাহিত করতে পুরস্কার ঘোষণা করছে।
অথচ কাফির রাষ্ট্রগুলোতে উল্টো বেশি সন্তান গ্রহণ করলে পুরষ্কৃত করা হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
মুসলিম দেশগুলোর সম্পদ লুণ্ঠন:
কাফির-মুশরিকরা মুসলিম দেশগুলো থেকে নানান উপায়ে সম্পদ চুরি করছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, কাফিররা ইরাক থেকে তেল, আফগানিস্তান থেকে খনিজ সম্পদ, আফ্রিকান মুসলিম দেশগুলো থেকে মূল্যবান খনিজ সম্পদ লুটেপুটে নিয়ে যাচ্ছে।
দেশে দেশে কূটনীতির ছদ্মাবরণে মুনাফিক তৈরি:
কাফিররা বিভিন্ন কূটনৈতিক ছদ্মাবরণে মুসলিম দেশগুলোতে মুনাফিক বা বিশ্বাসঘাতক তৈরীর কার্যক্রম চালায়। এই মুনাফিকরা মুসলিমদেশগুলোর শাসন ক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ পদে অবস্থান করে। তারা শুধু নামে মুসলমান হয়, কিন্তু সর্বদা কাফিরদের পক্ষে কাজ করে থাকে। এরাই মুসলিম দেশে কাফিরদের এজেন্ডাসমূহ বাস্তবায়ন করে থাকে।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মুসলমানদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী:
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “শীঘ্রই এমন এক সময় আসবে, যখন পৃথিবীর বিভিন্ন জাতিরা একে অপরকে মুসলমানদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য পরস্পরকে আহবান করবে, যেভাবে একজন অপরজনকে খাবারের জন্য আহ্বান করে থাকে ঠিক তদ্রƒপ। ” কেউ একজন জিজ্ঞেস করলেন, “সেই সময় কি আমরা সংখ্যায় কম থাকবো?” উত্তরে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “না, সে সময় সংখ্যায় তোমরা হবে অগণিত। কিন্তু তোমরা হবে বন্যার পানিতে ভেসে আসা খড়কুটোর মতো (অর্থাৎ শক্তিহীন)। শত্রুদের অন্তরে তোমাদের সম্পর্কে যে ভয় আছে মহান আল্লাহ পাক তা উঠিয়ে নেবেন এবং তোমাদের অন্তরে তিনি ‘অহান’ নিক্ষেপ করবেন। ” একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি জিজ্ঞেস করলেন,“ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ‘অহান’ কি?”
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “দুনিয়ার মুহব্বত আর মৃত্যুর প্রতি অনীহা। ” (আবু দাউদ শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ)
বর্তমান সময়ে সকল পরিস্থিতির সাথে উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা হুবহু মিলে যায়। (চলবে)
-মুহম্মদ আমীনুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)