মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফির মুশরিকদের চক্রান্ত এবং তা থেকে বাঁচার উপায় (১)
, ০৪ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৭ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ৩১ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সেটাই দেখা যায়, কাফির-মুশরিকরা প্রতিনিয়ত নানান উপায়ে, নানাভাবে মুসলমানদের ক্ষতি করতে বদ্ধপরিকর। এজন্য তারা বিভিন্ন ধরনের চক্রান্তও করে থাকে। ত্রয়োদশ ঈসায়ী শতাব্দীতে শেষ ক্রুসেড যুদ্ধে কাফিররা যখন হযরত সালাহুদ্দীন আইয়ূবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট চরমভাবে পরাজিত হয় তখন তারা বুঝতে সক্ষম হয়, তারা আর কখনই সম্মুখযুদ্ধে মুসলমানদের সাথে পেরে উঠবে না। কারণ মুসলমানদের নিকট রয়েছে এমন এক কুদরতি শক্তি, যাকে বলা হয় ঈমানী কুওওয়াত। এই শক্তি যতক্ষণ মুসলমানদের নিকট থাকবে ততক্ষণ হাজার চেষ্টা করেও মুসলমানদেরকে পরাজিত করা সম্ভব হবে না। তবে যদি মুসলমানদের থেকে সেই কুদরতি শক্তিখানা সরিয়ে দেয়া যায়, তবেই মুসলমানদের পরাজিত করা সম্ভব, তখন মুসলমানরা সংখ্যায় যত বেশি হোক, সেটা সমস্যা হবে না।
সেই থেকে কাফির-মুশরিকরা মুসলমানদেরকে সম্মুখযুদ্ধে হারানোর চিন্তা বাদ দেয়, গ্রহণ করে ভিন্ন চক্রান্ত অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনায় মুসলমানদের ঈমানী কুওওয়াত নষ্ট তথা নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় সৃষ্টিকেই অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়। বর্তমানে আমেরিকা, ইসরাইল, ভারত, রাশিয়া, চীন, জাপান, বার্মা, ব্রিটেন অর্থাৎ ইউরোপসহ তাবৎ কাফিররা যে মুসলমানদের উপর যুলুম-নির্যাতন করে যাচ্ছে তার পেছনে রয়েছে কাফিরদের সেই দীর্ঘ মেয়াদী প্ল্যানের বাস্তবায়ন।
এ লেখায় কাফিরদের বিভিন্ন চক্রান্ত, তার বাস্তবায়ন ও তার থেকে কি করে উদ্ধার পাওয়া যায় সে সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে।
মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফির-মুশরিকদের চক্রান্তের কিছু রূপ:
ইহুদীদের প্রটোকল:
“দ্য প্রটোকল” একটি ঐতিহাসিক পুস্তক, যেখানে সমগ্র বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করতে কুচক্রী ইহুদীদের দীর্ঘ মেয়াদি (প্রায় ৩০০ বছর) পরিকল্পনা বা নীল নকশা লিপিবদ্ধ আছে। দুনিয়ার মানুষকে সর্বপ্রথম এ বইটি সম্পর্কে অবহিত করেছিলো অধ্যাপক ‘সারকিল এ নাইলাস’ নামক জনৈক রুশীয় পাদ্রী। ১৯০৫ সালে অধ্যাপক নাইলাস নিজে উদ্যোগী হয়ে বইটি প্রকাশ করে। ফ্রান্সের একটি ফ্রি-ম্যাসন লজ থেকে জনৈক মহিলা (সম্ভবত হিব্রু ভাষায় লিখিত) মূল বইটি চুরি করে এনে তাকে উপহার দিয়েছিল। নাইলাস ধর্মে খ্রিস্টান ছিল। সে স্বীয় ধর্মকে ইহুদী ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যেই এ বইটি বিশ্ববাসীর কাছে পেশ করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছিল।
বতর্মান সময়ে ইহুদীরা যেভাবে অর্থনীতি, মিডিয়া, শিক্ষা ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে সমগ্র বিশ্বকে করায়ত্ব করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এ নীল নকশায় সেই ধরনেরই বিশ্ব রাষ্ট্রেরই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সাম্প্রতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, পৃথিবীতে যে কয়টি বড় ধরনের ঘটনা বা দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তার সবগুলোই প্রটোকল বইয়ে পূর্ব থেকেই তার পরিকল্পনা ভবিষ্যদ্বাণীর মতো লিপিবদ্ধ ছিল।
মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ:
কাফির মুশরিকরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অস্ত্র সফলভাবে ব্যবহার করেছে তার মধ্যে সর্বাধিক শক্তিশালী অস্ত্র হচ্ছে মিডিয়া। বর্তমান যুগে মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করেই কাফির-মুশরিকরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে একচেটিয়া কাজ করে থাকে। এ মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যাপকহারে অপপ্রচার করা হয়, সকল খবর প্রচার করা হয় কাফিরদের পক্ষে এবং মুসলমানদের বিপক্ষে। ফলে সারা বিশ্বের জনমত চলে যায় কাফিরদের পক্ষে।
উল্লেখ্য, বর্তমান সময়ে যে সকল মিডিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছে ইহুদীরা তন্মধ্যে ২০০টি রেডিও স্টেশন, ১৭০০ টিভি চ্যানেল এবং দৈনিক, সাপ্তাহিক ও অন্যান্য প্রায় ২২ হাজার ম্যাগাজিন এগুলোর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পবিত্র দ্বীন ইসলাম এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
বেপর্দা-বেহায়াপনার প্রচার:
কাফিররা মুসলমানদের ঈমানী কুওওয়াত (শক্তি) ধ্বংস করার জন্য ছড়িয়ে দিয়েছে চরম বেপর্দা-বেহায়াপনার বিষ। আর সেই বিষ ছড়ানোর সহজ মাধ্যম হচ্ছে- ছবি, টিভি, ডিশ এন্টেনা, পর্নোগ্রাফি ইত্যাদি। এগুলোর মাধ্যমেই ধ্বংস করা হচ্ছে মুসলমানদের নৈতিক চরিত্র, ধ্বংস হচ্ছে ঈমানী কুওওয়াত। দেখা যাচ্ছে, মুসলিম দেশগুলো বেপর্দা-বেহায়াপনার প্রচারের লক্ষ্যে কাফিররা এ মাধ্যমগুলোকে খুবই সহজলভ্য করে দিয়েছে। যেমন- কাফিরদের দেশে প্রত্যেকটি টিভি চ্যানেল দেখতে আলাদা অর্থ দিতে হয়, অথচ বাংলাদেশে মাত্র ২০০ টাকার বিনিময়েই সব চ্যানেল দেখা সম্ভব। (চলবে)
-মুহম্মদ আমীনুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (৩)
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (৩)
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)