মুসলমানদের জন্য জরুরী একটি বিষয় ওশর, যা জানা নেই অনেকের (১)
, ২১ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩০ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ২৮ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ১৪ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
‘উশর’ শব্দটি আরবী আশরাতুন (দশ) শব্দ হতে উৎসরিত বা উৎকলিত হয়েছে। এর অভিধানগত বা শাব্দিক অর্থ হলো এক দশমাংশ। আর শরীয়ত উনার পরিভাষায় কৃষিজাত পণ্য- ফল ও ফসলের যাকাতকে উশর বলে।
উশর সম্পর্কে কুরআন শরীফ উনার দলীল:
উশর সম্পর্কে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার একাধিক আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
أَنْفِقُوْا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّا أَخْرَجْنَا لَكُمْ مِّنَ الْأَرْضِ
অর্থ: তোমরা তোমাদের উপার্জিত হালাল সম্পদ হতে এবং যা আমি তোমাদের জন্য যমীন হতে উৎপন্ন করিয়েছে তা থেকে দান করো। (পবিত্র সূরা বাক্বারা: আয়াত শরীফ ২৬৭)
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاٰتُوْا حَقَّهٗ يَوْمَ حَصَادِهٖ
অর্থ: ফসল কাটার সময় তার হক (পবিত্র উশর) আদায় করো। (সূরা আনআম: আয়াত শরীফ ১৪১)
উশর সম্পর্কে পহাদীছ শরীফ উনার দলীল:
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র উশর সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ الله ِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ الله ُتَعَالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : فِيْمَا سَقَتِ السَّمَاءُ وَالْعُيُونُ، أَوْ كَانَ عَثَرِيًّا الْعُشْرُ وَمَا سُقِيَ بِالنَّضْحِ نِصْفُ الْعُشْرِ
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যাতে অর্থাৎ যে যমীনকে আসমান অথবা প্রবাহমান কূপ পানি দান করে অথবা যা নালা দ্বারা সিক্ত হয়, তাতে পবিত্র উশর অর্থাৎ দশ ভাগের এক ভাগ আর যা সেচ দ্বারা সিক্ত হয়, তাতে অর্ধ উশর অর্থাৎ বিশ ভাগের এক ভাগ। (বুখারী শরীফ)
উশর সম্পর্কে হানাফী মাযহাব উনার ফতওয়া:
হানাফী মাযহাব উনার ইমাম হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যমীনে উৎপন্ন যাবতীয় ফসলেরই পবিত্র উশর অথবা নিছফু উশর দিতে হবে। চাই দীর্ঘস্থায়ী শস্য হোক, চাই ক্ষণস্থায়ী শস্য অর্থাৎ শাক-সবজি হোক। তিনি আরো বলেন, কম-বেশি যাই হোক পবিত্র উশর আদায় করতে হবে।
উশর আদায়ের সময়:
উশর আদায়ের নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। যতবারই ফসল উৎপন্ন হবে ততোবারই ফসলের পবিত্র উশর দিতে হবে।
উশর প্রদানকারী:
যে বা যারা ফসলের মালিক হবে সে বা তারাই উশর প্রদান করবে।
উশর ব্যয়ের খাতসমূহ:
যে খাতে বা স্থানে যাকাত ব্যয় করতে হয়, সে খাত বা স্থানেই উশর ব্যয় করতে হবে।
উশরের নিছাব:
হানাফী মাযহাব মতে উশরের কোন নিছাব নেই। বিনা পরিশ্রমে উৎপাদিত ফসল ও ফল ফলাদির দশ ভাগের এক ভাগ বা তার মূল্য দান করে দিতে হবে। আর পরিশ্রম করে ফসল বা ফল ফলাদি ফলানো হলে তখন বিশ ভাগের এক ভাগ বা তার মূল্য দান করে দিতে হবে। ধান, চাল, গম ব্যতীত ফল-ফলাদির ১০টির ১টি বা ২০টির একটি দিতে হবে। আর যদি ৫টি হয় তবে একটার অর্ধেক দিতে হবে।
উশর আদায়ের হুকুম:
উশর আদায় করা যাকাত উনার মতই ফরয। কেউ যদি উশর আদায় না করে তাহলে সে ফরয অনাদায়ের গুনাহে গুনাহগার হবে।
কর ও খাজনা প্রদানকৃত যমীনের ফসলে উশর দেয়ার হুকুম:
কর ও খাজনা প্রদানকৃত যমীনের ফসলেও পবিত্র উশর আদায় করতে হবে। কেননা কর ও খাজনা দেয়া হয় সরকারি খাতে জমি জরিপ ও দেখাশুনা করার জন্য। অনেক জমিতে ফসল না হলেও খাজনা দিতে হয়। আবার পূর্ব যামানায় জমিতে খাজনাও দিতে হতো না। অতএব, কর ও খাজনা প্রদানকৃত যমীনের ফসলেও উশর আদায় করতে হবে। যা ফরযের অন্তর্ভুক্ত।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)