মুতার জিহাদ এবং মুসলমানদের বেমেছাল বীরত্ব (৭)
, ৩০ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৯ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ০৭ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) আইন ও জিহাদ
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ:
হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশের সাথে সাথে পতাকা মুবারক উনার মধ্যে মাটির স্পর্শ লাগার আগেই তা হাত মুবারক-এ তুলে নেন তৃতীয় সেনাপতি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি ঘোড়ায় চড়ে পতাকা মুবারক ধারণ করেন এবং অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে জিহাদ মুবারক করতে থাকেন এবং কাফিরদেরকে কচুকাটা করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ঘোষণা মুবারক অনুযায়ী মুতার জিহাদ মুবারক উনার তৃতীয় সেনাপতি হিসেবে তিনিও শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইফুল্লাহিল মাসলূল হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা উনার সেনাপতির দায়িত্ব মুবারক গ্রহণ এবং মুসলমানদের বিজয়ী শান মুবারক প্রকাশ:
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশের পর বনূ আযলান গোত্রের একজন বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত ছাবিত ইবনে আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পতাকা মুবারক গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, হে মুসলমানগণ! আপনারা একজনকে সেনাপতি মনোনীত করুন। তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সম্মিলিতভাবে হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে সেনাপতি মনোনীত করেন। সুবহানাল্লাহ! হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পতাকা মুবারক গ্রহণ করে কঠিনভাবে জিহাদ মুবারক শুরু করে দেন। মুসলমানরা অসংখ্য কাফিরদেরকে কচুকাটা করে জাহান্নামে পাঠাতে থাকেন। মুসলমানদের তীব্র আক্রমণে কাফির বাহিনী পলায়ন করতে বাধ্য হয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মুসলমানদেরকে মহাবিজয় মুবারক হাদিয়া করেন। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَعَى حَضْرَتْ زَيْدًا رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ وَحَضْرَتْ جَعْفَرًا رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ وَحَضْرَتْ ابْنَ رَوَاحَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ لِلنَّاسِ قَبْلَ أَنْ يَأْتِيَهُمْ خَبَرُهُمْ فَقَالَ أَخَذَ الرَّايَةَ حَضْرَتْ زَيْدٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَأُصِيبَ ثُمَّ أَخَذَ حَضْرَتْ جَعْفَرٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَأُصِيبَ ثُمَّ أَخَذَ حَضْرَتْ ابْنُ رَوَاحَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَأُصِيبَ وَعَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ حَتَّى أَخَذَ الرَّايَةَ سَيْفٌ مِنْ سُيُوفِ اللَّهِ حَتَّى فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ
অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত রয়েছেন যে, (মুতার জিহাদ মুবারক চলাকালীন সময়) হযরত যায়েদ ইবনে হারিছাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার, হযরত জা’ফর ত্বইয়্যার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার অর্থাৎ উনাদের শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশের সংবাদ পৌঁছার পূর্বেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশের সংবাদ (মদীনা শরীফ উনার মধ্যে থেকেই) হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের নিকট ঘোষণা মুবারক করেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হযরত যায়েদ ইবনে হারিছাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পতাকা মুবারক গ্রহণ করেন। তারপর তিনি আহত হন (এবং শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন)। অতঃপর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পতাকা মুবারক গ্রহণ করেন। তারপর তিনি আহত হন (এবং শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন)। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরুল মুহব্বত মুবারক (অশ্রু মুবারক) প্রবাহিত করতে থাকেন। (অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,) শেষ পর্যন্ত মহান আল্লাহ পাক উনার তরবারী মুবারকসমূহ উনাদের মধ্য থেকে একখানা তরবারী মুবারক (অর্থাৎ হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) তিনি পতাকা মুবারক গ্রহণ করেন। এমনকি মহান আল্লাহ পাক তিনি (হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মাধ্যমে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে) কাফির-মুশরিকদের উপর মহাবিজয় মুবারক হাদিয়া করেন। সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, শরহুস সুন্নাহ্ লিল বাগবী ১৪/২৬)
-মুহম্মদ আল আমিন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত জিহাদের ময়দানে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বীরত্ব মুবারক (২)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬৩)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত জিহাদ মুসলমানদের একটি বিশেষ ফরয ইবাদত
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬২)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত জিহাদ উনার ময়দানে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমগণ একজন অপরজনকে প্রাধান্য দেয়ার বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৯)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)