মাত্র ১৮০০ বিচারকের কাঁধে সারাদেশের ৩৭ লাখ মামলা। বিচারক সঙ্কটের পাশাপাশি বছরে বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকছে আদালত। মামলার জট কমাতে ছুটি কমানো দরকার। পাশাপাশি দরকার পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে সব আইন প্রয়োগ করা।
, ০২ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২০ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ১৯ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ ভাদ্র শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মন্তব্য কলাম
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের উচ্চ ও অধস্তন আদালতে দেওয়ানি, ফৌজদারি ও অন্যান্য মিলিয়ে বিচারাধীন রয়েছে প্রায় ৩৭ লাখ মামলা। এর মধ্যে অধস্তন আদালতে বিচারাধীন এবং নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা মামলার সংখ্যা প্রায় ৩২ লাখ। এত বিপুলসংখ্যক মামলা নিষ্পত্তির জন্য বিভিন্ন পদমর্যাদার যতসংখ্যক বিচারক ও অবকাঠামো প্রয়োজন তা বর্তমানে নেই বলে মনে করছেন বিচারাঙ্গন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, মামলাজট নিরসনে অন্যতম অন্তরায় বিচারক ও অবকাঠামো সংকট।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সারা দেশের অধস্তন আদালতে ১ হাজার ৮২০ জন বিচারক কর্মরত রয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতসহ বিভিন্ন আদালতে বিচারকাজ পরিচালনা করছে তারা। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্বল্প লোকবল ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকায় মামলা পরিচালনা ও জট নিরসনে কার্যকর সমাধান আসছে না বলে মনে করছে আইনজ্ঞরা।
মামলাজট নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০১৫ সালের আগষ্টে আইন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আইন কমিশনের দেয়া প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, দেশে প্রতি ৪০ হাজার জনসংখ্যার জন্য একজন করে বিচারক প্রয়োজন। সে হিসেবে চার হাজার বিচারক নিয়োগের প্রয়োজন থাকলেও আইন কমিশন সে সময় আপাতত ২ হাজার ৪০০ বিচারক নিয়োগের সুপারিশ করে। কিন্তু গত পাঁচ বছরেও বিচারক নিয়োগে কমিশনের সেই সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের বিচার বিভাগের আইন-কানুন এখনো সেই ব্রিটিশ বেনিয়াদের অনুকরণে তৈরী। যার কারণে বেনিয়াদের সেইসব পুরনো আইন দিয়ে বিচার বিভাগের এই হাজার হাজার মামলার জট নিরসন করা যাচ্ছেনা। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হলো, এত মামলাজট থাকা সত্ত্বেও বছরে ৬ মাসই বন্ধ থাকছে সুপ্রীমকোর্ট। ক্যালেন্ডারের (দিন পঞ্জিকা) দিকে তাকালে দেখা যায়, বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১৮১ দিন ছুটি। (৩০ দিন করে ধরলে ছয় মাসের বেশি) আদালত সরকারি, সুপ্রিম কোর্ট ঘোষিত ও অবকাশকালীন ছুটিতে থাকে। ফলে বেড়ে চলেছে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তিও। অথচ মামলার নিষ্পত্তিকারী সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান সুপ্রিম কোর্টই বন্ধ থাকছে বছরের অর্ধেক সময়। ফলে বন্ধ সময়ে আবার নতুন নতুন মামলা এসে মহাজটের সৃষ্টি করছে। ন্যায়বিচার প্রত্যাশীরা হতাশ হয়ে ফিরে গিয়ে দেশের বিচার বিভাগের দিকে আঙ্গুল ওঠাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিচারাধীন মামলা আদালতে জমে থাকায় বিচারপ্রার্থী জনগণ যথা সময়ে বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যার কারণে বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে হতাশা জন্ম নিচ্ছে। এমনো অনেক মামলা রয়েছে- যা বছরের পর বছর পেরিয়ে গেছে; কিন্তু শুনানির জন্য উঠছে না। আবার উঠলেও দেখা যাচ্ছে কোর্ট বন্ধের গ্যাঁড়াকলে পড়ে যাচ্ছে। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির জন্য কিছুদিন পরপরই বেঞ্চ পরিবর্তন করা হচ্ছে, পেপারবুকের জট কমাতে কেনা হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সরঞ্জামাদি, বাড়ানো হয়েছে বিচারকের সংখ্যা। মামলাজট কমাতে আপিল বিভাগেও বেঞ্চ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন যে হারে নতুন মামলা যোগ হচ্ছে সে তুলনায় এ পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। তাই বিশাল এ মামলাজট রয়েই যাচ্ছে। এদিকে শুধু বিচারকের সংখ্যা বাড়িয়ে মামলাজট কমানো সম্ভব কিনা তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে দেশের শীর্ষ আইনজীবীরা।
অন্যদিকে, দেখা যায় বর্তমানে উচ্চ আদালতের কোর্ট বসছে ২৪ ঘন্টায় ১ বার। যা নিত্যান্তই অপ্রতুল। যদি সকালে কোর্ট বসার পাশাপাশি সান্ধকালীন কোর্ট বসানো হয় তাহলে মামলাজট কিছুটা হলেও কমবে। এ জন্য প্রয়োজনে অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের পুনরায় নিয়োগ করতে হবে। এ জন্য উচ্চ আদলতের ক্ষেত্রে আইন সংশোধন প্রয়োজন হবে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে- যদি কোর্টের ছুটি কমিয়ে উচ্চ আদালতের শাখা সারাদেশে বিকেন্দ্রীকরণ করে দেয়া হয় তাহলে অবিলম্বে ৩৩ লাখ মামলাজট নিরসন হওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার।
পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশের উদাহরণ টেনে বলা যায়, ওই সব দেশে দুই শিফট চালু আছে। আমাদেরকেও পুরনো অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
পাশাপাশি, শুধু বিচারক সঙ্কট নিরসন করলেই হবেনা সেই সাথে একজন বিচারকের জন্য অন্যান্য আনুষঙ্গিক যে সুযোগ-সুবিধা ও লোকবল দরকার সেটিও প্রয়োজন। সেইসাথে, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারকরা অবসরে গেলেও এখনো তারা বিচারকাজ পরিচালনার মতো দক্ষতা রাখেন। একসময় দক্ষ ও অভিজ্ঞ আইনজীবীদের মধ্য থেকেও বিচারক নিয়োগ হতো। এখন মামলাজটের যে পরিস্থিতি তাতে শুধু জুডিশিয়াল ক্যাডারের ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। সরকার চাইলে বিশেষ ব্যবস্থায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারক এবং আইনজীবীদের মধ্য থেকেও বিচারক নিয়োগ করতে পারে।
তবে যে কথাটি বিশেষ প্রণিধানযোগ্য তাহলো- আমাদের বর্তমান বিচারব্যবস্থা ইংল্যান্ডের অ্যাংলো-স্যাক্সন বিচার ব্যবস্থার অনুরূপ। মামলা জট কমাতে, মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এর সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে বর্তমানে দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং লক্ষ লক্ষ মামলার জটের কারণে অবিলম্বে হাইকোর্ট ৬ মাস বন্ধের বিপরীতে খোলা রাখা দরকার।
প্রজাতন্ত্রের সংবিধানের মালিক জনগন। যেখানে জনগনের সুবিচারকে অগ্রাধিকার না দিলে তা জনগনকে প্রজাতন্ত্রের মালিক সংবিধানের মালিক মনে করা হলোনা। তাদের অধিকার আদায়ের পরিবর্তে হরণ করা হলো। বিচারকরা নিজেরাও বলে থাকে যে, বিচারের কাজ বিলম্ব করা মানে বিচার কাজ বিঘিœত করা। কাজেই এ লক্ষ্যে জনগনের সাথে বিচারকদেরও কাজ করতে হবে।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)