মাইয়্যিতের জানাযা নামাযের গুরুত্ব-ফযীলত ও মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক-১
, ০১ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৯ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ১৮ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ০৩ ভাদ্র শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে, “যে ব্যক্তি জানাযার নামাযে শরীক হবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে উহুদ পাহাড়ের সমান ছাওয়াব দান করবেন। যে ব্যক্তি জানাযার পর দাফন কার্যে শরীক হবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে দুই পাহাড় পরিমাণ ছওয়াব দান করবেন। ” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শরীক করেনি এমন চল্লিশজন মুসলমান কোন মৃতের জানাযায় শরীক হলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের বরকতে উক্ত মৃতকে ক্ষমা করে দিবেন। (মুসলিম শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حضرت امام الاول كرم الله وجهه عليه السلام قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم مَنْ غَسَّلَ مَيِّتًا وَكَفَّنَهُ وَحَنَّطَهُ وَحَمَلَهُ وَصَلَّى عَلَيْهِ وَلَمْ يُفْشِ عَلَيْهِ مَا رَأَى خَرَجَ مِنْ خَطِيئَتِهِ مِثْلَ يَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ
অর্থ: সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি মৃতকে গোসল দিল, কাফন পরালো, সুগন্ধি মাখলো, বহন করে নিয়ে গেল, তার জানাজার নামায পড়লো এবং তার গোচরীভূত হওয়া তার গোপনীয় বিষয় প্রকাশ করল না, তার থেকে গুনাহসমূহ তার জন্মদিনের মত বের হয়ে যায়। (ইবনে মাজাহ শরীফ:-১৪৬২)
কাজেই, কোন মুসলমান ভাই ইন্তেকাল করলে অপর মুসলমানের দায়িত্ব-কর্তব্য হলো, তার গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থার সার্বিক কাজ সম্পাদন করা এবং মুসলমান ভাইয়ের সমালোচনা না করে, তার গোপনীয় দোষগুলো চুপিয়ে রাখা।
পবিত্র জানাযার নামাযের শর্ত
নিষিদ্ধ সময় ব্যতীত যে কোন সময় জানাযার নামায পড়া যায়। জানাযার নামাযের জামায়াত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কায় তায়াম্মুম দুরস্ত আছে। অন্যান্য নামাযের সময় বা জামায়াত ছুটে যাওয়ার ভয়ে তায়াম্মুম দুরস্ত নয়।
পবিত্র জানাযার নামায ছহীহ হওয়ার শর্ত দুই প্রকারের। এক প্রকারের শর্ত হলো নামাযীদের পক্ষে, যেমন-
(১) নামাযীর শরীর পাক,
(২) পোশাক পাক,
(৩) জায়গা পাক,
(৪) ছতর ঢাকা,
(৫) ক্বিবলা মুখী হওয়া,
(৬) দাঁড়িয়ে নামায পড়া,
(৭) নিয়ত করা শর্ত।
একমাত্র মৃত লাশকে যেই স্থানে রাখা হয়, তা পাক হতে হবে এবং নামাযীগণ যেখানে দাঁড়িয়ে নামায পড়বেন, সেই স্থান অবশ্যই পাক হতে হবে। নতুবা জানাযার নামায ছহীহ হবেনা।
জানাযার নামাযের জন্য জামায়াত শর্ত নয়। কেউ যদি একজনও হয় পুরুষই হোক বা মহিলাই হোক, বালিগই হোক, বা নাবালিগই হোক জানাযা পড়ে দেয় তবে ফরয আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু মৃতের মাগফিরাত ও জীবিত লোকের ছওয়াব হাছিল করার জন্য জামায়াত বড় করে জানাযার নামায পড়া আবশ্যক।
পবিত্র জানাযার নামায ছহীহ হওয়ার জন্য আর এক প্রকারের শর্ত হলো মৃতের
ইহা ছয়টি- (১) মৃত লাশ মুসলমান হওয়া, কাফির বা মুরতাদের লাশের উপর জানাযা জায়িয হবেনা।
(২) মৃতের শরীর ও কাফন পাক হওয়া চাই। কাফন পরানোর পূর্বে কোন নাপাকী বের হলে তা ধুয়ে পাক করে নিতে হবে। তবে কাফন পরানোর পর নাপাকী বের হলে জানাযার নামাযে ব্যাঘাত হবেনা। যদি গোসল না দিয়ে বা পানি না পাওয়ার দরুন তায়াম্মুম না করিয়ে জানাযা পড়া হয়, দুরস্ত হবেনা। বিনা গোসল বা বিনা তায়াম্মুম বা বিনা জানাযায় মাটি দিয়ে থাকলে কবর আর খোঁড়া যাবেনা।
সেক্ষেত্রে, কবরের উপরই জানাযা পড়তে হবে। তবে যতদিন পর্যন্ত লাশ না ফাটে ততদিন পর্যন্ত জানাযা পড়া যাবে অর্থাৎ ৩ দিন পর্যন্ত। যখন লাশ ফেটে গেছে বলে মনে করবে, তখন আর কবরের উপরও জানাযার নামায পড়া দুরস্ত হবে না অর্থাৎ ৩ দিন পার হয়ে গেলে।
যে খাটুলির উপর লাশ রাখা হয়, তা যদি পাক হয়, তাহলে খাটুলির নিচের জায়গা পাক না হলেও জানাযা দুরস্ত হবে।
(৩) মৃতের ছতর ঢাকা থাকা চাই। কোন কাপড় বিহীন লাশের জানাযা দুরস্ত হবেনা। জীবিতাবস্থায় যেই পরিমাণ ছতর ঢাকা ফরয ছিল, সেই পরিমাণ ছতর ঢাকা হলেও জানাযা দুরস্ত হয়ে যাবে।
(৪) মৃতের লাশ নামাযীদের সামনে হওয়া চাই, লাশ নামাযীদের পিছনে থাকলে দুরস্ত হবেনা।
(৫) মৃতের লাশ বা লাশের খাটুলী মাটিতে থাকা চাই। কারো হাতের উপর, কাঁধের উপর বা কোন গাড়ির উপর লাশ রেখে জানাযার নামায পড়লে দুরস্ত হবেনা। (শরহে বিকায়া)
(৬) মৃতের লাশ উপস্থিত থাকা চাই। অনুপস্থিত মৃতের উপর আমাদের হানাফী মাযহাব মতে জানাযার নামায পড়া মাকরুহ্।
পবিত্র জানাযার নামাজের ফরয ২ টি
(১) চার তাকবীর বলা,
(২) দাঁড়িয়ে নামায পড়া।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার পরিচয় ও প্রকারভেদ (২)
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘চাদর’
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবারের পাত্র কাঠের বাটি বা পেয়ালা
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী চামড়ার বালিশ
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুন্নত মুবারক পালনে কোন হীনম্মন্যতা নয়, বরং সব পরিবেশেই দৃঢ়চিত্ত থাকতে হবে
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা ও মুহাব্বত মুবারকে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘আঙুর’
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সকল ধরণের সুন্নতী খাবার বরকতময় রোগমুক্ত শিফা দানকারী সুন্নতী খাদ্য “ভাত”
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী “টুপি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)