সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক পালন করা এবং ছানা ছিফত মুবারক বর্ণনা করাই হচ্ছেন “ইবাদত” উনার হাক্বীক্বত
, ২ রা জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৭ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
لَوْلَاكَ مَا اَظْهَرْتُ الرُّبُوْبِيَّةِ
অর্থ: আমি যদি আপনাকে সৃষ্টি না করতাম, তাহলে আমি আমার রুবূবিয়াত মুবারক প্রকাশ করতাম না। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক, শান-মান মুবারক বর্ণনা করার মাধ্যমেই যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রুবূবিয়াত মুবারক যাহির হয়। সুবহানাল্লাহ। এ জন্যই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক, শান-মান মুবারক দায়িমীভাবে বর্ণনা করার নির্দেশ মুবারক দিয়ে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُ وَتُسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا
অর্থ: তোমরা সকাল-সন্ধ্যা তথা সারাক্ষণ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করো, তা’যীম-তাকরীম করো এবং গোলামী মুবারকের আঞ্জাম দাও। (পবিত্র সূরা ফাত্হ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯)
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
অর্থ: আমি জিন এবং ইনসান বা মানুষকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র ইবাদত করার জন্য। (পবিত্র সূরা যারিয়াত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
অর্থাৎ লিইয়া’রিফূন তথা মারিফত, মুহব্বত, নিছবত, কুরবত মুবারক হাছিল করার জন্য। আর এই মহাসম্মানিত মহাপবিত্র মারিফত, মুহব্বত, নিছবত, কুরবত মুবারক হাছিল করার একমাত্র উপায় ও মাধ্যম হচ্ছেন, মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক পালন করা। আর এ উদ্দেশ্যেই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রেরণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا لِيُطَاعَ بِإِذْنِ اللَّهِ
অর্থ: আর আমি মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে একমাত্র অনুসরণ অনুকরণ করার জন্যই প্রেরণ করেছি। (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৪)
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا
অর্থ: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাদের জন্য যা কিছু নিয়ে এসেছেন অথাৎ মহাসম্মানিত আদর্শ মুবারক তা তোমরা আকড়িয়ে ধরো, পালন করো। আর যা থেকে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকো। (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عن حضرت سعد بن هشام بن عامر رحمة الله عليهم قال أتيت حَضْرَتْ اُمَّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الثالثة عَائِشَةَ اَلصِّدِّيْقَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ فقلت يا أم المؤمنين أخبريني بخلق رسول الله صلى الله عليه و سلم قالت : كان خلقه القرآن أما تقرأ القرآن قول الله عز و جل {وإنك لعلي خلق عظيم} قلت فإني أريد أن أتبتل قالت لا تفعل أما تقرأ { لقد كان لكم في رسول الله أسوة حسنة فقد تزوج رسول الله صلى الله عليه و سلم وقد ولد له
অর্থ: হযরত সা’দ ইবনে হিশাম ইবনে আমের রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে আরয করলেন, (দয়া করে) মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবরক সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। তখন উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবরক হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ। আপনি কি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করেন না? (সেখানে) মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
وإنك لعلي خلق عظيم
অর্থ: নিশ্চয়ই আপনি সর্বোত্তম চরিত্র, আদর্শ মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! বর্ণনাকারী বলেন তখন আমি বললাম, আমার ইচ্ছা হয় যে; আমি দুনিয়া থেকে বিরাগ হয়ে যাই। তখন উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আপনি তা করবেন না। আপনি কি (মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র কালাম মুবারক) তিলাওয়াত করেন নাই?
لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
অর্থ: ‘নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝেই রয়েছেন তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ মুবারক। অতঃপর তিনি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নিসবতুল আযীম শরীফ করেছেন এবং উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! (সুনানে ইবনে মাযাহ শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ, মু’জামুল কাবীর, মু’জামুল আওসাত্ব, দালায়েলুন নুবুওওয়াত)
নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
صَلُّوْا كَمَا رَأَيْتُمُوْنِـىْ اُصَلِّىُ
অর্থ: তোমরা ঐভাবে নামায পড়ো, যেভাবে আমাকে নামায পড়তে দেখেছো। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
অর্থ: (আমার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলে দিন! যদি তোমরা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত মুবারক করতে চাও, তাহলে তোমরা আমাকে অনুসরণ করো। তাহলে মহান আল্লাহ পাক তোমাদেরকে মুহব্বত করবেন এবং তোমাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষশাশীল, দয়ালু। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১)
উল্লেখিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মাণ হয় যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক করা এবং উনাকে অনুসরণ-অনুকরণ করাই সকল ইবাদতের মূল লক্ষ এবং উদ্দেশ্য। যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা -ছিফত মুবারক দায়িমীভাবে করার সাথে সাথে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক মুহব্বতের সাথে, তা’যীম-তাকরীমের সাথে অনুসরণ-অনুকরণ করার তাওফীক্ব মুবারক দান করুন। আমীন!
-মুহম্মদ আবুল হাসান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেল
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘নাবীয’
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হিজামা বা শিঙ্গা লাগানো খাছ সুন্নত মুবারক (৩)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘মাশরুম’
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিজামা বা শিঙ্গা লাগানো খাছ সুন্নত মুবারক (২)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন- “সুন্নতী চামড়ার মোজা”
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হিজামা বা শিঙ্গা লাগানো খাছ সুন্নত মুবারক (২)
৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী চামড়ার মশক
৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৮)
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন দাঁত ও মুখ পরিষ্কার করার ‘সুন্নতী মিসওয়াক’
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী খাদ্য ও পানীয় ‘দুধ’
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)