মহাসম্মানিত সুন্নতি খাবার ‘মধু’ যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাংলাদেশে ১ লাখ মেট্রিক টন মধু উৎপাদন সম্ভব। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় সম্ভব।
, ১৩ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১০ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রায় প্রত্যেক ঋতুতে কোনো না কোনো ফুল ফোটে। আর এসব ফুল থেকে মধু আহরণের বিরাট সুযোগ রয়েছে। এ কারণে মৌ চাষের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী বাংলাদেশ। একটা সময় মধু আহরণ ছিল শুধুমাত্র সুন্দরবন কেন্দ্রিক। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে মধু উৎপাদন, ব্যবহার বেড়েছে বহুগুণে। এখন মধু চাষ হয় ব্যাপকভাবে। দেশে মধুর উৎপাদন ও বহুমাত্রিক ব্যবহার বেড়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে মধু এখন রফতানি পণ্য তালিকায় নাম লিখিয়েছে। দেশে বর্তমানে দুই প্রজাতির মৌমাছির দিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৌ-বাক্সে চাষ করা হয়।
মৌ-চাষ বিশেষজ্ঞ ও কৃষি গবেষকদের মতে, ফসলের মাঠে মৌমাছি বিচরণ করলে সেখানে বাড়তি পরাগায়ণের কারণে ফসলের উৎপাদন ৩০ শতাংশ বাড়বে। তার মানে মৌচাষের মাধ্যমে মধু আহরণে লাভ দুটি- ১. অর্থকরি খাত হিসেবে মধু আহরণে সমৃদ্ধি, ২. শস্য বা মধুভিত্তিক কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধি। সুন্দরবনের পাশাপাশি পেশাদার মৌ-চাষিরা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মৌসুমে সরিষা, ধনিয়া, তিল, কালিজিরা, লিচু এসব ফসলের জমিতে বা বাগানে মৌ বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করে। আধুনিক পদ্ধতিতে বাণিজ্যিকভাবে মৌ চাষ করে শত শত মেট্রিক টন মধু উৎপাদন করা হচ্ছে। এর ফলে মধু আহরিত শস্য যেমন সরিষা, তিল, কালিজিরা, লিচু ইত্যাদিও ফলনও বেড়েছে অনেক গুণ।
মৌচাষিরা বিভিন্ন ঋতুতে তাদের মৌবাক্স নিয়ে গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, শেরপুর, সাভার, দিনাজপুর, রাজশাহী, বরগুনা ও সুন্দরবনের সাতক্ষীরায় মধু সংগ্রহে চলে যান। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেখানে তারা অবস্থান করেন এবং মধু সংগ্রহ করে ফিরে আসেন। সংগ্রহকারীর কেউ কেউ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে মধু বিক্রি করেন। বড় খামারিরা সংগৃহীত মধু প্রসেসিং প্ল্যান্টে পরিশোধন করে বাজারজাত করেন। সরিষা, লিচু, তিল ও কালিজিরা ফুল থেকে সংগৃহীত মধু আলাদা আলাদাভাবে বাজারজাত করছেন ব্যবসায়ীরা। এমন বিভিন্ন ধরনের মধু উৎপাদন একমাত্র বাংলাদেশেই সম্ভব।
প্রসঙ্গত, দেশে মধু উৎপাদনে সরাসরি জড়িত প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। মৌ-চাষিসহ মধু শিল্পে জড়িত প্রায় ২ লাখ মানুষ। উৎপাদন প্রায় ৬ হাজার টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাবে, বাংলাদেশে ৬ লাখ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়। ২০ হাজার হেক্টর জমিতে কালিজিরা, ৪৮ হাজার হেক্টর জমিতে ধনিয়া, ২০ হাজার হেক্টর জমিতে তিল ও বিপুল পরিমাণ জমিতে লিচু উৎপাদিত হয়। এ পুরো সেক্টরটিকে মধু আহরণের আওতায় আনতে পারলে ফসলের উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি হবে বলে বিশেষজ্ঞগণের ধারণা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যতক্ষণ পর্যন্ত দেশের মৌ চাষিদের উন্নত প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা না করা হবে ততদিন পর্যন্ত দেশের মধুর সম্ভাবনা বিকশিত হবেনা। উদ্ভিদের পরাগায়নে মৌমাছির গুরুত্ব অপরিসীম। মৌমাছির মাধ্যমে বাক্স পদ্ধতিতে মধু চাষের কারণে কৃষিখাতে উৎপাদন ১০ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব বলে গবেষণায় জানানো হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে বাংলাদেশের কৃষকদের ধারণা স্পষ্ট নয়। তাই মধুভিত্তিক শস্য সরিষা, তিল, তিষি, লিচু ইত্যাদির কৃষিজ উৎপাদন বাড়াতে মৌ-চাষ এবং মৌ-চাষের উপকারিতা সম্পর্কে স্থানীয় কৃষি অফিস ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা জরুরি।
বলাবাহুল্য, বাংলাদেশের এমন কোনো খাত নেই যেখানে হাজার কোটি টাকার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে কোনো সরকারই বাংলাদেশের অর্থনীতিক সম্ভাবনাগুলো বিকশিত করার কোনোপ্রকার চেষ্টাই করেনি। বর্তমানে বিশ্ববাজারে মধুর ব্যাপক চাহিদা উন্মোচিত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন সুইট কোম্পানিগুলো মধু বিভিন্ন দেশ থেকে রফতানি করে নিয়ে যাচ্ছে। আর সে হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রায় সব দেশ থেকে মধুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উপযোগী ও সম্ভাবনাময়।
মৌ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৌচাষে উন্নতি প্রযুক্তির প্রয়োগ, চাষীদের প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে ঋণ এবং একই সাথে মৌচাষির সংখ্যা বাড়ালে বছরে ১ লাখ মেট্রিক টন মধু উৎপাদন করা সম্ভব। আর তা করতে পারলে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিপুল পরিমাণ মধু বিদেশে রফতানি করা সম্ভব। তবে বিদেশে আমাদের দেশের মধুর চাহিদা বাড়াতে হলে গুণগতমানের মধু উৎপাদনের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। মধু সংগ্রহে উন্নত ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি মধুর প্যাকেজিংয়ে আধুনিকতা আনতে হবে। উন্নত ও সুদৃশ্য মোড়ক দ্বারা মধুরপাত্র মনোলোভা ও আকর্ষণীয় করতে হবে। তাহলে সহজেই বাংলাদেশী মধু বিদেশী ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবে এবং বাংলাদেশ প্রতি বছর মধু রফতানি করে হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সমর্থ হবে। ইনশাআল্লাহ!
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অবশেষে কাশ্মীরীদের আলাদা মর্যাদা ৩৭০ ধরেও বাতিল করল মুসলিম বিদ্বেষী বিজেপি সরকার কাশ্মীর কি তবে আরেক ফিলিস্তিন হতে চলছে?
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাপবিত্র রওজা শরীফ ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফের পবিত্র ভূমি জাজিরাতুল আরবকে অপবিত্র করে দিন দিন পরিণত করা হচ্ছে অবাধ পাপাচারের পঙ্কিলরাজ্যে নাউযুবিল্লাহ! কা’বা শরীফের আদলে তৈরি মঞ্চে চলছে খোলামেলা পোশাকে ফ্যাশন শো, উদ্দাম কনসার্ট, বিক্রি হয়েছে ৩৬ লাখ কোটি টাকার ভারতীয় সিনেমার টিকিট; পালিত হচ্ছে হ্যালোইনও! নাউযুবিল্লাহ!
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অবশেষে কাশ্মীরীদের আলাদা মর্যাদা ৩৭০ ধরেও বাতিল করল মুসলিম বিদ্বেষী বিজেপি সরকার কাশ্মীর কি তবে আরেক ফিলিস্তিন হতে চলছে?
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অবশেষে কাশ্মীরীদের আলাদা মর্যাদা ৩৭০ ধরেও বাতিল করল মুসলিম বিদ্বেষী বিজেপি সরকার কাশ্মীর কি তবে আরেক ফিলিস্তিন হতে চলছে?
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ : কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধারণা ও ক্বিয়ামতের তথ্য
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি এবং উনার অনবদ্য তাজদীদ ‘আত-তাক্বউইমুশ শামসী’ সম্পর্কে জানা ও পালন করা এবং শুকরিয়া আদায় করা মুসলমানদের জন্য ফরয। মুসলমান আর কতকাল গাফিল ও জাহিল থাকবে?
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: ভয়ঙ্কর জেদ, মহা দাম্ভিকতা, চরম সীমালঙ্ঘন, প্রতিহিংসা, ক্ষমতা কুক্ষিগত করা ইত্যাদি কুরিপুর কারণে সরকারের পতন কিন্তু কুরিপুর সংজ্ঞা, প্রতিকার, পরিশুদ্ধির প্রক্রিয়ার বর্ণনা সংবিধানে তথা রাষ্ট্রীয় কোন কিতাবে নেই তাহলে রাষ্ট্রের সংস্কার হবে কীভাবে? নাগরিক সুরক্ষা হবে কেমনে?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভীনদেশী অ্যাপের ফাঁদে পড়ে বিপথে যাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম বাড়ছে নারীপাচার, দেশে বাড়ছে অশ্লীলতা ও পর্ণোগ্রাফির প্রচার কিশোর-কিশোরীদের টার্গেট করেই একটি মহল এসব অপসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে এসব অপসংস্কৃতি নির্মূলে দ্বীন ইসলামই একমাত্র সমাধান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচারণার বিপরীতে রপ্তানি আসলে কতটা চাঙা হবে প্রকৃত রপ্তানি আয় আসলে কত? ১০ বছরে রপ্তানি বেশি দেখানো হয়েছে ৬৫ বিলিয়ন ডলার পেছনে রয়েছে ক্ষমতাসীনদের উন্নয়নের রাজনীতির মিথ্যাবুলি, মহা সাগর চুরি আর অর্থপাচারের নিকৃষ্ট কাহিনী
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আলোকে- সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ উনাদের কতিপয় ফযীলত মুবারক বর্ণনা।
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
১লা জানুয়ারি ২০২৫ থেকে সুইজারল্যান্ডে মুখ ঢেকে রাখলেই প্রায় ১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা জরিমানা (নাউযুবিল্লাহ) বোরকা পড়াকে সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপীয় দেশ পর্দার আড়ালে নারীদের বন্দী, বৈষম্য এবং পিছিয়ে পড়ার অপবাদ দিলেও বাস্তবতা হচ্ছে গোটা ইউরোপ-আমেরিকায় নারীর প্রতি বৈষম্য হয়রানি, সহিংসতা, অত্যাচার আর ব্যভিচারের মাত্রা ভয়াবহ পশ্চিমাদের বোরকা নিষিদ্ধের প্রবনতা শুধুই ইসলাম আর মুসলিম বিদ্বেষ (পর্ব-১)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)