মহাসম্মানিত মহাপবিত্র খাছ সুন্নতী টুপি মুবারক
, ১৫ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২২ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০৪ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
টুপি ব্যবহার করা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক।
কেউ কেউ মাথায় টুপি পরিধান করাকে গুরুত্ব দেয় না, যার কারণে টুপি মাথায় না দিয়েই অর্থাৎ খালি মাথায় নামায আদায় করে। কিন্তু মাসয়ালা হচ্ছে, কেউ যদি ইচ্ছা করে বা বিনা কারণে টুপি ছাড়া নামায পড়ে, তাহলে তার নামায মাকরূহে তাহরীমী হবে। যদিও কেউ কেউ এতে ইখতেলাফ করেছেন, তবে হানাফী মাযহাব অনুযায়ী বিশুদ্ধ ফতওয়া হলো এঅবস্থায় নামায মাকরূহে তাহরীমী হবে। আর বিনা টুপিতে নামায পড়লে নামায মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার খিলাফ হবে। যদি কেউ মাসয়ালা বা সুন্নত না জানার কারণে টুপি ছাড়া নামায পড়ে তবে তার নামায হয়ে যাবে, কিন্তু উত্তম হলো টুপিসহ নামায আদায় করা। আর যদি কেউ তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার জন্য টুপি না পরে তাহলে তা কুফরী হবে। (ফতওয়ায়ে আলমগীরী, শামী, হাশিয়ায়ে তাহতাবী, দুররুল মুখতার, মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ ১১/৩২)
দেখা যায়, বিভিন্ন জন বিভিন্ন ধরণের টুপি পরিধান করে থাকে। আবার কেউ কেউ বলে থাকে, যে কোন একধরণের টুপি পরিধান করলেই হলো। নাউযুবিল্লাহ!
অথচ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সব ধরণের টুপি পরিধান করেননি। বরং তিনি যে মহাসম্মানিত টুপি মুবারক পরিধান মুবারক করেছেন, সে সম্পর্কে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عن حضرت ام المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام قالت كانَتْ لَهُ كمة البَيْضاءُ.
অর্থ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত টুপি মুবারক সাদা রংয়ের গোল ছিলেন। (আদদিময়াতী, মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া, শরহে মাওয়াহেব লি যুরকানী)
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে -
عن حضرت ابی کبشة رضى الله تعالى عنه قال كَانَ كِمَامُ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بُطْحًا.
অর্থ: হযরত আবু কাবশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের টুপি মুবারক ছিলেন গোল মাথার সাথে লেগে থাকত। (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরক্বাত শরীফ, ইত্যাদি)
পবিত্র হাদীছ শরীফ সমূহে كمة (কুম্মাতুন) এবং بطح শব্দদ্বয় উল্লেখ আছেন। كمة (কুম্মাতুন) এর আভিধনিক অর্থ হলো এমন গোল টুপি, যা মাথার সাথে লেগে থাকে। (আল-কামুস আল-মুহীত, লিসানুল আরব, মিছবাহুল লোগাত, আল-মুনজ্জিদ ইত্যাদি)
আর بطح শব্দের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত মুহাদ্দিছ, হযরত ইমাম মুল্লা আলী কারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিখ্যাত কিতাব, মিশকাত শরীফের বিখ্যাত শরাহ, মিরক্বাত শরীফের ৮ম খন্ডের ২৪৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন: بطح এমন গোল টুপি, যা মাথার সাথে উপর দিক থেকে মিলিত, মাথা হতে উঁচু বা ফাঁক ছিল না।
কাজেই যে টুপি গোল এবং মাথার সাথে চতুর্পার্শ্ব থেকে লেগে থাকে, উপরের দিকে উঁচু বা ফাঁকা থাকে না, সে টুপিই খাছ সুন্নতি টুপি মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
সুলত্বানুল হিন্দ গরীবে নেওয়াজ, হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চীশতি আজমেরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিখ্যাত কিতাব “আনিসুল আরওয়াহ” তে উল্লেখ করেছেন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে জান্নাত থেকে এনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে মহাসম্মানিত টুপি মুবারক পরিধান করতে দিয়েছিলেন, তা ছিলেন চার টুকরা বিশিষ্ট এবং গোল। সুবহানাল্লাহ!
অনুরূপ দলীলুল আরিফীন ও ইসরারুল আউলিয়া কিতাব সমূহেও উল্লেখ আছে।
সুতরাং মহাসম্মানিত খাছ সুন্নতী টুপি মুবারক হচ্ছেন, চার টুকরা বিশিষ্ট (উপরে এক টুকরা এবং চারদিকে তিন টুকরা দ্বারা বেষ্টিত) যা সাদা, সূতী এবং মাথার সাথে লেগে থাকে। এ ব্যাপারে মাসিক আল-বাইয়্যিনাত শরীফে বিস্তারিত ও অসংখ্য দলীল পেশ করা হয়েছে।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কখনই কিস্তি টুপি, চোক্কা বা উঁচু টুপি পরিধান করেন নি। এসব টুপি পরিধান করা জায়িয নেই। (ফতওয়ায়ে আলমগীরী)
খাছ সুন্নতী টুপি মুবারক পরিধানে ৬ টি মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক আদায় হয় ঃ-
১। সাদা। ২। সুতি। ৩। গোল। ৪। চার টুকরা বিশিষ্ট। ৫। মাথার সাথে লেগে থাকে। ৬। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পরিধাণ করেছেন।
১টি মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক =১০০ শহীদের ছওয়াব (মিশকাত শরীফ, ১/৩০)
সুতরাং, ৬ টি মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক = ৬০০ শহীদের ছওয়াব।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইতিহাসে নজিরবিহীন ভাবে মহাসম্মানিত সুন্নতী টুপি মুবারক সহ যাবতীয় সকল প্রকার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক কায়িনাতব্যাপী শিক্ষা দিচ্ছেন, প্রচার-প্রসার করে যাচ্ছেন।
কাজেই, আমাদের সকলের দায়িত্ব-কর্তব্য হলো সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ক্বদম মুবারকে এসে উনার মহাসম্মানিত নির্দেশনা মুবারক অনুযায়ী আমল করা, তবেই সর্বক্ষেত্রে কামিয়াবি হাছিল করা সহজ ও সম্ভব।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘আঙুর’
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সকল ধরণের সুন্নতী খাবার বরকতময় রোগমুক্ত শিফা দানকারী সুন্নতী খাদ্য “ভাত”
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী “টুপি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘ডুমুর’
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (১)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘তালবীনা’
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুন্নতী খাবার পরিচিতি ও উপকারিতা : দুধ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খেজুরের রস খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত (২)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)