মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাখন
, ০২ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১০ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ০৮ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মাখন দুধ থেকে তৈরী চর্বি জাতীয় খাবার। মাখন দেখতে হলুদ রঙের তবে এটির রঙ গাঢ় হলুদ থেকে সাদা রঙের হতে পারে। এর রঙ নির্ভর করে দুধের উপর এবং যে পশুর দুধ থেকে মাখন তৈরী করা হয়েছে ঐ পশুর খাদ্যাভ্যাসের উপর।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ابْنَىْ بُسْرٍ السُّلَمِيَّيْنِ رَضِيَ الله تَعَالَى عَنْهُمَا قَالَا دَخَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدَّمْنَا زُبْدًا وَتَمْرًا وَكَانَ يُحِبُّ الزُّبْدَ وَالتَّمْرَ.
অর্থ: “হযরত বুসর আস-সুলামী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার দুই পুত্র উনাদের সূত্রে বর্ণিত। উনারা উভয়ে বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদা আমাদের বাড়িতে মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে আমরা মাখন ও খেজুর পেশ করলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মাখন ও খেজুর খুব পছন্দ মুবারক করতেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাউদ শরীফ : কিতাবুত ত্বয়ামাহ্ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৩৮৩৭ )
মাখন প্রস্তুত প্রণালী :
উপকরণ: দুধের সর অথবা মালাই, পানি।
প্রণালী :
১. প্রতিদিনের দুধ থেকে মালাই বা দুধের সর আলাদা করে জমিয়ে রাখতে হবে। নরমাল ফ্রিজে এই মালাই ২-৩ দিন রাখা যায়, তবে ডীপ ফ্রিজে এটি ১০- ১৫ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। একটি ফুড প্রসেসর (এগ বিটার বা হ্যান্ড বিটার)-এর সাহায্যে মালাইগুলোর সাথে আধা কাপ পানি দিয়ে রেড করতে হবে। সাধারণভাবে একটি বড় বোলের এক বোল দুধের সর বা মালাইয়ের জন্য আধাকাপ পানি।
২. বিট/ ব্লেন্ড করার সময় দেখা যাবে ক্রিম ঘন হচ্ছে, ঘন হতে হতে ক্রমশ জমাট বাধতে শুরু করছে।
৩. যখন অনেক জমাট বেঁধে ঘন হয়ে যাবে তখন ২-৩ চামচ বরফ শীতল পানি যোগ করতে হবে। এতে সহজে জমাট বাঁধবে।
৪. এরপর আবার বিট/ব্লেন্ড করতে হবে। এক সময় দেখা যাবে আর ব্লেল্ড/বিট করা যাচ্ছে না এবং সকল ক্রিম জমাট বেঁধে গেছে এবং এক ধরনের সাদা পানি বের হচ্ছে। এটাই বাটার মিল্ক বা মাখন।
৫. এবার একটি পাত্রে মাখন ঢেলে নিয়ে হাত দিয়ে বল বের করে ফেলতে হবে।
৬. এবার ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করতে হবে।
মাখনের উপকারিতা :
১. খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, স্থূলতার সমস্যাটির সাথে দুগ্ধজাত খাদ্য গ্রহণের কোন সম্পর্ক নেই। মাখনে অ্যাক্টিভেটর এক্স নামক যৌগ থাকে যা দেহকে অত্যাবশ্যকীয় খনিজ উপাদান শোষণে সাহায্য করে। যখন শরীর খনিজ উপাদান গ্রহণ করে তখন তা ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। মাখনে আয়োডিন, সেলেনিয়াম, লেসিথিন এবং লরিক এসিডের মত কার্যকরী খনিজ উপাদান থাকে।
২. ভিটামিন সমৃদ্ধ: মাখনে প্রয়োজনীয় ভিটামিন থাকে মাখন ভিটামিন সমৃদ্ধ। এতে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি ও ভিটামিন ই থাকে যা ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে। আশ্চর্যজনকভাবে মাখনে অনন্য ভিটামিন-কে থাকে যা চর্বিকে দ্রবণীয় করতে পারে। কে ২ ভিটামিন প্রোষ্টেট ক্যান্সার, হাড় ভাঙ্গা এবং করোনারি হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি কমায়। মাখন খেলে নারীর উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
৩. লিনোলেইক এসিড থাকে: মাখনে লিনোলেইক এসিড নামক যৌগ থাকে। এটি শরীরের বিপাকের উপর প্রভাব বিস্তার করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৪. স্বাস্থ্যকর স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে: বেশিরভাগ মানুষ মনে করে যে সব ধরনের সম্পৃক্ত চর্বি (স্যাচুরেটেড ফ্যাট) ক্ষতিকর ।
কিন্তু অনেক গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, এদের মধ্যে কিছু আছে শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয়ই না বরং অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। এই স্বাস্থ্যকর সম্পৃক্ত চর্বিগুলো ভালো কোলেষ্টেরল-এর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৫. জয়েন্টের সমস্যা দূর করে: মাখন জয়েন্টের শক্ত হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে, সেই সাথে আরথ্রাইটিসও প্রতিরোধ করে। এছাড়াও এই উপাদানটি ক্যালসিয়ামকে জয়েন্টের চেয়ে হাড়ে জমা হতে সাহায্য করে।
৬. বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ: মাখনে উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন থাকে যা চোখের জন্য ভালো। এটি চোখের সুরক্ষায় অবদান রাখে। এছাড়াও কোষের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে, ছানির গতিরোধ করে, চোখের রেটিনার কোষ নষ্ট হয়ে যাওয়া বা মেকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সুযোগ কমায় এবং চোখের অন্যান্য সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
মাখন সংরক্ষণ: মাখন বছরের প্রায় সব সময়েই ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হয়।
মাখনের ব্যবহার: মাখন সাধারণত কোন খাবারে মেখে খাওয়া হয়। এছাড়া রান্না করতে যেমন, কিছু ভাজতে, সস তৈরিতে অথবা খাবারে বিশেষ সুঘ্রাণ আনতে মাখন ব্যবহৃত হয়।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘কিস্সা’
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)