মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার কদু খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক
, ২০শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৪ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ২৯শে মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার কদু খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক। এ প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّ خَيَّاطًا دَعَا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِطَعَامٍ صَنَعَهٗ فَذَهَبْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَرَّبَ خُبْزَ شَعِيْرٍ وَمَرَقًا فِيْهِ دُبَّاءٌ وَقَدِيْدٌ رَاَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَتَبَّعُ الدُّبَّاءَ مِنْ حَوَالَيِ القَصْعَةِ فَلَمْ اَزَلْ اُحِبُّ الدُّبَّاءَ بَعْدَ يَوْمِئِذٍ.
অর্থ: হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক একজন দর্জি হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কিছু খাবার প্রস্তুত করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত দাওয়াত মুবারক করলেন। আমিও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সেখানে গেলাম। সেই হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি যবের রুটি আর কিছু শুরুয়া যাতে কদু ও শুকনা গোশত ছিল তিনি তা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে পরিবেশন করলেন। আমি দেখলাম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পেয়ালার চতুর্দিক থেকে সম্মানিত কদু বেছে বেছে মহাসম্মানিত আহার মুবারক করছেন। সুবহানাল্লাহ! সে দিনের পর থেকে আমিও সম্মানিত কদু খাওয়া পছন্দ করতে লাগলাম। সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কদু পছন্দ মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَتٰى مَوْلًى لَهٗ خَيَّاطًا فَاُتِيَ بِدُبَّاءٍ فَجَعَلَ يَأْكُلُهٗ فَلَمْ اَزَلْ اُحِبُّهٗ مُنْذُ رَاَيْتُ رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْكُلُهٗ.
অর্থ: হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার একজন দর্জি হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বাড়ীতে মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (তিনি মহাসম্মানিত আহার মুবারক করা অবস্থায়) উনার সামনে কদু উপস্থিত করা হলে তিনি (বেছে বেছে) কদু মহাসম্মানিত আহার মুবারক করতে লাগলেন। সে দিন থেকে আমিও কদু খেতে পছন্দ করি, যেদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত কদু মহাসম্মানিত আহার মুবারক করতে দেখি। সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ)
উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কদু খাওয়া পছন্দ মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! তাই মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদু খাওয়া আমাদেরকেও পছন্দ করতে হবে।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদু খেতে অত্যন্ত পছন্দ মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! তাই মহাসম্মানিত কদু খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক। আর এই কারণে মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদু অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর একটি সবজি। মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদু আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় তরকারি বা সবজি। মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদু এর পাতা ও ডগা শাক হিসেবে এবং কদু তরকারি ও ভাজি হিসেবে খাওয়া যায়। শুরুয়া, নিরামিষ, ভাজি কিংবা সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায় এই সম্মানিত তরকারি।
প্রতিটি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার গুরুত্ব, মর্যাদা আসীম। মানুষের বোঝার জন্য মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদুর কিছু উপকারিতা নিচে দেওয়া হলো:
হিট স্ট্রোকের ঝুকি কমে ঃ-
যেহেতু মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদুর মূল উপাদান হলো পানি তাই মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদু খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। যারা নিয়মিত সূর্যের আলোতে কাজ করে অথবা দীর্ঘক্ষন ধরে রোদে কাজ করার পর সুন্নতী খাবার কদুর তরকারী খেলে শরীর বেশ ঠান্ডা হয় এবং শরীরের ভেতরের অস্বস্তি লাগা কমে। গরমের কারণে আমাদের শরীর থেকে যে পানি বের হয়ে যায় সুন্নতী খাবার কদু সেটার অনেকটাই পূরণ করে ফেলে। ফলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে যায়। সুবহানাল্লাহ!
হজমে সাহায্য করে ঃ-
মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদুতে প্রচুর পবিমাণে দ্রবণীয় এবং অদ্রবনীয় ফাইবার আছে। দ্রবণীয় ফাইবার খাবার সহজে হজম করতে সাহায্য করে এবং হজম সংক্রান্ত সকল সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে। এছাড়াও নিয়মিত সুন্নতী খাবার কদু খেলে অ্যাসিডিটি ও কোষ্ঠোকাঠিন্য সমস্যার সমাধান করে। অদ্রবণীয় ফাইবার পাইলসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। সুবহানাল্লাহ!
ত্বক ভালো করে ঃ
মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদুতে আছে প্রাকৃতিক প্রোটিন ও ভিটামিন। তাই নিয়মিত সুন্নতী খাবার কদু খাওয়ার অভ্যাস থাকলে ত্বক ভেতর থেকে ভালো হয়। এছাড়াও যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের ত্বকের তৈলাক্ততার সমস্যা অনেকটাই কমে যায় সুন্নতী খাবার কদু খেলে। এছাড়াও সুন্নতী খাবার কদু কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পেট পরিস্কার রাখে। ফলে মুখে ব্রণ ওঠার প্রবণতাও কমে যায় অনেকটাই। সুবহানাল্লাহ!
ইস্তেঞ্জার জ্বালা পোড়া কমায় ঃ-
মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদুতে প্রচুর পরিমাণে পানি আছে। তাই যাদের প্রসাবে জ্বালা পোড়ার সমস্যা আছে কিংবা প্রসাব হলদে হয় তাদের নিয়মিত সুন্নতী খাবার কদু খাওয়া উচিত। নিয়মিত সুন্নতী খাবার কদু খেলে এধরনের সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদুর আরো অনেক উপকারিতা আছে। যা বলে শেষ হবে না। সুবহানাল্লাহ!
মূল কথা হলো, কদু খাওয়া হচ্ছে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক। আর সুন্নত মুবারক পালন করলে সমস্ত রোগ-ব্যাধি হতে মুক্ত থাকা যায়। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই যিনি খলিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের সকলকে মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার কদ্ ুএর উপকার বুঝে এবং সুন্নতী খাবার কদু খেয়ে, পছন্দ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক পালন করার তাওফীক্ব দান করেন। আমীন!
-মুহম্মদ আবরার হুসাইন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঠান্ডা ও মিঠা পানি পান করা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ফল খাওয়া মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক (২)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাঁটি মধুসহ সকল সুন্নতী সামগ্রী
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)