মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (৯)
, ০২ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৮ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ২১ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) আইন ও জিহাদ
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে প্রবেশ:
‘মাররুয যাহরান’ নামক স্থানেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত সৈন্যবাহিনীকে অত্যন্ত সুবিন্যস্তভাবে সাজান। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার উচ্চভূমি দিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে প্রবেশ করেন এবং হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার নিম্নভূমি দিয়ে প্রবেশ করার জন্য নির্দেশ মুবারক প্রদান করেন। হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ প্রবেশকালে কুরাইশদের কিছু উসৃঙ্খল যুবকদের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হন এবং তারা আগবাড়িয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের উপর আক্রমণ করে। এ সময় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্য থেকে ২ অশ্বারোহী উনারা শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা কুরাইশদের এই উসৃঙ্খল যুবকদেরকে প্রতিহত করার জন্য পাল্টা আক্রমণ করেন। তখন তাদের ১২ জন নিহত হয়। প্রকৃতপক্ষে এটা মূল যুদ্ধ বা যুদ্ধের কোনো অংশও ছিলো না, কারণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে নিরাপত্তার বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘোষণা মুবারক দিয়েছেন- ‘যে ব্যক্তি সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সুফিয়ান আলাইহিস সালাম উনার বাড়িতে প্রবেশ করবে, সে ব্যক্তি নিরাপত্তা লাভ করবে। যে ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করবে, সে ব্যক্তি নিরাপত্তা লাভ করবে। যে ব্যক্তি নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করবে, সে ব্যক্তি নিরাপত্তা লাভ করবে। যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে হারাম শরীফ অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার মধ্যে আশ্রয় নিবে, সে ব্যক্তিও নিরাপত্তা লাভ করবে। ’ সুবহানাল্লাহ! সেই নিরাপত্তা মুবারক উনার বিষয়টি কুরাইশদের সরদার সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সুফিয়ান আলাইহিস সালাম তিনিসহ কুরাইশ নেতারা গ্রহণ করার মাধ্যমে সমস্ত কুরাইশদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। আর কুরাইশদের কিছু উসৃঙ্খল যুবকদের দ্বারা যেই ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, সেটা সামান্য সংখ্যক উসৃঙ্খল যুবকদের উসৃঙ্খলতা মাত্র। প্রকৃতপক্ষে এটা মূল যুদ্ধ বা যুদ্ধের কোনো অংশও ছিলো না। এইভাবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে প্রবেশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে প্রবেশ করার সময় বিশেষ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় করলেন, প্রবেশ করলেন, তখন
وَاجْعَلْ لِّـىْ مِنْ لَّدُنْكَ سُلْطَانًا نَّصِيْرًا
অর্থ: “আর আপনি আমাকে আপনার তরফ থেকে ‘সুলত্বানুন নাছীর’ হাদিয়া মুবারক করুন। ” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা বানী ইসরাঈল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮০)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ তিলাওয়াত মুবারক করতেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
‘সুলত্বানুন নাছীর’ লক্বব মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ লক্বব মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
বিনা রক্তপাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় এবং সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা:
মহান আল্লাহ পাক উনার গায়েবী মদদে এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মু’জিযা শরীফ উনার মাধ্যমে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা বিনা রক্তপাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার লোকজন যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার পাশে সমবেত হয়ে তাদের সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফায়ছালা মুবারক উনার জন্য অপেক্ষা করছিলো, তখন তিনি তাদেরকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন- ‘তোমরা আমার সম্পর্কে কিরূপ ধারণা পোষণ করো, আমি তোমাদের সাথে কেমন আচরণ মুবারক করবো? উত্তরে তারা বললো, ‘উত্তম ধারণা পোষণ করি, আপনি আমাদের সাথে ভালো আচরণ মুবারক করবেন। ’ তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘোষণা মুবারক করেন- ‘আজ তোমাদের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই; তোমরা সবাই মুক্ত স্বাধীন। ’ অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ শহরবাসীদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
আর সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারিখ মুবারক ছিলেন- ৮ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৭ই রমাদ্বান শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
-মুহম্মদ ইবনে ছিদ্দীকুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)