মহাসম্মানিত ঐতিহাসিক গাযওয়াতুল হুদায়বিয়াহ বা হুদায়বিয়ার জিহাদ (৬)
, ০৯ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৪ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৮ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) আইন ও জিহাদ
হযরত বুদাইল বিন ওয়ারাক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মধ্যস্থতা:
সেই ঝর্ণার নিকট থেকে ফিরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন একটু বিশ্রাম মুবারক গ্রহন করলেন তখন হযরত বুদাইল বিন ওয়ারাক্বা খুযায়ী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আপন খুযাআহ গোত্রের কয়েকজন লোকসহ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে উপস্থিত হলেন। তুহামার অধিবাসীগণের মধ্যে এ গোত্রই (খুযাআহ) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শুভাকাঙ্খী ছিলেন। হযরত বুদাইল বিন ওয়ারাক্বা খুযায়ী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ‘আমি কা’ব বিন লুওয়াইকে দেখে এসেছি যে, সে হুদায়বিয়াহ’র পর্যাপ্ত পানির আশ্রয়ের উপর শিবির স্থাপন করেছে। তাদের সঙ্গে শিশু এবং মহিলাগণও রয়েছে। আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করা এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ঘর মুবারক হতে আপনাদের নিবৃত্ত রাখার ব্যাপারে তারা বদ্ধপরিকর।’
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন-
إِنَّا لَمْ نَجِئ لِقِتَالِ أَحَدٍ، وَلٰكِنَّا جِئْنَا مُعْتَمِرِيْنَ، وَإِنَّ قُرَيْشاً قَدْ نَهَكَتْهُمُ الْحَرْبُ وَأَضَرَّتْ بِهِمْ، فَإِنْ شَاءُوْا مَادَدْتُّهُمْ، وَيَخْلُوْا بَيْنِيْ وَبَيْنَ النَّاسِ، وَإِنْ شَاءُوْا أَنْ يَّدْخُلُوْا فِيْمَا دَخَلَ فِيْهِ النَّاسُ فَعَلُوْا، وِإِلَّا فَقَدْ جَمُّوْا ، وَإِنْ هُمْ أَبَوْا إِلَّا الْقِتَالَ فَوَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَأُقَاتِلَنَّهُمْ عَلٰى أَمْرِيْ هٰذَا حَتّٰى تَنْفَرِدَ سَالفتي، أَوْ لَيَنْفِذَنَّ اللهُ أَمْرَهُ
‘কারো সঙ্গে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে আমরা এখানে আগমন করিনি। অতীতের যুদ্ধসমূহ কুরাইশগণকে সম্পূর্ণরূপে পর্যদুস্ত ও তছ্নছ্ করে ফেলেছে। এতে তাদের ক্ষতিও হয়েছে অসামান্য। তাই যদি তারা চায় তাহলে আমি তাদের সঙ্গে একটি সময় নির্ধারণ করব যে সময় তারা আমার ও বিপক্ষীয় লোকজনের পথ থেকে সরে দাঁড়াবে। এতে বড় আকারের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হবে। অন্যথায় যদি তারা যুদ্ধ চায় তাহলে তাদের ঔদ্ধত্যজনিত কৃতকার্যের শাস্তি অবশ্যই ভোগ করতে হবে।
আর যুদ্ধই যদি তাদের একমাত্র কাম্য হয়ে থাকে, তবে সেই মহান সত্তার কসম! যাঁর কুদরতী হাত মুবারকে আমার (নূরুল আমর মুবারক) প্রাণ মুবারক রয়েছে, আমি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ব্যাপারে তাদের সঙ্গে ঐ সময় পর্যন্ত যুদ্ধ করে যাব যতক্ষণ পর্যন্ত আমার সম্মানিত জিসিম মুবারকে প্রাণ মুবারক থাকে, কিংবা যতক্ষণ মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় দ্বীন ইসলাম উনার ব্যাপারে একটা চূড়ান্ত ফায়সালা করে না দেন।
হযরত বুদাইল বিন ওয়ারাক্বা খুযায়ী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ‘আপনি যা বললেন আমি তা কুরাইশগণকে অবহিত করবো।’
অতঃপর তিনি কুরাইশগণের নিকট গিয়ে বললেন, ‘আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সাক্ষাত মুবারক করে এসেছি। আমি উনার নিকট একটা কথা শুনেছি, যদি তোমরা চাও তাহলে আমি তোমাদের নিকট তা উপস্থাপন করবো।’
এ কথার প্রেক্ষিতে নির্বোধ এবং স্বল্প বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা বলল, ‘আমাদের এমন কোন প্রয়োজন নেই যে, আপনি কোন কথা আমাদের নিকট বর্ণনা করেন।’
কিন্তু যারা বুদ্ধিমান ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন ছিল তারা বলল, ‘আপনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে কী শুনেছেন তা আমাদেরকে বলুন।’
হযরত বুদাইল বিন ওয়ারাক্বা খুযায়ী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে যে সকল কথা মুবারক শুনেছিলেন তাদের নিকট তা বর্ণনা করলেন। এ প্রেক্ষিতে কুরাইশরা মিকরায বিন হাফ্স্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট প্রেরণ করল। তাকে দেখে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, ‘এ ব্যক্তি অঙ্গীকার ভঙ্গকারী।’
কিন্তু যখন সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট অগ্রসর হয়ে আলাপ আলোচনা করল তখন তিনি তাকে সেই সব কথাই বললেন যা হযরত বুদাইল বিন ওয়ারাক্বা খুযায়ী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং উনার সঙ্গীসাথীদের নিকট বলেছিলেন। অতঃপর সে মক্কা শরীফে ফিরে এসে কুরাইশগণকে তার আলাপ আলোচনার বিষয়াদি অবহিত করলো। (চলবে)
-মুহম্মদ নাজমুল হুদা ফরাজী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত জিহাদের ময়দানে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বীরত্ব মুবারক (২)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬৩)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত জিহাদ মুসলমানদের একটি বিশেষ ফরয ইবাদত
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬২)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত জিহাদ উনার ময়দানে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমগণ একজন অপরজনকে প্রাধান্য দেয়ার বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৯)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)