মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের- সন্তুষ্টি-রেযামন্দি লাভের জন্য সন্তান প্রতিপালন করা সুন্নত
, ১৩ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২২ মে, ২০২৪ খ্রি:, ০৮ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
জনৈক বুযুর্গ ব্যক্তি তিনি বলেছেন, ক্বিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তি সর্বাধিক বেশি আযাবে গ্রেফতার হবে, যার পরিবার-পরিজন সম্মানিত দ্বীনি ইলিম সম্পর্কে মূর্খ ও উদাসীন হবে। (তাফসীরে রূহুল মায়ানী)
কাজেই, সন্তানকে সেই দ্বীনি শিক্ষা শিশুকাল থেকেই দেয়া শুরু করতে হবে। যখন সন্তান, হাঁটা-চলা করবে, কথা-বার্তা বলতে শুরু করবে তখন থেকেই তাদেরকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা-কোশেশ করতে হবে। অন্যথায় পরিণত বয়সে মাতা-পিতাকে তার চরম মূল্য দিতে হবে। কারণ বয়স বেশি হলে শত চেষ্টা-কোশেশ করেও কোন ফল হয় না।
অনেক পিতা-মাতা একটি ভুল ধারণা লালন করে যা শয়তানের ওয়াসওয়াসা। তাহলো- সন্তান এখনো ছোট। এখনো বুঝ হয়নি। বড় হলে, বুঝ হলে সব ঠিক হয়ে যাবে। তখন তারা বুঝবে ইতাদি। যার ফলে দেখা যায় শিশুকালে ইহুদী, নাছারা, মজুসী, মুশরিক, বেদ্বীন, বদদ্বীনদের রীতি-নীতি, তর্জ-তরীক্বা অনুযায়ী চলে। লিবাস-পোষাকে, আচার আচরণে ও তাদেরই অনুসরণ করাতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে। নাউযুবিল্লাহ! যারফলে পরিণত বয়সে তাদেরই তলপীবাহী, কেনা গোলামে পরিণত হয়। নাউযুবিল্লাহ! তাদের এই পরিণতির জন্য তাদের পিতা-মাতাই সর্বাংশে দায়ী। সেই সন্তানরাই কিয়ামতের দিন পিতা-মাতার বুকে কপালে পা দিয়ে জাহান্নামে চলে যাবে। ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا رَبَّنَا أَرِنَا اللَّذَيْنِ أَضَلَّانَا مِنَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ نَجْعَلْهُمَا تَحْتَ أَقْدَامِنَا لِيَكُونَا مِنَ الْأَسْفَلِينَ
অর্থ: আর কাফিরেরা বলবে, “হে আমাদের রব মহান আল্লাহ পাক! আমাদেরকে সেই সকল জিন ও ইনসানকে দেখিয়ে দিন যারা আমাদেরকে গোমরা বা বিভ্রান্ত করেছে। আমরা তাদেরকে পা দ্বারা দলিত করবো যাতে তারা কঠিনভাবে লাঞ্ছিত-অপদস্ত হয়। (পবিত্র সূরা হামীম সিজদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)
অন্যত্র আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَقَالُوا رَبَّنَا إِنَّا أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَاءَنَا فَأَضَلُّونَا السَّبِيلَا. رَبَّنَا آتِهِمْ ضِعْفَيْنِ مِنَ الْعَذَابِ وَالْعَنْهُمْ لَعْنًا كَبِيرًا
অর্থ: তারা ইহাও বলবে, হে আমাদের রব মহান আল্লাহ পাক! আমরা আমাদের নেতৃবৃন্দ ও মুরুব্বীদের কথামত চলেছি, তারাই আমাদের গোমরাহ বা বিভ্রান্তির কারণ। হে আমাদের রব মহান আল্লাহ পাক! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দান করুন। আর কঠিন লা’নতবর্ষন করুন। (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৭, ৬৮)
কাজেই, সন্তান-সন্ততিকে মিশুকাল থেকেই হাক্বীক্বী ঈমানদার, হাক্বীক্বী মুসলমান হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে। যখন তারা কথা বলার বয়সে উপনীত হবে তখন তাদেরকে সর্বপ্রথম “মহান আল্লাহ পাক” “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” অতঃপর পবিত্র কালিমা তাইয়্যিবা শরীফ শিক্ষা দিতে হবে। আর যখন পড়া-লেখা করার বয়সে পৌঁছবে তখন সর্বপ্রথম পবিত্র কুরআন শরীফ শিক্ষা দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! তারপর পূর্ণাঙ্গ ইলমে দ্বীন শিক্ষা দিয়ে দ্বীনদার, আল্লাহওয়ালারূপে গড়ে তুলতে হবে। অনেক বাবা-মা আছেন যারা সন্তানদেরকে দ্বীনি ইলমের পরিবর্তে দুনিয়াবী জ্ঞান দেয়ার কোশেশে মনোযোগী হয়। এসকল বাবা-মা তাদের ধ্বংসের পথে পরিচালিত করলো। নাউযুবিল্লাহ!
কাজেই, মাতা-পিতাকে নিম্ন লিখিত বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ রাখা জরুরী-
শিশু বয়সের আদব-আখলাক্বই সারা জীবনের পাথেয় হয়ে থাকে। এজন্য ছোট বেলা থেকেই সন্তানদেরকে সৎস্বভাব ও উত্তম আখলাক্ব শিক্ষাদানে প্রত্যেক বাবা-মায়ের লক্ষ্য রাখা খুবই জরুরী।
শিশু সন্তানদেরকে সৎচরিত্রবান, পরহেযগার, দ্বীনদার মহিলার দুধ পান করানো উচিত। কারণ সেই দুধের তা’ছীর চরিত্রের উপর প্রভাব পড়ে থাকে।
সন্তানদেরকে ভয়াবহ কোন জিনিসের ভয় দেখাবে না। কারণ এতে সন্তানদের মন-মনন দুর্বল হয়। তারা কাপুরুষ বা ভীরু প্রকৃতি ও সাহসহারা হয়ে যায়। সাহসহীন, ভীরু প্রকৃতির লোক জীবনে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে না।
সন্তানদের দুধপান করানো ও খাওয়ার সময় নির্দিষ্ট করে নেয়া উচিত। কেননা নিয়ম বহির্ভূত আহার স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। খাবারের প্রতি অনীহা পয়দা হয়। রুচি নষ্ট হয়ে যায়।
সন্তানদেরকে সবসময় পাক-পবিত্র, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আবশ্যক। এতে তাদের স্বাস্থ্য ভাল থাকে।
-আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
শুকনা গোশ্ত খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন এলকোহলমুক্ত বিশুদ্ধ সুগন্ধি সুন্নতী আতর
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মানুষ মেথির উপকারিতা জানলে প্রয়োজনে স্বর্ণ দিয়ে ওজন করে ক্রয় করতো
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী ফল “আঙ্গুর”
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বেমেছাল উপকারিতা সমৃদ্ধ মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার “কিছ্ছা”
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সকল ধরণের সুন্নতী খাবার
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কিয়ামত পর্যন্ত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধন হবে না
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী “টুপি
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহান আল্লাহ পাক ও উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত মুহব্বত মুবারক হাছিল করতে হলে অবশ্যই মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা করতে হবে
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘ডুমুর’
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র নামায উনার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারকসমূহ
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)