মশা দিয়েই মশার বংশবৃদ্ধি ঠেকানোর উদ্যোগ
, ০৭ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২০ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০৫ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পাঁচ মিশালী
মশা মারতে কামান দাগা’-র কথা আমরা শুনেছি। কিন্তু ‘বিষে বিষক্ষয়’-এর মতো মশা কাজে লাগিয়ে মশা মারা গেলে কেমন হয়? সুইজারল্যান্ডে এক প্রকল্পে ঠিক সেই চেষ্টাই চালানো হচ্ছে।
একটি ল্যাবে এশিয়ান টাইগার প্রজাতির মশার সম্ভার দেখার মতো। লার্ভা থেকে শুরু করে পরিণত বয়সের মশার কোনো অভাব নেই। ইউরোপের অন্য কোনো মানুষের বোধ হয় গবেষকদের মতো টাইগার মশার আচরণ সম্পর্কে এত গভীর জ্ঞান নেই।
বহু বছরের প্রস্তুতির পর গবেষকরা এবার অসাধারণ এক পরীক্ষা শুরু করেছে। তারা একেবারে নতুন পদ্ধতিতে এই মশার দ্রুত বংশবৃদ্ধির মোকাবিলা করতে চায়। নির্বীজ নর মশা ছেড়ে সেই লক্ষ্য পূরণের কৌশল নিচ্ছে।
সুইজারল্যান্ডের দক্ষিণে ছবির মতো দেখতে গ্রাম মরকোটে-তে গবেষকরা চলতি বছর ২০ লাখ এশিয়ান টাইগার প্রজাতির মশা ছাড়ছে।
মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে তারা ছোট এই গ্রামের প্রায় ৭০টি বিভিন্ন জায়গায় প্রতি সপ্তাহে কিছু মশা ছাড়ছে। তবে লাখ লাখ মশা ছাড়া হলেও গ্রামের বাসিন্দাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। গবেষকদের বক্তব্য হচ্ছে, “দুশ্চিন্তার কারণ নেই। এগুলি নর মশা, যা মানুষকে কামড়ায় না। শুধু উড়ে বেড়ায়। কয়েকদিন পরেই মরে যায়।”
নর মশার এত কম আয়ুর কারণ স্পষ্ট। নির্বীজ করার প্রক্রিয়া, ল্যাবের ধকল ও পরিবহণের কারণে সেগুলি বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে আয়ু কম হওয়া সত্ত্বেও মাদী মশার কাছে সেগুলি আকর্ষণীয়। নর মশাকেও প্রতিযোগিতায় পাল্লা দিতে হয়। নির্বীজ নর মশার বিশাল সংখ্যার কারণে মাদি মশাগুলি তাদের এড়িয়েও চলতে পারে না। স্টেরিলাইজড নর মশা মাঠে চরে বেড়ানো স্বাভাবিক মাদী মশার সঙ্গে মিলিত হয়। মিলন ঘটলে মাদী মশা সারা জীবন আর সন্তান ধারণ করতে পারে না।
এভাবে শেষ পর্যন্ত টাইগার মশার গোষ্ঠীর বিনাশ ঘটানো যেতে পারে। পরীক্ষামূলক এলাকায় টাইগার মশার সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমানোই মূল লক্ষ্য।
ইটালির বোলোনিয়া শহরে কৃষি ও পরিবেশ কেন্দ্রে স্টেরাইল নর মশার প্রজনন ঘটানো হয়। ডিম পাড়ার সময়েই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়। খাঁচার মধ্যে মশার মিলন ঘটে। মাদী মশাকে নিয়মিত পশুর রক্ত খাওয়ানো হয়। কারণ রক্ত না চুষে খেলে সেগুলি ডিম তৈরি করতে পারে না।
সেই ডিম এক সপ্তাহের মধ্যেই লার্ভায় পরিণত হয়, তারপর পিউপা বা গুটিপোকার রূপ নেয়। এই স্তরেই তথাকথিত ‘ডাইমেনশন অ্যানালিসিস’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নর ও মাদী আলাদা করা হয়। নর মশা মাদী মশার তুলনায় আকারে ছোট। ফলে শুধু চেহারার ভিত্তিতেই সেগুলিকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আলাদা করা যায়। পিউপাগুলিকে পানির মধ্যে ফেলে এক্সরে করা হয়।
ফলে প্রজনন অঙ্গগুলি সবচেয়ে সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া দেখায়। এভাবে নর মশা নির্বীজ হয়ে পড়ে, তবে প্রাণে বেঁচে যায়। এই প্রক্রিয়া অবশ্য এখনো খুবই ব্যয়বহুল। এক হাজার স্টেরিলাইজড মশার দাম প্রায় ৬০ ইউরোর মতো। ফলে চলতি বছরের এক্সপেরিমেন্টের জন্য প্রায় দুই লাখ ইউরো ব্যয় হচ্ছে।
তবে পরীক্ষা সফল হলে এবং আরো বড় আকারে এই প্রক্রিয়ার প্রয়োগ শুরু হলে ব্যয় এক ধাক্কায় অনেকটা কমে যাবে।
এই প্রক্রিয়া সফল হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে প্রকল্পটি আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। বিশেষ করে যে সব দেশে টাইগার প্রজাতির মশা মানুষের জীবন বিপন্ন করছে, সেখানে এই প্রক্রিয়া কাজে লাগবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
শিশু ফোন ব্যবহার করছে, কি হবে জেনে নিন
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পৃথিবীর কাছে আসছে ‘দ্বিতীয় চাঁদ’, দাবি করেছে বিজ্ঞানীরা
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
স্বর্ণের হিসাব নিকাশ করার নিয়ম এবং খাটি স্বর্ণ চিহ্নিত করার উপায়
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ লিথিয়ামের দখল নিতে জোর দিচ্ছে চীন
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিস গণনা করে রডের ওজন বের করার নিয়ম
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
২০৪৬ সালে পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাবে নতুন গ্রহাণু
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আঙুর ভেবে মনাক্কা খাচ্ছেন না তো?
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অন্য গ্রহে ঝলসে উঠল বিদ্যুতের আলো, দেখে ফেলল নাসার যান!
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
শরীরের গন্ধ চিনে কামড়ায় মশা
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আমড়া খেলে মিলবে যে ১০ উপকার
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাংলার মুসলিম স্থাপত্যের স্বরূপ সন্ধান
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কেমন দেশ গাম্বিয়া?
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)