ভারতে মুসলিম নির্যাতনের রক্তাক্ত ইতিহাস, যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান
, ১২ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৮ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১৫ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) আপনাদের মতামত
বর্তমানে বাংলাদেশের একদল চিহ্নিত বুদ্ধিজীবী ও দালাল মিডিয়ার ট্রাম্পকার্ড হলো ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’। যদিও আওয়ামী মদদে প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে সংখ্যালঘুদের প্রাধান্য, তারপরও বাংলাদেশে নাকি হচ্ছে ব্যাপক সংখ্যালঘু নির্যাতন! পাঠকগণ আসুন দেখি, এসব ভারতে যেভাবে মুসলমান নির্যাতন (সংখ্যালঘু নয়?) হয়ে থাকে তার কিছু নমুনা:
ভারতের মীরাট শহরে বারবার দেখা গিয়েছে রক্তাক্ত দাঙ্গার দৃশ্য। ১৯৩৮-এ দাঙ্গা, ১৯৪৬-এ দাঙ্গা, ১৯৪৯-এ দাঙ্গা, ৬২, ৬৮, ৭৩, ৮২, ৮৭ এবং ৯০’তেও দেখা গিয়েছে মুসলমানদের উপর আপতিত হত্যা-লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের পৈশাচিক হিন্দুত্ববাদী তা-ব। ভারতের বাইরে রপ্তানি করার মতো শিল্পসামগ্রী উৎপাদিত হয় মীরাটে। সেই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল অবদান মুসলমানদের, চল্লিশ হাজার বিদ্যুৎচালিত তাঁতের অধিকাংশের মালিক মুসলমানগণ। ফলে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে রুখে দিতে বারবার হয় মীরাটের এসব দাঙ্গা এবং তা হয় পুলিশের পৃষ্ঠপোষকতায়। ১৯৯০ সালে সমগ্র মীরাট শহরে কারফিউ জারি করা হয়। কিন্তু তারই মধ্যে উন্মাদ হিন্দু জনতা প্রকাশ্য দিবালোকে পি.এ.সি. (উত্তরপ্রদেশের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী)-এর ছত্রছায়ায় অবাধে মুসলমানদের প্রাণ ও সম্পত্তির উপর হামলা চালিয়ে যায়। সরকারি হিসাব মতে, ঐ দাঙ্গায় মৃতের সংখ্যা ১১৭, আহত ১৫৯ (আসল সংখ্যা এর চেয়ে বহু বেশি)। ২২শে মে’তে হাসিমপুরা এলাকা থেকে প্রায় ৩০০ মুসলিম যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে ৫০ জনকে মুরাদনগরের কাছে খালের সামনে লাইন দিয়ে দাঁড় করিয়ে গুলি করে শহীদ করা হয়। পরবর্তীতে খালের পানিতে লাশগুলো ভেসে উঠে। পি.এ.সি. জওয়ানেরা সেখানকার একটি মদের দোকান লুট করে গ্রামের দলিত হিন্দুদের বিনা পয়সায় মদ খাইয়ে তাদেরকে মুসলিম নিধনের কাজে লাগায়। (সূত্র: ইতিহাসের এক বিস¥য়কর অধ্যায়: গোলাম আহমদ মোর্তজা, পৃষ্ঠা ২৭)
ভারতে মুসলমানদের উপর যে নির্যাতন হয়, তাও কি সংখ্যালঘু নির্যাতন? ২০০২ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে উগ্র হিন্দুরা গুজরাটে যে স্মরণকালের ভয়াবহ মুসলিম নিধন চালিয়েছিল, সেসময় গুজরাটে ছড়ানো কতগুলো লিফলেট যোগাড় করেছিল পশ্চিমবঙ্গের লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী। এর একটিতে লেখা ছিল ‘ভারত যখন স্বাধীন হয়, তখন ভারতে ৩ কোটি মুসলমান ছিল। আজ ওরা ৩৫ কোটি। ’ (সূত্র: গুজরাট দিচ্ছে ডাক, সম্পাদনা অশোক দাশগুপ্ত, পৃ. ২৬-২৮, ইতিহাসের এক বিস্ময়কর অধ্যায়: গোলাম আহমদ মোর্তজা, পৃ. ৩৪)
যদি ২০০২ সালেই ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা ৩৫ কোটি হয়, তাহলে এই ২০২৪ সালে তা কত হতে পারে? ৫০ কোটির কম তো অবশ্যই নয়!
অর্থাৎ সংখ্যালঘু নির্যাতন নয়, গলা কেটে মুসলমানদের সংখ্যা কমাতেই ভারতে প্রতিনিয়ত দাঙ্গা হয়। আর বাংলাদেশে হচ্ছে সংখ্যাগুরু নিগ্রহ তথা মুসলমাদের হেয় করে আওয়ামী নেতৃত্বে সর্বত্র হিন্দুতোষণ। এদেশের মুসলমানগণ সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার পরও এই সংখ্যালঘু তোষণ একদিন ভারতের ন্যায় তাদের গলাতেও ছুরি হয়ে বসবে। কারণ ভারতেও কিন্তু মুসলমানগণ সংখ্যালঘু নয়!
-আদনান হামিদী আখন্দ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অমুসলিম-বিধর্মীদের নামে রাস্তা-ঘাটের নামকরণ এদেশের মুসলমানদের অপমান করার শামিল
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ফিলিস্তিনি সংবাদ প্রচারে বাধা দিচ্ছে ফেইসবুক এরপরেও কী বিশ্ব মুসলিম ফেইসবুক বয়কট করবে না?
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
গাজায় ইহুদীবাদী আগ্রাসন: আরব সরকারগুলো নীরব ও নিস্ক্রিয় থাকলেও ইহুদী পণ্য বর্জনের মাধ্যমে আরব মুসলিম নাগরিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধে উজ্জীবিত হচ্ছে ইনশাআল্লাহ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উলামায়ে ‘সূ’ আহাজারীর কুফরী মন্তব্যের বিরুদ্ধে অবিলম্বে সব ঈমানদারদের আইনী পদক্ষেপ নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কনসার্ট, যাত্রা, সিনেমা ও জোকারী কায়দায় ওয়াজকারীদের বিরুদ্ধে ইসলাম অবমাননার অভিযোগে আইনী পদক্ষেপ নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইসলামী মূল্যবোধ, আদর্শ ও ইতিহাস থেকে ভালো শাসক হওয়ার শিক্ষা নিতে হবে
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কুখ্যাত জেনাখোর এবং জেনা করার জন্য ওয়াজকারী আমীর হামজা কী? তার ওস্তাদ তারেক মনোয়ারের কাছ থেকেই হারামের (ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী) দীক্ষা পেয়েছে?
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ইতিহাস, লুটপাটের ইতিহাস
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আইনি প্রেক্ষিত
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
গণমাধ্যমে হেডিং হয়েছে, “..... সৌন্দর্য নিয়ে ওয়াজ; ক্ষমা চেয়ে আমির হামজা বললো ‘আমি সুস্থ না’” হক্কানী রব্বানী ওলীআল্লাহ বিরোধী হামজা গং ইলমে তাসাউফের বিরোধীতা করায় ওয়াজের গযবে- এখন জিনা করার জন্য ওয়াজ করেছে। (নাউযুবিল্লাহ)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: কুয়েতে ঋণ নিয়ে নার্সসহ দেড় হাজার ভারতীয়ের পলায়ন অবিলম্বে সব মুসলিম দেশ থেকে ভারতীয় হিন্দুদের উচ্ছেদ করতে হবে ইনশাআল্লাহ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পশ্চিমা মিডিয়ার স্বাধীনতার নমুনা
১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)