বেশির ভাগ দেশের চেয়ে আকারে বড় বিশ্বের বৃহত্তম উদ্যান
, ০৫ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২০ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পাঁচ মিশালী
নেপালের সাগরমাথা ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে পড়েছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের (৮ হাজার ৮৪৯ মিটার) দক্ষিণের ঢাল। ভেনেজুয়েলার কানিমা জাতীয় উদ্যানের অংশ বিখ্যাত অ্যাঞ্জেল পানিপ্রপাত। ৯৭৯ মিটারের (৩ হাজার ২১২ ফুট) অ্যাঞ্জেল পৃথিবীর উচ্চতম পানিপ্রপাত। এদিকে ৪০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত, কম্বোডিয়ার আঙ্কর আর্কিওলজিকেল উদ্যানটি গড়ে তোলা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ এবং প্রাচীন ধ্বংসপ্রাপ্ত নগর সংরক্ষণে। তবে জাতীয় উদ্যানের একটি বড় বিষয় হলো আকার।
ডেলাওয়ার থেকে বড় এবং ওয়েলসের প্রায় সমান আকারের ইয়েলোস্টোন উদ্যান ১৮৭২ সালে যখন পৃথিবীর প্রথম উদ্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন এর আকার বিশাল বলেই বিবেচনা করা হয়। এদের কোনো কোনোটি ইয়েলোস্টোনের চেয়ে ৫০ গুণ বড়। এসব তথ্য উঠে এসেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে।
এবার বরং বিশ্বের বিভিন্ন মহাদেশের বড় বড় উদ্যানগুলোর দিকে নজর দেওয়া যাক-
উত্তর আমেরিকা:
বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের প্রায় অর্ধেকজুড়ে বিস্তৃত নর্থইস্ট গ্রিনল্যান্ড উদ্যানটি বর্তমানে বিশ্বের একক বৃহত্তম উদ্যান এবং ডাঙ্গার সবচেয়ে বড় সংরক্ষিত এলাকা। এটার আকার ৯ লাখ ৭২ হাজার বর্গকিলোমিটার। এতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ২৯টি বাদে বাকি সবগুলোই তার পেছনে পড়েছে।
পার্কের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে গ্রিনল্যান্ডের বরফরাজ্য। তবে এখানে একটি দীর্ঘ, রুক্ষ উপকূলরেখাও রয়েছে। যেখানে কস্তুরি ষাঁড়, মেরু ভালুক এবং আর্কটিক অঞ্চলের অন্যান্য প্রাণীর আবাসস্থল।
দক্ষিণ আমেরিকা:
দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় উদ্যানগুলো গড়ে উঠেছে মহাদেশের সবচেয়ে কম জনবসতিপূর্ণ এলাকা আমাজন ও পাতাগোনিয়ায়। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ-পূর্ব কলম্বিয়ার চিরিবিকেতে জাতীয় উদ্যানের কথা বলতে হয়। আয়তন ৪৩ হাজার বর্গকিলোমিটার। আমাজন রেইন ফরেস্ট, তেপুই বা সমতল চূড়ার পর্বত এবং পাহাড়ি নদীগুলোর বড় একটি অংশকে রক্ষা করা উদ্যানটিকে দেখলে ‘জুরাসিক পার্কে’র মতো একটা কিছু মনে হতে পারে। ডাইনোসর না থাকলে বড় শিকারি প্রাণীর অভাব নেই জায়গাটিতে।
বিস্তৃত উদ্ভিদ এবং প্রাণীজগতের পাশাপাশি ৭৫ হাজারের বেশি প্রাচীন প্রস্তরচিত্র চোখে পড়বে জায়গাটিতে।
অস্ট্রেলিয়া:
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক সংরক্ষিত এলাকাটি খুব বেশি দিন হয়নি গড়ে উঠেছে। মুংগা-থিররি-সিম্পসন উদ্যানের যাত্রা শুরু ২০২১ সালে। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে উত্তরের মরু এলাকাকে রক্ষার জন্যই জায়গাটিকে উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এই জায়গায় আছে পৃথিবীর বৃহত্তম বালিয়াড়ি এলাকা, অ্যাকাশিয়ার জঙ্গল, ঘেসো জমি, বছরের বিশেষ সময়ে তৈরি হওয়া হ্রদ ইত্যাদি। ১৫০ প্রজাতির বেশি পাখি, অস্ট্রেলীয় বুনো কুকুর ডিংগো, বুনো উট, গুইসাপের মতো দেখতে পেরেনটাইসহ বিভিন্ন জাতের বন্যপ্রাণীর দেখাও মেলে জায়গাটিতে। প্রচ- তাপের কারণে গ্রীষ্মকালে উদ্যানটি বন্ধ থাকে।
এশিয়া:
আকারে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মহাদেশ হলেও পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উদ্যান কিন্তু এশিয়া মহাদেশে নেই। ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠিত চীনের সানিয়াগুয়ান উদ্যানটি এই মুহূর্তে আকারে মহাদেশের সবচেয়ে বড় উদ্যান। এর আয়তন ১ লাখ ২৩ হাজার ১০০ বর্গকিলোমিটার। তিব্বতের মালভূমির একটি বড় অংশ পড়েছে এর সীমানায়। এখানকার দুর্গম ও দুরারোহ পার্বত্য এলাকায় অনেক বিপন্ন প্রাণীরই বসবাস। এদের মধ্যে আছে তুষার চিতা, হিমালয়ান নেকড়ে, বুনো চামরী গাই, কস্তুরি মৃগ প্রভৃতি। এর সীমানায় সাংস্কৃতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জায়গাও আছে।
ইউরোপ:
যেহেতু মহাদেশটি আকারে অন্যান্য মহাদেশের চেয়ে ছোট, এখানকার বড় উদ্যানগুলোও পৃথিবীর বড় বড় উদ্যানগুলোর বিবেচনায় ছোট।
এখানকার উদ্যানগুলোর মধ্যে আয়তনে সবচেয়ে বড় আইসল্যান্ডের ভাতনালুকো উদ্যান (১৪ হাজার ১৪১ বর্গ কিলোমিটার)। আগ্নেয়গিরি, উষ্ণ প্রস্রবণ, সামুদ্রিক খাঁড়ি কিংবা হিমবাহ ইত্যাদি রয়েছে এখানে।
আফ্রিকা:
পশ্চিম নামিবিয়ার নামিব-নওকলাফত বিদ্যানটির বড় আকর্ষণ এখানকার বিশাল সব বালিয়াড়ি। উদ্যান এলাকার আয়তন ৪৯ হাজার ৭৬৮ বর্গকিলোমিটার। এখানকার বালিয়াড়িগুলোর কোনো কোনোটি ২০০ মিটারের (৬৫৬ ফুট) বেশি উঁচু।
সহজেই ঘুরে আসা যায় উদ্যানটি থেকে। হট এয়ার বেলুনে চেপে বসলে মরুভূমির অসাধারণ ভূপ্রকৃতি পাখির চোখে দেখার সুযোগ মিলবে।
বালিয়াড়ি ছাড়াও মরুভূমির গিরিখাত, উপকূলে পুরোনো দিনের বিধ্বস্ত জাহাজের দেখা পাবেন। তেমনি পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক স্থানগুলোর একটিতে অভিযোজিত হওয়া বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণী দেখার সুযোগ মিলবে।
উদ্যান না হলেও আফ্রিকার সবচেয়ে বড় সংরক্ষিত এলাকা হলো কাভাংগো-জাম্বেসি ট্রান্সফ্রন্টিয়ার কনজারভেশন এরিয়া। জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়ে, মোজাম্বিক, অ্যাঙ্গোলা ও নামিবিয়ার ৫ লাখ ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে ২০১২ সালে গড়ে ওঠে সংরক্ষিত এলাকাটি।
অ্যান্টার্কটিকা:
গ্রহের নিচের প্রান্তটিতে এখনো কোনো উদ্যান নেই। তবে অ্যান্টার্কটিকার একমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক সংরক্ষিত এলাকা হলো রস সি মেরিন প্রটেকটেড এরিয়া। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত সংরক্ষিত এলাকাটির আয়তন ১৫ লাখ ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার। পেঙ্গুইন, তিমি, সিলসহ বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক পাখি ও মেরু এলাকার নানান প্রাণীর বাস এখানে।
তবে ভবিষ্যতে কোনো এক সময়ে সমগ্র মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকা ওয়ার্ল্ড পার্কে পরিণত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ১ কোটি ৪২ লাখ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উদ্যানটি হবে বিশ্বের অন্য যেকোনো রিজার্ভের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বড়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
শীতে শরীর ও ফুসফুস সুস্থ রাখবে যেসব সুপারফুড
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
চাঁদ নিয়ে রহস্যের জট খুললো, জানা গেল ২৮৩ কোটি বছর আগের ঘটনার ব্যাখ্যা
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বদলে যাচ্ছে রসায়নের শত বছরের পুরনো সূত্র
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাতাস থেকে সরাসরি পুষ্টি পেতে পারে মানবদেহ : গবেষণা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উৎপাদন বাড়াতে ছাঁটাই করা হয় চা গাছ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্দি-কাশি দূর করতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মধুর গুণাগুণ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সর্দি-কাশি দূর করতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মধুর গুণাগুণ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশের যে গ্রামের জনসংখ্যা চারজন!
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ডাবের পানি খেলে শরীরে কি হয়? ডাবের পানির উপকারিতা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ধানের গোলা এখন কেবলই স্মৃতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
১০ হাজার ফুট ওপর থেকেও যেভাবে শিকার দেখতে পায় ঈগল
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওজন আর রক্তচাপ কমায় বিটের রস! বাড়ায় স্মৃতিশক্তি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)