বিশ্বের বৈচিত্র্যময়, অদ্ভুত ও রহস্যময় গাছ ‘বাওবাব ও ড্রাগন ব্লাড’
, ২৯ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৯ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ০৭ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পাঁচ মিশালী
পৃথিবীতে প্রায় ২,৯৮,০০০ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। এতগুলো প্রজাতির মধ্যে কিছু গাছ সুন্দর ও সুগন্ধী ফুল উৎপন্ন করে, কিছু গাছ পুষ্টি-সমৃদ্ধ ফল উৎপন্ন করে, কিছু গাছে আছে ঔষধি গুনাবলী এবং আবার এদের মধ্যে কিছু কিছু উদ্ভিদের রয়েছে পুরোপুরি অদ্ভুত চেহারা ও বৈশিষ্ট্য। এবার বিশ্বের এরকম কিছু অদ্ভুত উদ্ভিদ সম্পর্কে জানা যেতে পারে।
বাওবাব গাছ:
আফ্রিকান নেটিভ অঞ্চলের এই গাছগুলো দেখলে মনে হবে কোনও গ্রহ থেকে এসব গাছ এসে পড়েছে। তবে এই গাছের এক প্রজাতি অস্ট্রেলিয়াতেও পাওয়া যায়। বাওবাব গাছের কান্ড দেখতে অনেকটা বোতলের মত হওয়াতে একে ‘বোতল গাছ’ নামেও ডাকা হয়।
* এদের ভীষণ মোটা গুঁড়ি পানি জমিয়ে রাখতে কাজে লাগে।
* এই গাছের পাতা থেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধও তৈরি হয়।
* বাওবাব ফলে যে চিনি ও পেকটিন থাকে তা দিয়ে কোমল পানীয় তৈরি হয়।
* একে চকোলেট ও আইসক্রিমের সুগন্ধি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।
* ‘কদু’ এর মতো দেখতে বাওবাব গাছের ফল খুব মজাদার যা বানরদের খুব প্রিয় খাবার।
* বাকল থেকে বের হয় শক্ত ও লম্বা আশঁ। যা দিয়ে তৈরি করা হয় রশি এবং কাপড়।
* এদের কান্ড কাঠ খুবই নরম এবং হালকা। তাই যেকোনো জীব জন্তু বা পাখি অনায়াসে ঠুঁকরে গর্ত করে ফেলতে পারে এবং তৈরি করতে পারে রাস্তা।
* অনেক সময় মানুষেরাও এদের গোড়ায় গর্ত করে বিশ্রামাগার তৈরি করে। মরু ঝড়ে মানুষ এই গাছের গুড়ির গর্তে আশ্রয় নিয়ে থাকে।
আধুনিক কার্বন এক্স-রে পদ্ধতিতে প্রমাণিত হয়েছে যে একটি বাওবাব গাছ ৩-৫ হাজার বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।
বাওবাবের কান্ড এত পুরু যে তা অগ্নি প্রতিরোধী। কান্ড থেকে একধরনের তন্তু পাওয়া যায়। সেগুলো থেকে তৈরি হয় দড়ি, যন্ত্রের তার, পানিনিরোধী ব্যাগ, এমনকি ছাতাও। বাওবাব ফুল বেশ বড় এবং দেখতে সাদা রঙের। এদের ফল ১৮ সেন্টিমিটারের মতো লম্বা হয়। প্রমাণ সাইজের ফলগুলো থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শাঁস, যা বেশ সুস্বাদু খাবার। টক-মিষ্টি স্বাদের বাওয়াব ফল দুগ্ধজাত খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
মালাউইয়ের অধিবাসীরা এ ফল দিয়ে তৈরি করে জুস। ভিটামিন সি তে পরিপূর্ন এই ফল, সাথে আছে এন্টি অক্সিডেন্ট এবং পর্যাপ্ত আঁশ। এই এন্টি অক্সিডেন্ট কি করে তা কমবেশি সবারই জানা আছে। শরীরের তারুণ্য ধরে রাখে। এই এন্টি অক্সিডেন্ট আর আঁশ পাকস্থলীকে সুস্থ রাখতে দারুণ কার্যকরী। বীজ থেকে তৈরি হয় তেল, সৌন্দর্যচর্চায় যার দারুণ চাহিদা রয়েছে। ভেজে খেতেও খারাপ নয় বাওবাব বীজ।
আর ফলের খোসা! সেগুলো দিয়ে তৈরি হয় পাল্প এজেন্ট। এদের পাতাও ফেলনা নয়। দারুণ স্বাদের চাটনি তৈরি হয় এদের পাতা সিদ্ধ করে। মালাউই, জাম্বিয়া আর জিম্বাবুয়েতে দারুণ জনপ্রিয় এই চাটনি। টাটকা এবং শুকনো- দু’ভাবেই খাওয়া হয় এদের পাতার নির্যাস। উত্তর নাইজেরিয়াতে এদের আলাদা নাম পর্যন্ত আছে- কুকা। কুকা সুপের প্রধান উপাদান এটি।
ড্রাগন ব্লাড গাছ:
ড্রাগন ব্লাড গাছ ইয়েমেনের উপকূলে আরব সাগরে সুকাত্রা দ্বীপের এই গাছটি দেখতে বেশ অদ্ভুত। ভৌগোলিক পরিবেশ ও বিচিত্র ধরনের উদ্ভিদের কারণে এ দ্বীপটি ‘ভিনগ্রহবাসীদের দ্বীপ’ নামে পরিচিত। হঠাৎ করে গাছগুলো দেখলে মনে হতে পারে বৃহৎ আকৃতির ব্যাঙের ছাতা। বছরে একবার ফুল দেয়। উপযুক্ত পরিবেশে ড্রাগন ব্লাড ট্রি কয়েকশ বছর বাঁচতে পারে। গাছের বৃদ্ধি খুবই ধীরগতিতে হয়। গাছটি প্রায় ৩২ ফুট লম্বা হয়।
- গাছের বিভিন্ন অংশ হোমিওপ্যাথির কাজে লাগে যেমন-গাছের মূলের কষ টুথপেস্ট ব্যবহারে লাগে।
- এ গাছের গভীর লাল আঠালো পদার্থ রং তৈরিতে ও বার্নিশের কাজে ব্যবহৃত হয়।
- ভেষজ গুণাগুণও রয়েছে। স্থানীয় লোকজন সর্বরোগের চিকিৎসায় এই আঠা ব্যবহার করে।
- এ গাছের গভীর লাল আঠালো পদার্থ থাকে, যা দেখে মনে হয় রক্ত ঝরছে।
এই গাছে ছোট কুলের মতো টকটকে লাল রঙের ফল হয়। গবাদি পশুকে স্বল্প পরিমাণে তা খাওয়ালে তাদের স্বাস্থ্যের উল্লেখজনক উন্নতি হয়। তবে বেশি খেলে স্বাস্থ্যহানিও হতে পারে।
গাছের গুঁড়ি থেকে ঘন লাল রঙের আঠা বের হয় যা বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ওষুধ এবং রং তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। ৬০ খ্রিস্টাব্দেও বিভিন্ন দেশে এই আঠা রপ্তানি করা হত। মনে করা হয়, বিশ্বখ্যাত স্ট্র্যাডিভ্যারিয়াস বেহালা রাঙাতেও তা ব্যবহার করা হত। গাছের গাঢ় লাল রস থেকেই স্থানীয়দের মুখে গাছটির নাম হয় ড্রাগন ব্লাড ট্রি।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বদলে যাচ্ছে রসায়নের শত বছরের পুরনো সূত্র
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাতাস থেকে সরাসরি পুষ্টি পেতে পারে মানবদেহ : গবেষণা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উৎপাদন বাড়াতে ছাঁটাই করা হয় চা গাছ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্দি-কাশি দূর করতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মধুর গুণাগুণ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সর্দি-কাশি দূর করতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মধুর গুণাগুণ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশের যে গ্রামের জনসংখ্যা চারজন!
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ডাবের পানি খেলে শরীরে কি হয়? ডাবের পানির উপকারিতা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ধানের গোলা এখন কেবলই স্মৃতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
১০ হাজার ফুট ওপর থেকেও যেভাবে শিকার দেখতে পায় ঈগল
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওজন আর রক্তচাপ কমায় বিটের রস! বাড়ায় স্মৃতিশক্তি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবালের সন্ধান মিললো প্রশান্ত মহাসাগরে
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
স্ট্রবেরি খেলে শরীরে যা ঘটে
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)