জীবনী মুবারক
বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আদী ইবনে হাতেম তাঈ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
বিলাদত শরীফ: (তারিখ উল্লেখ নেই) বিছাল শরীফ: ৬৮ হিজরী (৬৮৭/৬৮৮ খৃ:) বয়স মুবারক: ১২০ মতান্তরে ১৮০ বছর।
, ২৮ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার পূর্বে:
(অবশেষে অনেক ভেবে চিন্তে) আমি অগ্রসর হলাম। আমি যখন পবিত্র মদীনা শরীফে আসলাম, লোকেরা আমার প্রতি ইঙ্গিত করে বলাবলি করতে লাগলেন, এই যে আদী ইবনে হাতেম! এই যে আদী ইবনে হাতেম! অতঃপর আমি কারো কোন কথার প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আসলাম। তিনি আমাকে বললেন, “হে আদী ইবনে হাতেম! ইসলাম গ্রহণ করো, দোযখ থেকে নিরাপত্তা হাছিল করবে। ” আমি বললাম, “আমার একটি ধর্ম রয়েছে। ” নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “তোমার ধর্মকে তুমি যতটুকু জানো, আমি তোমার সেই ধর্ম সম্পর্কে আরো অধিক জানি। ” আমি বললাম, “আপনি কি আমার ধর্মকে আমার অপেক্ষা বেশী জানেন?” তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “হ্যাঁ। ” ইহা তিনি দুই অথবা তিনবার বললেন। অতঃপর তিনি বললেন, “তুমি কি তোমার গোত্রের নেতা?” আমি বললাম, “হ্যাঁ। ” তিনি বললেন, “তুমি কি রাকুসী (খৃষ্ট ও ছাবেঈনদের মধ্যবর্তী এক ধর্মমত বা মাযহাব)? তুমি কি মিরবা’ (مِرْبَاع) (গণীমতের এক চতুর্থাংশ) খেয়ে থাকো?” (জাহিলী যুগে কোন গোত্রের নেতা এককভাবে গণীমতের এক চতুর্থাংশ নিয়ে নিত, যা থেকে অন্যান্যদেরকে অংশ দেয়া হতো না। ) আমি বললাম, “হ্যাঁ। ” তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “এসব নিশ্চয়ই তোমার ধর্মে হালাল নয়। ” তৎপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “হে আদী! ইসলাম গ্রহণ করো, দোযখ থেকে নিরাপদ হয়ে যাবে। ” (অতঃপর) তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “আমি মনে করি অথবা আমি দেখতে পাচ্ছি, (অথবা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এইরূপ বলেছেন,) তোমার জন্য ইসলাম গ্রহণে ইহাই প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, আমার আশপাশে অল্পেতুষ্ট লোকদের ভীড়, আর তুমি দেখছো, মানুষ সম্মিলিতভাবে আমাদের বিরোধিতায় লিপ্ত। ” (অতঃপর) তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “তুমি কি হীরা (ইরাকে) গিয়েছো?” আমি বললাম, “আমি সেখানে যাইনি, তবে এ স্থান সম্পর্কে আমি জানি। ” তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “তুমি শীঘ্রই দেখতে পাবে, একজন মহিলা হীরা থেকে উষ্ট্রের হাওদায় আরোহন করে বিনা প্রতিবন্ধকতায় নিরাপদে বাইতুল্লাহ শরীফে এসে তাওয়াফ করবে এবং কিসরা বিন হরমুয (পারস্য শাসক) তার ধনভান্ডার আমাদের জন্য উন্মুক্ত হবে। ” আমি বললাম, “কিসরা বিন হরমুয?” তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “হ্যাঁ, কিসরা বিন হরমুয। ” ইহা তিনি দুই বা তিনবার বললেন। “আর ধন-সম্পদ এতই বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হবে যে, ছদকা (যাকাত) গ্রহণ করার মত লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। ” (উসুদুল গাবা, ইছাবা, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা)
দ্বীন ইসলাম গ্রহণ:
এক বর্ণনায় আছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাঈ গোত্রে একটি সারিয়া (অভিযান) প্রেরণ করেন। তখন পর্যন্ত তাঈ গোত্র ইসলাম গ্রহণ করেনি। হযরত আদী ইবনে হাতেম তাঈ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পরিবারসহ জাযিরাতে চলে যান। কেউ কেউ বলেছেন, শাম দেশে (সিরিয়া) চলে যান। কিন্তু উনার বোন সাফ্ফানা বিনতে হাতেম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে ছেড়ে যান। তিনি মুসলমানদের জিম্মাদারীতে আসেন এবং দ্বীন ইসলাম কবুল করেন। মুসলমানগণ হযরত সাফ্ফানা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে হযরত আদী ইবনে হাতেম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট পাঠিয়ে দেন। অতঃপর হযরত আদী ইবনে হাতেম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার বোন হযরত সাফ্ফানা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে নিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবার শরীফে আগমন করেন। অতঃপর হযরত আদী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। (উসুদুল গাবা)
হযরত আদী ইবনে হাতেম তাঈ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নবম অথবা দশম হিজরীতে (৬৩০/৬৩১ খৃ:) দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার পর তিনি দ্বীন ইসলাম উনার নিয়ম কানুন সুন্দরভাবে পালন করতে থাকেন এবং বিশেষভাবে তাক্বওয়া পরহেযগারী অবলম্বন করেন। (উসুদুল গাবা, ইছাবা) (চলবে)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সকল কাফিররাই মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৫)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৪)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৯)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)