বিদেশী চিকিৎসকরা শত শত কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য করছে।
আবার বিদেশে চিকিৎসা করতে গিয়েও শত শত কোটি টাকা চলে যাচ্ছে। অথচ দেশেই বিশ্বমানের চিকিৎসক রয়েছেন এবং দেশেই বিশ্বমানের উন্নত চিকিৎসা সম্ভব। প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন।
, ২৪ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৭ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৭ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ০৩ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মন্তব্য কলাম
উল্লেখ্য এসব বিদেশী চিকিৎসকদের অনেকেই বাংলাদেশে অবস্থান করছে টেকনোলজি ট্রান্সফারের নামে। বিএমডিসির নিয়ম অনুযায়ী নিউরোলজি, নিউরো সার্জারি, কার্ডিওলজি, কার্ডিয়াক সার্জারি বিষয়ে বিদেশী চিকিৎসকেরা টেকনোলজি ট্রান্সফারের জন্য আসতে চাইলে বিএমডিসির অনুমোদন নিয়ে আসতে হবে। টেকনোলজি ট্রান্সফারের উদ্দেশ্যে আসলে বাংলাদেশী চিকিৎসকদের প্রশিক্ষিত করবে, রোগী দেখবে তবে তারা টাকা নিতে পারবে না। একজন বিদেশী চিকিৎসক শুধু দাতব্য চিকিৎসা দিতে এলেই বাংলাদেশে অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশন পেতে পারে।
কিন্তু তারা এখানে এসে কিছু বেসরকারি হাসপাতালে প্র্যাকটিস করছে। এদের মধ্যে বিদেশী জুনিয়র ও অখ্যাত ডাক্তার রয়েছে। এদের অনেকের ডিগ্রিই ভুয়া। হাসপাতালে দামি চেম্বার, সাইনবোর্ডে বড় বড় ডিগ্রি দেখে রোগীরাও আকৃষ্ট হচ্ছেন তাদের দ্বারা। অভিযোগ রয়েছে, এসব চিকিৎসক অনেক সময় এখান থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিদেশে।
এসব ডাক্তারের অনেকেই এখন প্রাইভেট চেম্বার করছে এবং কেউ কেউ হাসপাতালের মালিক ও শেয়ারহোল্ডার বনে গেছে। এদের একটি অংশ ভ্রমণভিসায় এসে মাসের পর মাস অবস্থান করছে। মেয়াদ শেষে ফের ভিসা নবায়ন করিয়ে আবার ফিরে আসছে।
বিএমডিসি সূত্রে অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে পাঁচ শতাধিক চিকিৎসক এসেছে ‘দাতব্য’ চিকিৎসার উদ্দেশ্যে। এর বাইরে টেকনোলজি ট্রান্সফারের নামে এসেছে দুই শতাধিক চিকিৎসক। বাংলাদেশে বেশিরভাগ চিকিৎসক আসে ভারত থেকে। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কানাডা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড থেকে আসে। অল্পসংখ্যক আসে নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান থেকে। এদের বেশিরভাগই এখানে অবৈধ প্র্যাকটিস করে থাকে এবং হুন্ডির মাধ্যমে দেশে ডলার পাঠিয়ে দেয়। এরা বছরে শত শত কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে। কোনো ধরণের ভ্যাট ও ট্যাক্স দেয়া ছাড়াই।
টেকনোলজি ট্রান্সফারের জন্য বিদেশী চিকিৎসকদের অবস্থান হয়ে থাকে স্বল্প সময়ের জন্য। কিন্তু টেকনোলজি ট্রান্সফারের নামে এসব চিকিৎসক বছরের পর বছর অবস্থান করে। কিছু প্রাইভেট হাসপাতাল এদেরকে এনে প্র্যাকটিস করার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে, যা অনৈতিক ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অপরদিকে প্রকৃত সত্য হচ্ছে বাংলাদেশে যেসব বেসরকারি হাসপাতালে টেকনোলজি ট্রান্সফারের নামে যেসব বিদেশী চিকিৎসক আসে এরা প্রকৃত পক্ষে কোনো টেকনোলজি ট্রান্সফার করে না। একমাত্র সরকারি হাসপাতালে বিদেশীরা এলে সেখানে এটা হয়। অল্প কয়েকটা ক্ষেত্র ছাড়া অন্য কোনো ক্ষেত্রে আমাদের দেশে টেকনোলজি ট্রান্সফারের প্রয়োজন নেই। বিদেশীরা এখানে আসে অবৈধভাবে টাকা ইনকাম করতে এবং এরা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার করে দিচ্ছে। এটি দেখার দায়িত্ব এনবিআর, বিএমডিসির কিন্তু তারা তাদের দায়িত্বটা পালন করছে না।
তাছাড়া বিদেশী চিকিৎসকরা বিধি ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তির বিধানও একেবারেই ন্যূনতম। ডিএমডিসির আইনে একজন চিকিৎসককে মাত্র পাঁচ হাজার টাকার জরিমানা অথবা এক বছরের কারাদ- অথবা উভয় দ-ের বিধান রয়েছে। তারও নূন্যতম প্রয়োগ করছে না বিএমডিসি। তাছাড়া মুদ্রা পাচার, অবৈধভাবে অবস্থান ইত্যাদি আইনেও এনবিআর, স্বরাষ্ট্র বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
প্রসঙ্গত সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চিকিৎসার জন্য তিনি আর বিদেশে যাবেন না। দেশেই বিশেষায়িত হাসপাতাল আছে। সুতরাং চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া বা বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার কোন প্রয়োজন নেই।
সঙ্গতকারণেই আমরা মনে করি প্রধানমন্ত্রী যদি একথা বলেন, তাহলে অন্য কোন মন্ত্রী, এমপি, সিআইপি, ভিআইপি তাদেরও চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া এখন মুলত একটা ফ্যাশন।
বলার অপেক্ষা রাখেনা- এ প্রবণতা দেশাত্মবোধক নয়। তাছাড়া এ প্রবণতা চালু রাখলে নতুন প্রজন্মও তাতেই অভ্যস্ত হবে। বিশ্বমানের পাশাপাশি দেশে উন্নত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান হওয়ার বিষয়টি অবহেলিতই থেকে যাবে এবং চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রবণতাটি দিন দিন বাড়তেই থাকবে।
বলাবাহুল্য দেশ আজ খাদ্য থেকে তথ্যে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণই নয় বরং সমৃদ্ধ। তাহলে চিকিৎসার ক্ষেত্রেও সমৃদ্ধিময় সম্ভাবনার পথটি অবরুদ্ধ থাকবে কেন? বাংলাদেশীরা যদি সব ক্ষেত্রেই অনন্য অবদান রাখতে পারে তবে বাংলাদেশী চিকিৎসকও বিশ্বমানের চেয়ে পিছিয়ে থাকার এমনটি ভাবার কোনো অবকাশ নেই। এক্ষেত্রে প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন এবং সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা। সরকারী এবং বেসরকারী উভয়ের চেতনাবোধের সমন্বয়ই এদেশেই বিশ্বমানের চিকিৎসার সূচনা করতে পারে।
মূলত, এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ অনন্তকালব্যাপী পালন করার ইলম ও জজবা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)