মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা আনকাবুত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার পরিবর্তে যাদের ইবাদত বা আনুগত্য করো, তারা তোমাদেরকে রিযিক দিতে সক্ষম নয়। তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট রিযিক তালাশ করো, উনার ইবাদত করো এবং উনার শুকরিয়া জ্ঞাপন করো। উনার নিকটই তোমরা প্রত্যাবর্তন করবে”।
বান্দা-বান্দী যদি মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করে, উনার প্রতি তাওয়াক্কুল করে, উনার শোকরগুজারী করে এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করে, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে ইতমিনান দান করবেন এবং এমন কুদরতী রিযিক দান করবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। .. প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব-কর্তব্য হলো- খালিছভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করে, উনার প্রতি তাওয়াক্কুল করে, উনার শোকরগুজারী করে এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করে হাক্বীক্বী মু’মিন-মুত্ত্বাক্বী হওয়া।
, ০২ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ১৩ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২৯ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহাপবিত্র ক্বওল শরীফ-২
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে লোক সকল! যা আমি তোমাদেরকে আদেশ করেছি তা ব্যতীত এমন কিছু নেই যা জান্নাতের নিকটবর্তী করে দেয় এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখে। যা আমি তোমাদেরকে নিষেধ করেছি তা ব্যতীত এমন কিছু নেই যা জাহান্নামের নিকটবর্তী করে দেয় এবং জান্নাত থেকে দূরে রাখে। নিশ্চয়ই রুহুল আমিন, অন্য বর্ণনায় এসেছে রুহুল কুদুস অর্থাৎ হযরত জীবরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি আমার অন্তরে ঢেলে দিয়েছেন যে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোন ব্যক্তি মারা যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তার রিযিক পরিপূর্ণভাবে ভোগ করবে। সাবধান! তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো এবং উপার্জনে উত্তম নীতি অবলম্বন করো আর কাক্সিক্ষত রিযিক পৌঁছার বিলম্বতা যেন তোমাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানির পথে উহা (রিযিক) অন্বেষণ করতে উদ্বুদ্ধ না করে। মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট যা নির্ধারিত আছে তা উনার আনুগত্য ব্যতীত লাভ করা যায় না। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করলে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট যে রিযিক নির্ধারিত রয়েছে সেটাই লাভ করা যাবে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে দু’টি বিষয় বলা হয়েছে। ১. জান্নাতের নিকটবর্তী ২. জাহান্নাম থেকে দূরবর্তী। মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ-নির্দেশ মুবারকই জান্নাতের নিকটবর্তী করে দেয় এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখে। এজন্য মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ-নির্দেশ মুবারক পালন করা ফরয, ওয়াজিব। আর মহান আল্লাহ পাক উনার নিষেধাজ্ঞা জাহান্নামের নিকটবর্তী করে দেয় এবং জান্নাত থেকে দূরে রাখে। তাই নিষেধকৃত বিষয় থেকে বেঁচে থাকা সকলের জন্য ফরজ, ওয়াজিবের অন্তর্ভূক্ত। নামায-কালাম, যিকির-ফিকির, সুন্নত উনার ইত্তেবা, পর্দা, হালাল পন্থায় রিযিক উপার্জন করা, এক কথায় আদেশ-নিষেধ যা করা হয়েছে সেটা পালন করলে বান্দার পক্ষে জান্নাত উনার নিকটবর্তী হওয়া এবং জাহান্নাম থেকে দূরে থাকা সম্ভব হবে। ইনশাআল্লাহ! আর আমাদের শরীয়ত উনার নিষেধাজ্ঞাগুলো মেনে চলতে হবে। যেমন: ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, গান-বাজনা করা, কাফেরদের মুহাব্বত করা, কাফেরদের তর্জ-তরীক্বার অনুসরণ করা যাবে না। এখন এই কাজগুলো যারা করবে তারা জাহান্নামের নিকবর্তী হবে এবং জান্নাত থেকে দূরে থাকবে। নাঊযুবিল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র হাদীছে কুদছী শরীফ উনার মধ্যে এসেছে, “হযরত মা’ক্বিল ইবনে ইয়াসার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের রব তিনি বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি আমার ইবাদতের জন্য অবসর হও অর্থাৎ সময় বের করে ইবাদত কর, তাহলে আমি তোমার অন্তরকে বেনিয়াজ করে দিবো (কারো কোনো মুখাপেক্ষী হতে হবে না) আর তোমার হাতকে রিজিকে পরিপূর্ণ করে দিব (রিযিকের অভাব হবে না)। হে আদম সন্তান! তুমি আমার ইবাদত বা আনুগত্য করা থেকে দূরে সরে যেওনা, তাহলে আমি তোমার অন্তরকে অভাবগ্রস্ত করে দিব (অন্তর সবসময় হয়রান-পেরেশানীর মধ্যে থাকবে) এবং তোমার হাতকে ব্যতিব্যস্ত করে দিব। অর্থাৎ রিযিকের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরবে, রিযিক পাবেনা আবার পেলেও তাতে বরকত লাভ করতে পারবে না। তুমি নানা রকম ঝামেলায় সবসময় পর্যুদস্ত হবে। ” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য না করলে অন্তর সবসময় হয়রান-পেরেশানীর মধ্যে থাকবে, রিযিকের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরবে- রিযিক লাভ করতে পারবে না। আবার রিযিক পেলেও তাতে বরকত লাভ করতে পারবে না। নানা রকম ঝামেলায় সবসময় পর্যুদস্ত থাকবে। এজন্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট রিযিক তালাশ করো, উনার আনুগত্য করো, তাহলে কারো মুখাপেক্ষী হতে হবে না।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যারা ধৈর্য্য ধারণ করবে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার উপর তাওয়াক্কুল তথা ভরসা করবে। এমন অনেক প্রাণী আছে যারা রিযিক সংগ্রহ করতে পারে না। মহান আল্লাহ পাক তিনি সেই প্রাণীকেও রিযিক দেন এবং তোমাদেরকেও দেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি সব শোনেন, জানেন”। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, “যদি তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার উপর তাওয়াক্কুল করার মত তাওয়াক্কুল করতে অর্থাৎ যথাযথ তাওয়াক্কুল করতে, অবশ্যই আমি তোমাদেরকে রিযিক দান করতাম যেমন পাখিকে রিযিক দিয়ে থাকি। তারা ভোরে খালি পেটে বের হয় এবং দিনের শেষে ভরা পেটে বাসায় ফিরে”। এখন যারা হাক্বীক্বীভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার উপর তাওয়াক্কুল এবং সবর করবে তাদেরকেই মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতী রিযিক দান করবেন।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো- বান্দা-বান্দী যদি মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করে, উনার প্রতি তাওয়াক্কুল করে, উনার শোকরগুজারী করে এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করে, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে ইতমিনান দান করবেন এবং এমন কুদরতী রিযিক দান করবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব-কর্তব্য হলো- খালিছভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করে, উনার প্রতি তাওয়াক্কুল করে, উনার শোকরগুজারী করে এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করে হাক্বীক্বী মু’মিন-মুত্ত্বাক্বী হওয়া।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবত্রি সুন্নত মুবারক পালনরে অফুরন্ত ফযীলত মুবারক।
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উত্তম কথা উত্তম গাছরে ন্যায় ফলদায়ক।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আপনি বলুন, দুনিয়াবী সম্পদ সামান্য। আর মুত্তাকীগণ উনাদের জন্য পরকালই উত্তম এবং তোমাদের প্রতি সামান্য অবিচারও করা হবে না। " পরকালরে তুলনায় দুনযি়াবী সম্পদ অতি সামান্য।
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যখন তোমরা কাউকে আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে গালি দিতে দেখবে তখন তোমরা বলবে, তোমাদের এ মন্দ কাজের জন্য তোমাদের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে তিরস্কার করা, গালমন্দ করা কঠিন লা’নতের কারণ।
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক বা পবিত্র জীবনী মুবারক জানা ও বেশি বেশি সর্বত্র আলোচনা করা এবং প্রতিক্ষেত্রে উনাকে পরিপূর্ণরূপে অনুসরণ-অনুকরণ করা সকলের জন্যই ফরয।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বর্তমানে মুসলমানরা যে সারাবিশ্বে ইহুদী-নাছারাদের দ্বারা যুলুম ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তার একটাই কারণ- মুসলমানরা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। নাঊযুবিল্লাহ!¬
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পর্দা বা বোরকা মুসলমানগণ উনাদের দ্বীনি অধিকার আর খাছ করে মুসলিম মহিলাগণ উনাদের সম্মান এবং ব্যক্তিত্বেরও প্রতীক।
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
অন্তর থেকে বদ খাছলতসমূহ দূর করে দিয়ে পবিত্র নেক খাছলতসমূহ পয়দা করার মাধ্যমেই হাক্বীক্বী ইছলাহ বা পরিশুদ্ধতা লাভ সম্ভব। মুহলিকাতের (বদ খাছলত) কারণে ক্বলব বিনষ্ট হয়। আর মুনজিয়াতের (নেক খাছলত) কারণে ক্বলব পরিশুদ্ধ হয়।
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনাকে সম্মান করবেন, আমি ক্বিয়ামতের দিন উনার জন্য শাফা‘য়াতকারী হবো। ” সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বোচ্চ রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সমুন্নত শান-মান মুবারক নিয়ে সংশয় ও সন্দেহ করা, উনাদের সমালোচনা করা সুস্পষ্ট হারাম, কুফরী ও কবীরাহ গুণাহ এবং কঠিন লা’নতগ্রস্ত হওয়ার কারণ। মূলত, উনারাই হচ্ছেন ঈমান এবং জান্নাতের মালিক। উনাদের প্রতি ঈমান না আনলে ঈমানদার হওয়া যায়না। জান্নাতীও হওয়া যায়না।
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার যিকিরকারী ব্যক্তি জীবিত আর যে মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির করেনা সে ব্যক্তি মৃত।
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- সম্মানিত আইয়্যামুল্লাহ শরীফ বা মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ দিবসসমূহ পালন করা সকলের জন্য আবশ্যক।
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)