বানূ নাযীরের সম্মানিত জিহাদ এবং ইহুদী গোত্রকে পবিত্র মদীনা শরীফ থেকে বিতাড়িত করা প্রসঙ্গে (১৩)
, ০৫ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৫ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৪, মে, ২০২৪ খ্রি:, ৩১ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) আইন ও জিহাদ
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
স্মরণীয় যে, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন, সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাইয়্যিদ। উনার পরে আর কোন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা দুনিয়ায় আগমন করবেন না। মহান আল্লাহ পাক তিনি আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনা, উনার খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দেয়া ও উনার ছানা-ছিফত মুবারক করাকে সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জ্বীন-ইনসান ও কায়িনাতবাসীর জন্য ফরয করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَإِذْ أَخَذَ اللّـهُ مِيثَاقَ النَّبِيِّينَ لَمَا آتَيْتُكُم مِّن كِتَابٍ وَحِكْمَةٍ ثُمَّ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مُّصَدِّقٌ لِّمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهِ وَلَتَنصُرُنَّهُ ۚ قَالَ أَأَقْرَرْتُمْ وَأَخَذْتُمْ عَلَىٰ ذَٰلِكُمْ إِصْرِي ۖ قَالُوا أَقْرَرْنَا ۚ قَالَ فَاشْهَدُوا وَأَنَا مَعَكُم مِّنَ الشَّاهِدِين.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে এ মর্মে ওয়াদা মুবারক নিলেন যে, আমি আপনাদের কিতাব ও হিকমত মুবারক হাদিয়া করবো। অতঃপর আপনাদের প্রদত্ত কিতাবের সত্য প্রতিপাদনকারী হিসাবে একজন রসূল (যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, যিনি ইমামুল মুরসালীন, যিনি খ¦তামুন নাবিইয়ীন, যিনি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি) আগমন করবেন! আপনারা অবশ্যই উনার প্রতি ঈমান আনবেন এবং উনাকে পেলে খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দিবেন! মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনারা কি আমার এ ওয়াদা মুবারক স্বীকার ও গ্রহণ করলেন? উনারা বললেন, হ্যাঁ, আমরা স্বীকার করে নিলাম। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তাহলে আপনারা সাক্ষী থাকুন এবং আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী রইলাম”। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ- ৮১)
মূলত; মহান আল্লাহ পাক উনার গোটা কায়িনাতবাসীকে সৃষ্টির উদ্দেশ্যই হচ্ছে, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক করা, উনার গোলামী মুবারক করা, উনার ছানা-ছিফত মুবারক করা ও উনার প্রতি দায়িমী ছলাত-সালাম বা মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ পাঠ করা। অর্থাৎ অনন্তকালব্যাপী পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা। সুবহানাল্লাহ! কাজেই, সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সরাসরি উম্মত বা গোলামী মুবারক করার আরজী মুবারক পেশ করেন। সকলের দোয়াই কবুল করা হয়। তবে সরাসরি উম্মত হিসেবে একমাত্র সাইয়্যিদুনা হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিই আখিরী যামানায় আসবেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত হিসাবে। সুবহানাল্লাহ!
অতএব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার পর যে কোন ধর্মের অনুসারী হোক না কেন, তাদের চূ-চেরা করার কোন সুযোগ নেই। ইহুদী-নাছারাসহ সমস্ত জ্বীন-ইনসানের জন্য ফরয ওয়াজিব হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনা, উনাকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ অনুকরণ করা। যে ব্যক্তি উনার প্রতি ঈমান আনবে না, সে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত। নাউযুবিল্লাহ!
বনূ নাযীর সম্পর্কিত কবিতাবলী:
বনী নাযীর সম্পর্কে প্রসিদ্ধ সীরাত ও তারিখ গ্রন্থসমূহে যে সমস্ত কবিতা উল্লেখ রয়েছে তার মধ্য থেকে কিছু কবিতা এখানে উল্লেখ করা হলো।
বনূ নাযীর সম্পর্কে রচিত কবিতাসমূহের মধ্যে হযরত ইবনে লুকাইম আইছামী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কবিতা উল্লেখযোগ্য। যথা-
أَهْلِي فِدَاءٌ لِامْرِئِ غَيْرِ هَالِكٍ ... أَحَلّ الْيَهُودَ بِالْحِسّيّ الْمُزَنّمِ
আমার পরিবারবর্গ সেই অমর বা চিরজীবী মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি কুরবান, যিনি ইহুদীদেরকে পরদেশে তাড়িয়ে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
يَقِيلُونَ فِي جَمْرِ الغَضَاةِ وَبَدّلُوا ... أُهَيْضِبَ عُودِي بِالْوَدِيّ الْمُكَمّمِ
এখন তারা (অর্থাৎ ইহুদীরা) গাদ্বাহ বৃক্ষের জলন্ত কয়লার উপর দ্বিপ্রহরের নিদ্রা যায়। উদীর উঁচু ভূমির পরিবর্তে তারা ছোট ছোট খেজুর গাছ বিশিষ্ট নিম্নভূমি লাভ করেছে।
فَإِنْ يَكُ ظَنّي صَادِقًا بِمُحَمّدِ صَلّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ ... تَرَوْا خَيْلَهُ بَيْنَ الصّلَا وَيَرَمْرَمِ
যদি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে আমার আক্বীদা সঠিক হয়, তবে আপনারা উনার সৈন্য বাহিনীকে দেখবেন ছলা ও ইয়ারামরামের মাঝখানে।
يَؤُمّ بِهَا عَمْرَو بْنَ بُهْثَةَ إنّهُمْ ... عَدُوّ وَمَا حَيّ صِدّيقٌ كَمُجْرِمِ
তিনি সেই বাহিনী দ্বারা আমর ইবনে বুহছাকে বহিষ্কার করবেন, আসলে তারা ঘোরতর শত্রু। বন্ধু কি শত্রুতুল্য হতে পারে? (চলবে)
-আল্লামা সাইয়্যিদ শাবীব আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)