আত তাক্বউইমুশ শামসী সনের ইতিবৃত্ত (৩)
বর্ষপঞ্জি বা ক্যালেন্ডার ও তার একক সমূহ
, ১৪ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৩ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ০২ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ১৮ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
বর্ষপঞ্জি বলতে বছর গণনা বা হিসাব করার একটি সুশৃঙ্খল তর্জ ত্বরীকাকে বুঝানো হয়। মূলতঃ বর্ষপঞ্জি হচ্ছে মাস, সপ্তাহ ও দিনে বিভক্ত একটি বছর ভিত্তিক সারণি; যেখানে দিন, সপ্তাহ, মাস ও বছর এককগুলো ব্যবহৃত হয়। বর্ষপঞ্জি প্রণয়নের ভিত্তি হলো মহাকাশবিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণলব্দ উপাত্ত। আর এই উপাত্ত দ্বারা সময়ের পরিক্রমাকে বছর, মাস ও দিনে বিভক্ত করা হয়। আবর্তনশীল জ্যোতিষ্কসমূহ পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্য যাদের নিজ অক্ষের উপর ঘূর্ণন ক্রমান্বয়ে দিন, মাস ও বছরের হিসাব সৃষ্টি করে। সৌরজগতে পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্য একে অপরের আবর্তনের ফলে আমরা দিন, মাস ও বছরের হিসাব পাই। যেমন:
দিন : পৃথিবী নিজ অক্ষের উপর প্রতিবার ঘূর্ণনের ফলে এক সৌর দিবস অতিক্রম করে। সাধারণভাবে, ঘড়ির কাঁটার হিসেবে রাত ১২টা থেকে পরবর্তী রাত ১২টার মধ্যবর্তী সময়কে এক পূর্ণ সৌর দিবস ধরা হয়। আবার এক সূর্যাস্ত থেকে পরবর্তী সূর্যাস্তের মধ্যবর্তী সময়কে এক পূর্ণ চন্দ্র দিবস ধরা হয়।
মাস : চাঁদ নিজ অক্ষের উপর আবর্তনের সাথে সাথে পৃথিবীকেও একটি নির্দিষ্ট উপবৃত্তাকার কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করে থাকে। পৃথিবীর চারদিকে একবার ঘুরে আসতে চাঁদের যে সময় লাগে তাকেই চন্দ্রমাস বলে। এটা সাধারণত দু’ অমাবস্যা বা দু’ পূর্ণ জ্যোৎস্ননার মধ্যবর্তী সময়কাল। সাধারণত এই মাস ২৯.৩০৫৫ থেকে ২৯.৮১২৫ সৌরদিবসের মধ্যে পরিবর্তিত হয়। চাঁদের গড় প্রদক্ষিণ কাল বা চন্দ্রমাসের গড় দৈর্ঘ্য হচ্ছে ২৯.৫৩০৫৮৮১ সৌর দিবস। এই পরিক্রমণ হিসাব থেকে ২৯ দিন অথবা ৩০ দিনে একমাস স্থির করা হয়। অর্থাৎ কোন মাস ২৯ দিনে আবার কোন মাস ৩০ দিনে গণনা করা হয়।
বছর : পৃথিবীর আহ্নিক গতির (পৃথিবী নিজ অক্ষে ঘূর্ণয়ন) ফলে যেমন একটি সৌর দিনের হিসেব পাওয়া যায় তেমনি বার্ষিক গতির (সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর ঘূর্ণয়ন) ফলে একটি বছরের হিসেব পাওয়া যায়। সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর প্রতিবার ঘূর্ণয়ন সময়কাল ৩৬৫.২৫ দিন। তাই ৩৬৫ দিনে ১ সৌর বছর গণনা করা হয়। আবার ১২টি চন্দ্রমাস যোগ করলে ৩৫৪-৩৫৫ দিনে এক চন্দ্র বছর হয়। অর্থাৎ প্রতিটি চন্দ্র বছর সৌর বছর থেকে ১০-১১ দিন কম।
সপ্তাহ : সাধারণত ৭ দিনে এক সপ্তাহ হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা সপ্তাহের দিনে সংখ্যার হিসাব বিভিন্নভাবে করে থাকে। কিন্তু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে সৃষ্টির সূচনার পূর্ব থেকেই সপ্তাহের দিনের সংখ্যা ৭টি নির্ধারণ করা হয়েছে।
যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ اَخَذَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِىْ فَقَالَ خَلَقَ اللهُ التُّرَبَةَ يَوْمَ السَّبْتِ وَخَلَقَ فِيْهَا الْـجِبَالَ يَوْمَ الْاَحَدِ وَخَلَقَ الْشَّجَرَ يَوْمَ الْاِثْنَيْنِ وَخَلَقَ الْـمَكْرُوْهَ يَوْمَ الثُّلَاثَاءِ وَخَلَقَ النُّوْرَ يَوْمَ الْاَرْبِعَاءِ وَبَثَّ فِيْهَا الدَّوَابَّ يَوْمَ الْـخَمِيْسِ وَخَلَقَ اٰدَمَ عَلَيْهِ سَّلَمَ بَعْدَ الْعَصْرِ مِنْ يَّوْمِ الْـجُمُعَةِ فِـيْ اٰخِرِ الْـخَلَقِ فِـىْ اٰخِرِ سَاعَةٍ مّنَ النَّهَارِ فِيْمَا بَيْنَ الْعَصْرِ اِلَى اللَّيْلِ.
অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার হাত ধরে বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইয়াওমুস সাব্ত পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, ইয়াওমুল আহাদ পর্বত সৃষ্টি করেছেন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম গাছ সৃষ্টি করেছেন, ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীয়ত কৃর্তক নিষিদ্ধ বিষয়গুলো সৃষ্টি করেছেন, ইয়াওমুল আরবিয়া আলো সৃষ্টি করেছেন, ইয়াওমুল খ¦মীস সব ধরনের প্রাণী সৃষ্টি করেছেন, ইয়াওমুল জুমু‘আ আছরের পর হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সর্বশেষ সৃষ্টি হিসেবে সৃষ্টি করেছেন।” (মুসলিম শরীফ)
অর্থাৎ সপ্তাহের বারসমূহ হচ্ছে-
বার (উচ্চারণ) বার (আরবী)
ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম يَوْمُ الْاِثْنَيْنِ الْعَظِيْمِ
ইয়াওমুছ ছুলাছা يَوْمُ الثُّلَاثَاءِ
ইয়াওমুল আরবিয়া يَوْمُ الْاَرْبِعَاءِ
ইয়াওমুল খ¦মীস يَوْمُ الْـخَمِيْسِ
ইয়াওমুল জুমু‘আ يَوْمُ الْـجُمُعَةِ
ইয়াওমুস সাবত يَوْمُ السَّبْتِ
ইয়াওমুল আহাদ يَوْمُ الْاَحَدِ
-মুহম্মদ আল হিলাল
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)