বদ নযর বা কুদৃষ্টি এবং তার শরয়ী আহকাম (১)
, ০২ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১০ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ০৮ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত, সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। বিশেষত উম্মতে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত। মানুষের কল্যাণের জন্যই উনাদের সৃষ্টি। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ.
অর্থ: তোমরাই সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত। তোমাদেরকে মানুষের কল্যাণের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১০)
উম্মতে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সকলের কল্যাণকামী হবেন, উনাদের দ্বারা কারো কোন ক্ষতি সাধিত হবে না- এটাই স্বাভাবিক।
তবে উনাদের মধ্যে কিছু মানুষ আছে, যারা সেই লক্ষ- উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরে গেছে। তারা অন্যের সুখ-স্বাচ্ছন্দে ঈর্ষান্বিত হয়। পরের ভালো তারা সহ্য করতে পারে না। কখনো তারা স্বেচ্ছায় কারো প্রতি বদ দৃষ্টি দেয়। কখনো বা তাদের অজান্তে তাদের বদ নযর অন্যের উপর পড়ে যায়। ফলে তাদের কুদৃষ্টির দ্বারা উম্মতে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্ষতিগ্রস্থ হন। তাদের বদ নযর, হিংসা-বিদ্বেষ, যাদু-টোনার কারণে মানুষ, জ্বিন, পশু-পাখি, গাছ-পালা, তরু-লতা, ক্ষেত-খামার অফুরন্ত ক্ষতির সম্মুখীন হয়। সাথে সাথে নানা ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনার সূত্রপাত ঘটে থাকে। তাদের সু-নযর কু-নযরে পরিণত হয়।
মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّ النَّظْرَةَ سَهْمٌ مِنْ سِهَامِ إِبْلِيسَ.
অর্থ: নিশ্চয়ই বদ নযর বা কুদৃষ্টি হচ্ছে শয়তানের একটি বিষাক্ত তীর। (আল মুস্তাদরাক লিল হাকিম, আল মু’জামুল কবীর লিত তবারানী ইত্যাদি)
নযর বা দৃষ্টির দ্বারা যখন কারো ক্ষতি সাধিত হয় কিংবা ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে কারো প্রতি নযর দেয়া হয় তখন তাকে বদ নযর বা কুদৃষ্টি বলে। জ্বীন-ইনসান সকল সৃষ্টির বদ নযর বা কুদৃষ্টির প্রভাব (তা’ছীর) আছে। কারো বেশী, কারো কম। এমন কিছু জ্বীন ও ইনসান (মানুষ) আছে যাদের বদ নযর বা কুদৃষ্টির ফলে মানুষ এতই প্রভাবিত হয় যে, শেষ পর্যন্ত তাকে কবরে যেতে হয়। পশু-পাখিদের উপর পড়ে গেলে সেই পশু-পাখি মারা যায়। গাছ-পালা, ক্ষেত-খামারের উপর পড়ে গেলে, ফল ও ফসল নষ্ট হয়ে যায়।
কখনো নিজের বদ নযর নিজের উপরই প্রভাব বিস্তার করে, নিজেরই ক্ষতি সাধন করে। আবার কখনো বা নিজের সন্তান-সন্ততির উপর বদ নযর বা কুদৃষ্টি পড়ে সন্তান-সন্ততির ক্ষতি সাধন করে। তারা নানা রোগ ব্যাধির সম্মুখীন হয়। কখনো অন্যের উপর পড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। মানুষিক কিংবা শারীরিক রোগের সৃষ্টি হয়।
কখনো বা পরহেযগার, মুত্তাকী ব্যক্তিগণের বদ নযর বা কুদৃষ্টির প্রভাব বা তা’ছীর দ্বারা ক্ষতি সাধিত হয়। কেউ বা স্বেচ্ছায় কারো উপর কুদৃষ্টি দেয় আবার কখনো বা অজান্তে কারো উপর অনাকাঙ্খিত অবস্থার সৃষ্টি করে। ফলে মানুষ, পশু-পাখি, গাছ-পালা, তরু-লতা, ক্ষেত-খামারের মধ্যে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়। নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। তাদের মধ্যে অসুস্থতা দেখা দেয়।
অবশ্য জ্বীনদেরও কখনো বদ নযর বা কুদৃষ্টি কারো উপর পড়ে যেতে পারে। তখনও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মানুষিক কিংবা শারীরিক নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়। তাই তো বদ নযর বা কুদৃষ্টি সম্পর্কিত ইলিম বা জ্ঞান হাছিল করা আবশ্যক।
আমরা আলোচ্য নিবন্ধে, বদ নযর কি? বদ নযর কাকে বলে? বদ নযর কখন ও কিভাবে পড়তে পারে? কার উপর পড়তে পারে? তার রূপরেখা কি? বদ নযর থেকে মুক্তির উপায় কি? যাদের বদ নযর ক্ষতিসাধন করে তাদের হুকুম ও করণীয় কি? ইত্যাদি পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফের আলোকে স্বল্প পরিসরে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ!
-আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম, আহলু বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার কতিপয় কামালত মুবারক
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম, আহলু বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার কতিপয় কারামত মুবারক
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছাহিবু ক্বাবা ক্বাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবু লাওলাক, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশকালে প্রকাশিত বেমেছাল মু’জিযা শরীফসমূহ
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
এক নজরে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক-এ আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্ মুবারক
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল হাদী আশার মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কারামত ও কামালত মুবারক
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
এক নজরে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, ত্বহিরাহ, ত্বইয়্যিবাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিবত্বতু রসূল আর রবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
এক নজরে ইবনু রসূলিল্লাহ, আশবাহুল খলক্বি বি-রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুল বাশার, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, আল মুবাশ্শির, আল আবাররু, আল আজওয়াদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)