বছরে লক্ষ লক্ষ হাফেজ-মাওলানা বের হলেও সমাজে কেন অপরাধ কমে না? (১)
, ২৫ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১১ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) আপনাদের মতামত
বর্তমানে মানুষের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। কিশোর থেকে বৃদ্ধ সব বয়সেই বেড়েছে অপরাধ প্রবণতা। রাষ্ট্র অপরাধ দমনে আইন, কানুন, জেল-জরিমানা, কয়েদখানা-জেলখানা বাড়াচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই যেন অপরাধ কমছে না।
অপরাধ বিজ্ঞানীরা বলছে অপরাধ বৃদ্ধির কারণ সমাজে নীতি, নৈতিকতা, আদব বা শিষ্টাচার, ভদ্রতা ইত্যাদির চর্চা উঠে যাচ্ছে। তারা বলছে, এগুলোর চর্চা সমাজে ফিরিয়ে আনলে অপরাধ কমে যাবে। কিন্তু এসব চর্চা কিভাবে মানুষের মাঝে ফিরে আসবে, কিভাবে মানুষ তা নিজের মধ্যে ধারণ করবে, সে সম্পর্কে তারা বলতে পারছে না।
আমরা বলি, সমাজে ধর্ম চর্চা বাড়ালে নীতি নৈতিকতা বৃদ্ধি পাবে, আর নীতি নৈতিকতা বাড়লে অপরাধ বোধ কমে যাবে। কিন্তু আসলেই কি সমাজে ধর্ম চর্চা নেই? লক্ষ লক্ষ মসজিদে ৫ ওয়াক্ত নামায হচ্ছে, লক্ষ লক্ষ মাদরাসায় ছাত্র-ছাত্রীরা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ শিখছে। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ হাফেজ আর কয়েক লক্ষ কামেল মাওলানা বের হচ্ছে। ওয়াজ মাহফিলেরও অভাব নেই। এক বক্তার থেকে অন্য বক্তার গলায় সুর বেশি, ফেসবুক ইউটিউবে ফলোয়ার বেশি, ঘন্টায় মিলিয়ন ভিউ হচ্ছে। এতই যখন ধর্মচর্চা তাহলে সমাজে কেন নীতি নৈতিকতা তৈরী হচ্ছে না? কেন অপরাধ কমছে না?
আসলে দ্বীন ইসলামে জ্ঞান বা শিক্ষাকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. ইলমে ফিকহ।
২. ইলমে তাছাওউফ।
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন, “তিনি (হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে কিতাব তিলাওয়াত করে শুনাবেন আর তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিবেন এবং তাদের তায্কিয়া (অন্তর পরিশুদ্ধ) করবেন।” (সূরা বাকারা শরীফ: ১২৯)
এ আয়াত শরীফ অনুসারে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা হচ্ছে ইলমে ফিকহ আর তায্কিয়া বা অন্তর পরিশুদ্ধ করা হচ্ছে ইলমে তাছাওউফ।
মূলতঃ আমরা মসজিদ মাদরাসায় দৃশ্যত যে শিক্ষা দেখতে পাই, ওয়াজ মাহফিলে যে আলোচনা হয়, এগুলো হলো ইলমে ফিকহের সামান্য অংশ বিশেষ।
অপরদিকে ইলমে তাছাওউফ হচ্ছে অন্তর পরিশুদ্ধের জ্ঞান, যার মাধ্যমে বাস্তবিক অর্থে নীতি নৈতিকতা শেখা যায়। আর এই শিক্ষাটা কোন বই পড়ে পাওয়া যায় না, এই শিক্ষাটি কোন ওলীআল্লাহ বা শায়েখ-মুর্শিদ ক্বিবলার কাছে গিয়ে শিখতে হয়।
সমস্যা হচ্ছে, আমরা মসজিদ-মাদরাসায় শিক্ষা দেয়া ইলমে ফিকহের সামান্য অংশবিশেষকেই সবকিছু মনে করি। কিন্তু ইলমে ফিকহের যে আরো অংশ রয়ে গেছে, এবং ইলমে তাছাওউফ নামক নীতি নৈতিকতা শেখার আলাদা একটি শিক্ষা রয়ে গেছে সেটা জানিও না, অর্জনের চেষ্টাও করি না। আর এজন্যই সমাজে প্রচুর হাফেজ-মাওলানা-ওয়ায়েজ বের হলেও নীতি নৈতিকতা বাড়ে না, বরং ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায়। (চলবে)
-মুহম্মদ গোলাম ছামদানী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিজাতীয়দের দেশগুলোর ‘সন্ত্রাসীপনার’ একটি পরিসংখ্যান
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খিলাফত মানে কী?
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নারিকেল দ্বীপে পর্যটকদের ভ্রমনে বাধা; নেপথ্যে রয়েছে ভয়াবহ ষড়যন্ত্র
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নারিকেল দ্বীপকে যেভাবে করা হয়েছিলো সেন্টমার্টিন
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (৬)
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দূষণের অজুহাতে নারিকেল দ্বীপে যাওয়া নিষিদ্ধ করতে হলে, সবার আগে রাজধানী ঢাকায় মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (৫)
২৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন রোগই ছোঁয়াচে নয়, ছোঁয়াচে বিশ্বাস করা কুফরী
২৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (৪)
২৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (৩)
২৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (৯)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)