বকরীর গোশ্ত খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক
, ১৮ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ২৫ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ১১ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
বকরীর গোশ্তকে আরবীতে لَـحْمُ الشَّاةِ (লাহমুশ শাত্) বলা হয়। বকরীর গোশ্ত খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভূক্ত। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার মধ্যেই রয়েছে সর্বপ্রকার ভালাই। কেননা, মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খইরে কাছির অর্থাৎ সর্বপ্রকার ভালাই হাদিয়া মুবারক করেছেন। আর তিনি যে সমস্ত খাদ্যসমূহ গ্রহণ করেছেন সেই খাদ্যসমূহ উনাদের মধ্যেই রয়েছে সর্বপ্রকার শিফা। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَمْرِو بْنِ اُمَيَّةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ اَخْبَـرَهٗ اَنَّهٗ رَاَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَـحْتَـزُّ مِنْ كَتِفِ شَاةٍ فِىْ يَدِهٖ فَدُعِيَ اِلَى الصَّلَاةِ فَاَلْقَاهَا وَالسِّكِّيْنَ الَّتِيْ يَـحْتَـزُّ بِـهَا ثُـمَّ قَامَ فَصَلّٰى وَلَـمْ يَـتَـوَضَّأْ
অর্থ: “হযরত ‘আমর ইবনে উমাইয়্যাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) দিয়ে বকরীর কাঁধের গোশত থেকে কেটে খেতে দেখেছেন। তারপর নামাযের সময় হলে তিনি তা রেখে দিলেন এবং ছুরিটিও (রেখে দিলেন) যা দিয়ে তিনি কেটে খাচ্ছিলেন। তারপর উঠলেন এবং নামায আদায় করলেন। তিনি (নতুন করে) ওযূ মুবারক করলেন না। ” (বুখারী শরীফ: ১ম খ-, কিতাবুত ত্বয়ামাহ্: পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৫৪০৮)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রিয় খাবার মুবারক ছিলেন গোশ্ত আর গোশ্তের মধ্যে বকরীর বাহু ও কাধের গোশ্ত ছিলেন উনার নিকট সবচেয়ে প্রিয়
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ سَـمْعَانَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ سَـمِعْتُ رِجَالًا مِنْ عُلَمَائِنَا يَـقُوْلُوْنَ كَانَ اَحَبُّ الطَّعَامِ اِلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَللَّحْمَ وَاَحَبُّ الشَّاةِ اِلَيْهِ الذِّرَاعَ
অর্থ: “হযরত মুহম্মদ ইবনে সাময়ান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমাদের আলিমগণ উনাদেরকে বলতে শুনেছি, খাদ্যের মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট গোশ্তই সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন। আর বকরীর গোশতের মধ্যে বাহুর গোশ্তই উনার নিকট সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২/১৫৩)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ عُـبَـيْدَةَ رَضِىَ الله تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ طَــبَخْتُ لِلنَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قِدْرًا وَقَدْ كَانَ يُـعْجِبُهُ الذِّرَاعُ فَــنَاوَلْـتُهُ الذِّرَاعَ ثُـمَّ قَالَ نَاوِلْنِـى الذِّرَاعَ فَــنَاوَلْـتُهٗ ثُـمَّ قَالَ نَاوِلْنِـى الذِّرَاعَ فَـقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَمْ لِلشَّاةِ مِنْ ذِرَاعٍ فَـقَالَ وَالَّذِىْ نَـفْسِـىْ بِـيَدِه لَوْ سَكَتَّ لَـنَاوَلْـتَنِـى الذِّرَاعَ مَا دَعَوْتُ
অর্থ: “হযরত আবূ উবাইদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য এক ডেগ গোশ্ত রান্না করলাম। তিনি বকরীর সামনের উরুর গোশ্ত সবচেয়ে বেশী পছন্দ করতেন। তাই আমি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ বকরীর সামনের একটি পা পেশ করলাম। তারপর তিনি বললেন, আমাকে বকরীর সামনের আরেকটি পা দিন। তখন আমি উনাকে বকরীর সামনের আরেকটি পা দিলাম। তারপর তিনি পুনরায় বললেন, আমাকে বকরীর সামনের আরেকটি পা দিন। তখন আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বকরীর সামনের পা কয়টি থাকে? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, সেই মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! যাঁর কুদরতী মহাসম্মানিত হাত মুবারক-এ আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আমর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র প্রাণ মুবারক)! যদি আপনি চুপ থাকতেন, তাহলে আমি যতক্ষণ বকরীর সামনের পা চাইতাম, ততক্ষণ আপনি সেটা দিতে পারতেন। ” সুবহানাল্লাহ! (মু’জামুল কাবীর ১৬/১৯৪, মুসনাদে বায্যার, শামায়েলে তিরমিযী ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ كَانَ اَحَبُّ اللَّحْمِ اِلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْكَـتْفَ
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট কাধের গোশ্তই সবচেয়ে প্রিয়, পছন্দনীয় ছিলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২/১৫০)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘উরাকুশ্ শাত অর্থাৎ বকরীর নলা বা নেহারী অধিক পছন্দ করতেন:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ كَانَ اَحَبُّ الْعُرَاقِ اِلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عُرَاقَ الشَّاةِ
অর্থ: “হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সবচেয়ে প্রিয় হাড় ছিলেন ছাগলের গোশ্তবিহীন হাড় (নলা) অর্থাৎ নেহারী। ” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাঊদ শরীফ)
কাঁধের গোশত (لَـحْمُ الْكَتِفِ) লাহমুল কাতিফ:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি গোশ্তের মধ্যে কাঁধের গোশ্ত মুবারককে উত্তম বলেছেন এবং খাসী বা বকরীর কাঁধের গোশ্ত মুবারকই সর্বাধিক পছন্দ মুবারক করতেন। এ প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَـمْيَكُنْ يُـعْجِبُهٗ فِي الشَّاةِ اِلَّا الْكَتِفَ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বকরীর কাঁধের গোশ্ত মুবারকই সর্বাধিক পছন্দ করতেন। ” (আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবারের পাত্র কাঠের বাটি বা পেয়ালা
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী চামড়ার বালিশ
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুন্নত মুবারক পালনে কোন হীনম্মন্যতা নয়, বরং সব পরিবেশেই দৃঢ়চিত্ত থাকতে হবে
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা ও মুহাব্বত মুবারকে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘আঙুর’
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সকল ধরণের সুন্নতী খাবার বরকতময় রোগমুক্ত শিফা দানকারী সুন্নতী খাদ্য “ভাত”
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী “টুপি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘ডুমুর’
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)