প্রাণীর ছবি তোলা, আঁকা রাখা হারাম, যা লা’নতগ্রস্ত ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৭)
, ৩০শে জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৫ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
অত্যাচারী ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক তৎকালীন মুসলিম বাঙালী গণিতবিদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট শ্রেণীবিন্যাসের আবিষ্কার চুরি ও বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে কিছু কথা:
পূর্ব প্রকাশিতের পর...
মুসলমান বিজ্ঞানীরা তাদের মেধা খরচ করে যে আবিষ্কার করে, তার পুরো কৃতিত্ব প্রকল্পের নেতৃত্বে থাকা ইহুদী-খ্রিস্টানরাই নিয়ে নেয়। সাথে সাথে এডওয়ার্ড হেনরিকে নাইটহুড দেয়ার মতোই বর্তমানের এসব ইহুদী-খ্রিস্টানদেরকে ‘নোবেল প্রাইজ’ দিয়ে ‘বিরাট বিজ্ঞানী’ হিসেবে জাহির করে পাশ্চাত্যের বিধর্মীচালিত মিডিয়া ও রাষ্ট্রযন্ত্র।
বিপরীতে আবিষ্কারের মূল কৃতিত্ব যে মুসলমান বিজ্ঞানীর, তাকে একটি নামকাওয়াস্তে পিএইচডি ডিগ্রি কিংবা চাকরি ধরিয়ে দিয়েই বিদায় করা হয়। অর্থাৎ বর্তমান মুসলিম উম্মাহ হচ্ছে ধনী পরিবারের পিতৃমাতৃহীন সন্তানের ন্যায়, যার অভিভাবক না থাকার কারণে সে তার পৈতৃক সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। উক্ত এতিম সন্তানকে লোক দেখানো কিছু অর্থ ধরিয়ে দিয়ে যাবতীয় সম্পত্তি দুষ্কৃতিকারীরা গায়ের জোরে দখল করে নেয়, যেভাবে আজ সামান্য পিএইচডি ও চাকরির লোভ দেখিয়ে মুসলমানদের সমস্ত মেধাগুলো কেড়ে নিচ্ছে ইহুদী-খ্রিস্টানরা।
এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে বর্তমান মুসলিম উম্মাহকে তাদের খোদায়ী মনোনীত অভিভাবক, সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মুজাদ্দিদে আ’যম, মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে চিনে নিতে হবে।
সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বহু লাইব্রেরী-গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করছেন, যেন মুসলিম সমাজের মেধাবীরা তাদের প্রকৃত স্থান ও কাজের স্বীকৃতি পেতে পারে, যেন মুসলিম সমাজ ফের আলিম-উলামা ও বিজ্ঞানী- গবেষক- কবি- সাহিত্যিকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে। অভিভাবক ছাড়া, পীর-মুর্শিদ ব্যতীত মুসলিম উম্মাহর প্রতিভা কখনোই বিকশিত হতে পারেনি এবং পারবেও না। ইতিহাসের পাতায় যতো মুসলিম বিজ্ঞানী-সাহিত্যিক আমরা দেখতে পাই, উনারা কেউ অভিভাবকহীন ছিলেন না। উনারা সকলেই ছিলেন উনাদের যামানার হক্কানী ওলীআল্লাহগণ উনাদের মুরীদ।
বর্তমানে মানুষের মধ্যে একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে, বিজ্ঞান অনেক জটিল একটি বিষয়। মূলত কাফিরদের ভুল ও বক্র চিন্তাধারার দ্বারা বিজ্ঞান জটিল রূপ লাভ করেছে। বিপরীতে মুসলমান বিজ্ঞানী উনাদের গবেষণার দ্বারা বিজ্ঞান সহজ, সুন্দর ও সঠিক রূপ লাভ করেছে। এ কারণেই মানবজাতি বর্তমানে বিজ্ঞানকে তাদের দৈনন্দিন জীবনের কল্যাণে ব্যবহার করতে পারছে।
উদাহরণ স্বরূপ, ইতিহাস বিখ্যাত মুসলিম গণিতবিদ মূসা আল খাওয়ারিজমি দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যে সংখ্যা পদ্ধতিতে ০, ১ থেকে শুরু করে ৯ পর্যন্ত মাত্র দশটি সংখ্যা চিহ্ন ব্যবহার করেই মুখে মুখে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ করা সম্ভব হয়। যেমন- ১২৩ কে ১১ দিয়ে গুণ করার অঙ্কটি হলো-
১২৩
x11
123
123x
1353
কিন্তু এই সামান্য হিসাবটিও নীচের মতো ইউরোপীয় খ্রিস্টানদের প্রণীত রোমান সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে করতে গেলে ভয়াবহ জটিল আকার ধারণ করে, যা মোটেই দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহারের উপযোগী নয়-
CXXIII*XI
=(C*X+C*I)+(X*X+X*I)+(X*X+X*I)+
(I*X+I*I)+(I*X+I*I)+(I*X+ I*I)
=(M+C)+(C+X)+(C+X)+(X+I)+
(X+I)+(X+I)
=MCCXCXXIXIXI
=MCCCXXXXXIIII
=MCCCLIII
সংখ্যা বাড়তে বাড়তে যেহেতু অসীম পর্যন্ত পৌঁছায়, সেহেতু রোমান সংখ্যাতত্ত্বের X, I, L, M জাতীয় চিহ্নগুলোও বাড়তে বাড়তে অসীম পর্যন্ত পৌঁছবে। কিন্তু মূসা আল খাওয়ারিজমি উনার প্রণীত দশমিক সংখ্যাতত্ত্ব দ্বারা যতো বড় সংখ্যাই হোক না কেন, তাকে মাত্র দশটি চিহ্ন দ্বারাই প্রকাশ করা সম্ভব।
সংখ্যার পরিধি যেরূপ অসীম, ঠিক সেভাবেই অসীম হচ্ছে মানুষের আঙ্গুলের ছাপের ধরণ। এই পৃথিবীতে দু’জন মানুষের আঙ্গুলের ছাপ কখনোই একই রকম হবে না। এমনকি যমজ সন্তানদের ডিএনএ প্যাটার্ন এক রকম হলেও তাদের আঙ্গুলের ছাপ হয়ে থাকে আলাদা। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন-
بَـلٰى قَادِرِيْـنَ عَـلٰى اَن نُّـسَوِّيَ بَـنَانَـهُ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি মানুষকে তাদের আঙ্গুলের ডগা বা অগ্রভাগসহ নিখুঁতভাবে পুনরুত্থিত করতে সক্ষম। (পবিত্র সূরা ক্বিয়ামা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার অসীম কুদরত মুবারক লুকিয়ে আছে মানুষের এই আঙ্গুলের ছাপের মধ্যে। পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যতো আদম সন্তান দুনিয়াতে যেভাবে ছিল, ঠিক সেভাবেই তাদেরকে হাশরের ময়দানে পুনরুত্থিত করা হবে। এমনকি তাদের আঙ্গুলের ছাপেরও কোন পরিবর্তন হবে না। সুবহানাল্লাহ!
এমতাবস্থায় যদি মানবজাতির এই কুদরতময় আঙ্গুলের ছাপের কোন বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস না করা হয়, তাহলে কোটি কোটি মানুষের মধ্যে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির পরিচয় নির্ণয় করাটা কিছুতেই সম্ভব হবে না।
এ অসাধ্য সাধন করেছিলেন একজন মুসলিম বাঙালী গণিতবিদ, উনার নাম কাজী সাইয়্যিদ আজিজুল হক।
কাজী সাইয়্যিদ আজিজুল হক জন্মেছিলেন হিজরী ১২৮৮ (১৮৭২ খ্রিস্টাব্দ সনে) বাংলাদেশের খুলনা জেলার ফুলতলার পয়োগ্রাম কসবায়। তিনি যখন কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র ছিলেন, তখন ব্রিটিশ সরকারের অধীনে বাংলার পুলিশ বিভাগের ইন্সপেক্টর ছিল এডওয়ার্ড হেনরি, যার নেতৃত্বে তখন আঙ্গুলের ছাপসংক্রান্ত একটি প্রকল্পের কাজ চলছিল। গণিত ও পরিসংখ্যানে মাথা ভালো, এমন কাউকেই এডওয়ার্ড হেনরি খুঁজছিল। ফলে কাজী সাইয়্যিদ আজিজুল হক উনাকে প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষই এ প্রকল্পের জন্য মনোনীত করে। অধ্যক্ষের সুপারিশে ১৩০৯ হিজরী (১৮৯২ ঈসায়ী) কাজী সাইয়্যিদ আজিজুল হক উনাকে পুলিশের একজন সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হয় এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হয়।
-গোলাম মুর্শিদ
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৪)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু ইহুদী ও মূর্তিপূজারী মুশরিকরা
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমানদেরকে ঈমান থেকে সরিয়ে দিতে কাফিরগুলো সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছে
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে পুরুষ ও মহিলা ব্যতীত তৃতীয় কোনো লিঙ্গের অস্থিত্ব নেই
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কথিত স্বজন-পরিজন হলেও কাফিরদেরকে বন্ধু বা অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)