সুওয়াল-জাওয়াব:
প্রসঙ্গ মূর্তি-ভাস্কর্য দ্বীন ইসলামে নিষিদ্ধ
, ১০ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৬ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ১৪ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ২৯ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) শিক্ষামূলক জিজ্ঞাসা
সুওয়াল:
এক মুনাফিক কিছু বাতিল ও মনগড়া দলীল জোগাড় করে মূর্তিকে জায়িয প্রমাণ করার অপচেষ্টা করেছে। তার মূল বক্তব্য হচ্ছে, যে মূর্তিকে পূজা, আরাধনা, ইবাদত করা হয়, যেটা মানুষকে মুশরিক বানায়; সেটা নিষেধ। কিন্তু যে মূর্তিকে আরাধনা ইবাদত করা হয় না বরং যে মূর্তি সৌন্দর্য বাড়ায়, সুসজ্জিত করে সেটা নিষেধ নয়।
অতএব, উক্ত ব্যক্তির এ ধরণের যুক্তি কতটুকু ইসলামসম্মত? দলীলসহ জাওয়াব দিয়ে বিভ্রান্তি নিরসন করবেন।
জাওয়াব:
বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, এসমস্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রতিভাত হয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত মূর্তি ও ছবি নষ্ট করেন এবং এতে হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম এবং উনার সম্মানিতা আম্মা আলাইহাস সালাম উনাদের প্রতিকৃতি অক্ষুণœ থাকার কেনো প্রমাণ নেই। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম ও উনার সম্মানিতা আম্মা আলাইহাস সালাম উনাদের ছবি নষ্ট করতে নিষেধ করেন, তা কেউ বর্ণনা করেননি। এটি সম্পূর্ণই বানোয়াট।
যেমন ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি জীবনী গ্রন্থের দুই ধারক হযরত ইমাম তাবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ও হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা কেউই এ বর্ণনাটি উল্লেখ করেননি। এ দুটো জীবনী গ্রন্থ ছাড়া অন্য কোনো জীবনী গ্রন্থেও এর উল্লেখ নেই।
উল্লেখ্য, হিজরী ৮ম সনে পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের দিন স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম উনাদেরকে সঙ্গে নিয়ে সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত সমস্ত মূর্তি, ভাস্কর্য, ছবি ধ্বংস করে ধুয়ে মুছে পরিস্কার করেছিলেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, মূর্তি, ভাস্কর্য, ছবি ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করার পরেই অর্থাৎ হিজরী ৯ম সনে পবিত্র হজ্জ ফরয করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
আরো উল্লেখ্য, অতীতের কোন বিষয় সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মুখালিফ বা বিরোধী হলে তা মুসলমানদের জন্য গ্রহণ করা বা অনুসরণ করা জায়িয নেই। যেমন- আবুল বাশার হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার যামানা থেকে শুরু করে হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার যামানা পর্যন্ত আপন ভাই-বোনের মধ্যে বিবাহ জায়িয ছিল। তাই বলে কি এখন আপন ভাই-বোন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জায়িয হবে? কখনোই নয়। কেউ যদি জায়িয মনে করে, সে কি মুসলমান থাকবে? বরং সে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। তদ্রƒপ হযরত সুলায়মান আলাইহিস সালাম উনার যামানায় মূর্তি, ভাস্কর্য থাকার দলীল সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বা সম্মানিত মুসলমানদের জন্য কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
যেমন এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত কিতাব পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
هُوَ الَّذِىْ أَرْسَلَ رَسُوْلَه بِالْهُدٰى وَدِيْنِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَه عَلَى الدِّيْنِ كُلِّه ۚ وَكَفٰى بِاللّٰـهِ شَهِيْدًا
অর্থ: তিনি ঐ মহান আল্লাহ পাক যিনি উনার শ্রেষ্ঠতম রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হিদায়েত ও সত্য দ্বীন অর্থাৎ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম তথা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ সহকারে প্রেরণ করেছেন (পিছনের ওহী মুবারক দ্বারা নাযিলকৃত এবং অতীতে, বর্তমানে ও ভবিষ্যতে মানবরচিত সমস্ত দ্বীন-ধর্ম-মতবাদের উপর প্রাধান্য দিয়ে তথা বাতিল ঘোষণা করে। এ ব্যাপারে সাক্ষ্যদাতা হিসেবে মহান আল্লাহ পাক তিনিই যথেষ্ট। (পবিত্র সূরা ফাতহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সুওয়াল-জাওয়াব : প্রসঙ্গ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইলমে গইব শান মুবারক (১)
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দ্বীন ইসলামের বিশেষ রাত সমূহের মধ্যে একটি বিশেষ ফযীলতপূর্ণ রাত ‘পবিত্র শবে বরাত’ (২)
০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ গান-বাজনা, সঙ্গীত নাজায়িজ ও হারাম (৩)
০২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: নামাযের মাসায়িল
৩১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ গান-বাজনা, সঙ্গীত নাজায়িজ ও হারাম (২)
২৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে দোষারোপ করা। নাউযুবিল্লাহ!
২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রসঙ্গ গান-বাজনা, সঙ্গীত নাজায়িজ ও হারাম (১)
১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সুওয়াল-জাওয়াব : প্রসঙ্গ কবীরা গুণাহ কি
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ পাতলা বা টাইপ পোশাক পরিধান
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুওয়াল-জাওয়াব
১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুওয়াল-জাওয়াব
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ ছবি তোলা এবং ছবি সংরক্ষণ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)