প্রসঙ্গ মূর্তি-ভাস্কর্য দ্বীন ইসলামে নিষিদ্ধ
, ২৩ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩০ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১২ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
এক মুনাফিক কিছু বাতিল ও মনগড়া দলীল জোগাড় করে মূর্তিকে জায়িয প্রমাণ করার অপচেষ্টা করেছে। তার মূল বক্তব্য হচ্ছে, যে মূর্তিকে পূজা, আরাধনা, ইবাদত করা হয়, যেটা মানুষকে মুশরিক বানায়; সেটা নিষেধ। কিন্তু যে মূর্তিকে আরাধনা ইবাদত করা হয় না বরং যে মূর্তি সৌন্দর্য বাড়ায়, সুসজ্জিত করে সেটা নিষেধ নয়।
অতএব, উক্ত ব্যক্তির এ ধরণের যুক্তি কতটুকু ইসলামসম্মত? দলীলসহ জাওয়াব দিয়ে বিভ্রান্তি নিরসন করবেন।
জাওয়াব:
অথচ মূর্তি, ছবি বা ভাস্কর্যকে জায়িয প্রমাণ করতে গিয়ে সে দলীল হিসেবে যে পবিত্র হাদীছ শরীফ উল্লেখ করেছে, উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা মানসূখ (রহিত) হওয়ার ব্যাপারে সকলেই একমত। যেমন উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় ‘শরহুল কিরমানী আলাল বুখারী’তে উল্লেখ আছে-
قَوْلُهُ اَلْعَبُ بِالْبَنَاتِ اَىْ بِالتَّمَاثِيْلِ الْمُسَمَّاةِ بِلَعْبِ الْبَنَاتِ وَاسْتَدَّلَّ بِالْحَدِيْثِ عَلٰى جَوَازِ اِتِّخَاذِ اللَّعْبَةِ مِنْ اَجْلِ لَعْبِ الْبَنَاتِ بِهِنَّ وَخَصَّ ذٰالِكَ مِنْ عُمُوْمِ النَّهْىىِ عَنْ اِتِّخَاذِ الصُّوَرِ وَبِهِ جَزَمَ الْقَاضِىُ عَيَاضُ وَنَقَلَهُ عَنِ الْجُمْهُوْرِ قِيْسَ وَقِيْلَ اِنَّهُ مَنْسُوْخٌ بِحَدِيْثِ الصُّوَرِ
অর্থাৎ- শিশুদের জন্য খেলনা পতুল বা মূর্তি ব্যবহার করাকে বৈধ প্রমাণ করতে গিয়ে কেউ কেউ দলীল হিসেবে এ পবিত্র হাদীছ শরীফখানা পেশ করে থাকে। উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা ছবি ও মূর্তি সম্পর্কিত অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর এক্ষেত্রে হযরত কাজী আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জমহূর উলামায়ে কিরাম উনাদের উদ্ধৃতি দিয়ে গুরুত্ব সহকারে বর্ণনা করেছেন যে, বহু সংখ্যক পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দ্বারা উক্ত হাদীছ শরীফখানা মানসূখ বলে সাব্যস্ত হয়েছে। অর্থাৎ এর হুকুম এখন আর বলবৎ নেই।” (হাশিয়াতুল বুখারী ২য় খ- ৯০৫ পৃষ্ঠা ৬নং হাশিয়াহ)
অতএব, পুতুল নিয়ে খেলা সম্পর্কিত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা সকলের মতেই মানসূখ। কেননা অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে মূর্তি, পুতুল, ভাস্কর্য, ছবি ইত্যাদি তৈরি করাকে সরাসরি নিষেধ করা হয়েছে এবং তৈরি করাকে কঠিন গুনাহের কারণ বলা হয়েছে।
তাই সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে পতুল তৈরি করা এবং পুতুল নিয়ে খেলা নাজায়িয ও হারাম।
এই চরম জাহিল ও কাট্টা মুনাফিক জানে না, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শুরুতে অনেক বিষয় ছিল যা পরবর্তীতে মানসুখ বা রহিত হয়ে গেছে।
উদাহরণস্বরূপ পর্দার বিধান নাযিল হয়েছে পঞ্চম হিজরী সনে। পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পূর্বে মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাহ উনারা গইরে মাহরাম পুরুষদের সাথে দেখা করতেন। এখন পূর্বের সেই বর্ণনা দলীল হিসেবে গ্রহন করে কি মহিলারা বেগানা পুরুষদের সাথে দেখা করতে পারবে? কখনোই না।
অনুরূপভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রথমদিকে মদ হারাম ঘোষণা করা হয়নি। পর্যায়ক্রমে তা হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। এখন হারাম ঘোষিত হওয়ার পূর্বের দলীল দিয়ে কেউ যদি মদ খায় বা মদের ব্যবসা করে তা কি জায়িয হবে? কখনোই নয়।
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ اِنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَذَابًا عِنْدَ اللهِ الْمُصَوِّرُونَ
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি শুনেছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- নিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ পাক তিনি কঠিন শাস্তি দিবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে। (বুখারী শরীফ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সত্যের মাপকাঠি
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৯)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কোনো স্থানেই সরাসরি বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করেননি। যা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুলন্দী শান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ মুবারক (৪)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (১)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)