প্রসঙ্গ ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ : মনের লিঙ্গের শেষ কোথায়? (৩)
, ১৯ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৩ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ১৭ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) আপনাদের মতামত
৪. পাঠ্যবইয়ে যে অধ্যায়ে ‘শরীফার গল্প’ আছে, সেই অধ্যায়ের নাম- ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’। অধ্যায় শুরু হয়েছে বেদে সম্প্রদায় দিয়ে। এ দ্বারা একটি যুক্তি বুঝানো হয়েছে, ‘সমাজে বেদে সম্প্রদায় থাকতে পারলে নারী-পুরুষ বাদে অন্য লিঙ্গরা থাকতে পারবে না কেন?
আসলে বিজ্ঞানে নারী ও পুরুষ ভিন্ন অন্য কোন জেন্ডার বা লিঙ্গেরই অস্তিত্ব-ই নেই। সুতরাং অন্য লিঙ্গ থাকতে পারবে, কি পারবে না সেই প্রশ্ন বাহুল্য। আর জেন্ডার বা লিঙ্গ শব্দের উদ্ভব কোথা থেকে এটা আগে আমাদের বুঝতে হবে। যেমন- চোখের কাজ হচ্ছে দেখা, হাতের কাজ হচ্ছে ধরা, পায়ের কাজ হচ্ছে হাটা। তেমনি জেন্ডার বা লিঙ্গের কাজ হচ্ছে প্রজনন। কিন্তু মনের লিঙ্গ প্রজনন করতে পারে না, সুতরাং মনের লিঙ্গ বা জেন্ডারের কোন গ্রহণযোগ্যতাই নেই। আর বেদে সম্প্রদায়ের কথা যদি বলতে হয়, তবে বলতে হবে- বেদে সম্প্রদায় অন্যদের থেকে পৃথক হয়েছে, তাদের পেশা ও সংস্কৃতির কারণে। তারা কিন্তু জেন্ডারের কারণে পৃথক হয়নি। বরং তাদের সমাজেও পুরুষ-মহিলা দুটি জেন্ডারই বিদ্যামান। পেশা বা সংস্কৃতি নির্ভর সম্প্রদায়কে প্রজনন বা জেন্ডারের সাথে মিলিয়ে ফেলা এক ধরনের লজিক্যাল ফ্যালাসি বা কুযুক্তি।
৫. আসলে মনের লিঙ্গকে যদি স্বীকৃতি দিতে হয়, মনের যে কোন দাবীকেই তো স্বীকৃতি দিতে হবে। মানে কেউ যদি মনে মনে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী মনে করে তবে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। কেউ যদি রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে মনে করে, তবে তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। কেউ যদি নিজেকে পুলিশের আইজি বা প্রধান বিচারক কিংবা সেনাপ্রধান হিসেবে দাবী করে, তবে তাকে প্রতিটার স্বীকৃতি দিতে হবে। কিন্তু সমাজ তা দিবে না। কারণ সমাজ কল্পনা নির্ভর চলে না। সমাজের প্রতিটা স্তর বাস্তবতা ও দলিল-প্রমাণ নির্ভর। কেউ নিজেকে মনে মনে কী দাবী করলো সেটা সমাজের কাছে কোন দাম নেই। যে যদি তার দাবীর সাপেক্ষে দলিল ও প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারবে, তাকেই সমাজ সে হিসেবে মেনে নিবে।
এ সম্পর্কে একটা গল্প আছে, ভারতের একটা পাগলা গারদ নিয়ে। ভারতের রাঁচির পাগলা গারদ, নাম- ‘সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি’। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নেহরু। সে সময়ে পাগলা গারদ মানেই রাঁচি। একবার নেহরু রাঁচির পাগলাগারদ পরিদর্শনে গেছে। নেহেরু তার দেহরক্ষী ও পার্শ্বচরদের বললো, তোমরা বাইরেই দাঁড়াও, এটা সেনসিটিভ এরিয়া। এত লোকজন দেখে তারা ভয় পেয়ে যেতে পারে। আমি একাই যাব। নেহেরু ভিতরে খানিক এগোতেই এক সুদর্শন মধ্যবয়স্ক লোক তাকে অভ্যর্থনা জানাতে এগিয়ে এলো। প্রধানমন্ত্রী ভাবলো এ গারদের কর্তাব্যক্তি কেউ হয়ত। লোকটি এবার নেহরুকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব দেখাচ্ছে, আর বলছে, এইখানে ট্রীটমেন্ট হয়, এখানে কাউন্সেলিং রুম। আর এই যেখানে আপনি এখন এলেন, সেখানে যারা কিছুটা ভাল হয়ে গেছে, তারা বাধাহীনভাবে ঘুরতে পারে। তা মহাশয়ের পরিচয়?
নেহেরু অবাক হলো, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে এ লোক চেনে না? খবরের কাগজও কি পড়ে না সে?
নেহরু স্মিত হাসি মুখে এনে বললো, আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওয়াহরলাল নেহরু। লোকটি আস্তে আস্তে তার পিঠ চাপড়ে দিয়ে বললো, “একদম ভাববেন না, সেরে যাবে। পুরো সুস্থ হয়ে যাবেন আপনি। আমিও যখন প্রথম এসেছিলাম, নিজেকে মোতিলাল নেহরু (নেহরুর বাবা) বলে পরিচয় দিতাম।”
অর্থাৎ মানুষ যদি মনে মনে নিজেকে যা খুশি তাই দাবী করা শুরু করে, তবে সে মানসিক অসুস্থ, তার চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু আপনি সমাজে সেই পাগলের পাগলামীর স্বীকৃতি চান, তবে সমাজটাকেই আপনি পাগলা গারদ বানিয়ে ফেলবেন। সমাজকে তো আর পাগলা গারদ বানানো যাবে না, মানসিক অসুস্থদের মানসিক চিকিৎসা দিতে হবে। আর মনের লিঙ্গওয়ালারা যে এক ধরনের মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত এটা তো সবাই জানে। তাদের মানসিক অসুস্থতার নাম জেন্ডার ডিসফোরিয়া। যার জেন্ডার ডিসফোরিয়া হয়েছে তাকে চিকিৎসাকেন্দ্র নিয়ে চিকিৎসা দিন, সুস্থ করুন। কিন্তু আপনি যদি সমস্ত সমাজকে জেন্ডার ডিসফোরিয়া আক্রান্ত করতে চান, তবে তো বিরাট সমস্যা।
-এস হাবীব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুসলমানদের দমিয়ে রাখতেই ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ বুলি
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
এ সকল মুখোশধারীদের আসল পরিচয় অনেকেরই অজানা!
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
১০ ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যুব সমাজকে খেলাধুলার প্রতি ঝুঁকিয়ে দেয়া একটি ভয়াবহ চক্রান্ত
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, তাহলেই রাজধানী হবে সমস্যামুক্ত
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুলুমতন্ত্র থেকে খালিছ ইস্তিগফার-তওবা করুন
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
উপজাতিদের যেভাবে উস্কানি দিচ্ছে এনজিওগুলো
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিন্দুদের পূর্বপুরুষরাও একসময় মুসলমান ছিলো
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাবার খাবেন কোথায়?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের রক্তাক্ত ইতিহাস, যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জায়নবাদী ইহুদী পরিকল্পনার গোপন দস্তাবেজ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মীরা কখনোই চায়নি, এখনও চায় না মুসলমানদের উন্নতি
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)