প্রসঙ্গঃ ভেষজ উদ্ভিদ ও রফতানী
, ২৯ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১২ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ১১ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২৭ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মন্তব্য কলাম
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে বর্তমানে প্রতিবছর ৬২-৬৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের হারবাল সামগ্রী বিক্রি হয়। হারবাল সামগ্রীর আন্তর্জাতিক চাহিদা প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। আমাদের নিকট প্রতিবেশী দেশ ভারত বিশ্ববাজারে হারবাল ওষুধ রফতানির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। তারা প্রতি বছর এ খাতে প্রায় ১ হাজার কোটি রুপি আয় করে থাকে। নেপালও সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে উল্লেখযোগ্য হারে হারবাল সামগ্রী রফতানি শুরু করেছে।
আমাদের দেশে স্মরণাতীত কাল হতেই হারবাল ওষুধ ব্যবহƒত হয়ে আসছে। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে হারবাল ওষুধ রফতানির কোন উদ্যোগ এখনও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। স্থানীয় চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগ পূরণ করা হচ্ছে দেশে উৎপাদিত হারবাল সামগ্রী দিয়ে। ইদানীং আমাদের দেশে হারবাল ওষুধ নিয়ে কিছুটা হলেও সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এখন প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির পাশাপাশি হারবাল চিকিৎসার দিকে ঝুঁকে পড়ছে।
হারবাল চিকিৎসা পদ্ধতির সবচেয়ে বড় গুণ সম্পর্কে বলা হয়, এতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। এছাড়া তুলনামূলক স্বল্পমূল্যের কারণে যে কোন শ্রেণী-পেশার মানুষ এ চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারে। বিশ্বের অন্যান্য স্থানের মতো আমাদের দেশেও ভেষজ চিকিৎসা পদ্ধতির জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।
একটি সূত্র মতে, বাংলাদেশ প্রতিবছর ৫ থেকে ৬শ’ কোটি টাকার হারবাল সামগ্রী বিদেশ থেকে আমদানি করে। এর বেশিরভাগই আসছে ভারত থেকে। অথচ পরিকল্পিতভাবে উদ্যোগ নেয়া হলে বাংলাদেশ হারবাল সামগ্রী উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করেও বিদেশে হারবাল সামগ্রী রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যেতে পারে। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া যে কোন ধরনের হারবাল সামগ্রী উৎপাদনের জন্য খুবই সহায়ক। স্বল্প পুঁজি এবং প্রায় বিনা পরিশ্রমে আমাদের দেশে হারবাল সামগ্রী উৎপাদন করা সম্ভব। কিন্তু এখনও বিষয়টি উপেক্ষিতই রয়ে গেছে।
গবেষকদের মতে, বাংলাদেশে এক সময় প্রায় ৬শ’ প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদ পাওয়া যেত। এখন এদের অধিকাংশই বিলুপ্ত হয়ে গেছে অথবা বিলুপ্তির পথে।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা আবশ্যক তা হল, ভেষজ সামগ্রী শুধু যে হারবাল চিকিৎসায় কাজে লাগে তা নয়। এলোপ্যাথিক ওষুধেরও প্রায় ২৫ শতাংশ উপকরণ সংগ্রহ করা হয় ভেষজ সামগ্রী থেকে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এখনও হারবাল চিকিৎসা বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ৮০ শতাংশ মানুষ কোন না কোনভাবে হারবাল সামগ্রী ব্যবহার করে থাকে।
অতি পরিচিত বৃক্ষ নিম গাছকে একুশ শতকের বৃক্ষ বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এই সাধারণ নিমগাছ থেকে প্রায় দেড়শ’ রোগের ওষুধ তৈরি করা সম্ভব। আমাদের দেশের ওষুধ শিল্পে ভেষজের ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। দেশে অতি সাধারণ অনেক বৃক্ষ আছে যা চমৎকার ঔষধি গুণসম্পন্ন। কিন্তু এগুলো সম্পর্কে আমরা মোটেও জ্ঞাত নই। তাই এদের বাণিজ্যিক ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক বাজারে হারবাল সামগ্রীর চাহিদা যেভাবে বাড়ছে তা বিস্ময়কর।
উল্লেখ্য, আমাদের এখানে উৎপাদিত হারবাল সামগ্রী বিশ্বের যে কোন দেশের হারবাল সামগ্রীর চেয়ে অতুলনীয়। আমাদের এখানে অবহেলা-অনাদরে জন্ম নেয়া হারবাল বৃক্ষ আমলকী, হরতকী, নিম, ঘৃতকুমারি, বহেড়া, চিরতা, শিমুল, পাথরকুঁচি, স্বর্পগন্ধা, কালোমেঘ, বেল, করমচা ইত্যাদি সহজেই আন্তর্জাতিক বাজারে ঠাঁই করে নিতে পারে।
আশার কথা এই যে, আমাদের দেশের কোন কোন স্থানে ইদানীং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হারবাল উদ্ভিদ চাষ শুরু হয়েছে। এই প্রবণতা অব্যাহত রাখা গেলে আগামীতে আমরাও হারবাল সামগ্রী রফতানিতে অংশ নিতে পারব।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা আবশ্যক তা হল, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্পে ইতোমধ্যেই তার সম্ভাবনা জানান দিতে সক্ষম হয়েছে। এলোপ্যাথিক ওষুধের মোট চাহিদার ৯৭ শতাংশই এখন স্থানীয়ভাবে মেটানো হয়।
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ বিশ্বের ৬৫টি দেশে ওষুধ রফতানি করছে। এখানে বছরে প্রায় ২শ’ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে। আমরা যদি পরিকল্পিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করি তাহলে হারবাল সামগ্রী রফতানি করেও কয়েকশ’ কোটি বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।
পাশাপাশি ওষুধ শিল্প একটি শ্রমঘন শিল্প বিধায় এতে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এ খাত বিশেষ অবদান রাখতে পারে।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)