প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৫)
, ২৪ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩০ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ২৮ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১২ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
কা’ব ইবনে আশরাফকে হত্যার পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে বললেন, আপনারা একটা চুক্তি সম্পাদন করুন যাতে তারা যেসব গালি-গালাজ করে ও কষ্ট দেয় তা থেকে তারা যেন বিরত থাকে। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মুসলমান তথা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ও তাদের মাঝে একটা চুক্তিনামা লিখার নির্দেশ মুবারক দান করেন। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, পবিত্র হিজরত মুবারকের ৩য় বছর পবিত্র শাহরুল আ’যম শরীফ কাট্টা কাফির কা’ব ইবনে আশরাফের হত্যার পর চুক্তিনামা ২য় বার সংস্কার করা হয়। ‘যাদুল মা’য়াদে’ উল্লেখ রয়েছে।
وَادَعَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلّمَ مَنْ بِالْمَدِيْنَةِ مِنَ الْيَهُوْدِ، وَ كَتَبَ بَيْنَهُ وَ بَيْنَهُمْ كِتَاباً
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা শরীফে অবস্থানকারী ইহুদীদের সাথে চুক্তি মুবারক সম্পাদন করেন এবং তিনি উনার এবং তাদের মাঝে একটি দলীল লিপিবদ্ধ করেন।” (মুখতাসারু সীরাতু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আল ফুসূলু ফি সীরাতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা মতে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সাথে যে ইহুদীদের ও অন্যান্যদের মধ্যে চুক্তিনামা লিপিবদ্ধ হয় সেটাই পবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ নামে পরিচিত। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র মদীনার সনদের চুক্তিনামা নিম্নে ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করা হলো-
পূর্ব প্রকাশিতের পর
১৮- وَإِنّ كُلّ غَازِيَةٍ غَزَتْ مَعَنَا يَعْقُبُ بَعْضُهَا بَعْضًا،
১৮. এবং আমাদের পক্ষের শক্তিরূপে যারা আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জিহাদ করবে, তাদের একে অপরের পিছনে থাকবে।
১৯- وَإِنّ الْمُؤْمِنِينَ يُبِيءُ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ بِمَا نَالَ دِمَاءَهُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ
১৯. নিশ্চয়ই মু’মিন তথা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা একে অপরকে হিফাযত করবেন, যখন মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তা উনাদের রক্ত মুবারক প্রবাহিত হবে। সুবহানাল্লাহ!
২০- وَإِنّ الْمُؤْمِنِينَ الْمُتّقِينَ عَلَى أَحْسَنِ هَدْيٍ وَأَقْوَمِهِ
২০. আর এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মু’মিন মুত্তাকী তথা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সব চাইতে সহজ-সরল ও সঠিক পথে রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
২১- وَإِنّهُ لَا يُجِيرُ مُشْرِكٌ مَالًا لِقُرَيْشِ وَلَا نَفْسًا، وَلَا يَحُولُ دُونَهُ عَلَى مُؤْمِنٍ
২১. আর কোন মুশরিক কোন কুরাইশদের সম্পদ বা প্রাণের আশ্রয়দাতা হবে না এবং কোন মু’মিন তথা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে এ ব্যাপারে বাধা দিতে পারবে না।
২২- وَإِنّهُ مَنْ اعْتَبَطَ مُؤْمِنًا قَتْلًا عَنْ بَيّنَةٍ فَإِنّهُ قُوّدَ بِهِ إلّا أَنْ يَرْضَى وَلِيّ الْمَقْتُولِ وَإِنّ الْمُؤْمِنِينَ عَلَيْهِ كَافّةً وَلَا يَحِلّ لَهُمْ إلّا قِيَامٌ عَلَيْهِ
২২. আর যে ব্যক্তি কোন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে বিনা দোষে শহীদ করে ও তার সাক্ষ্য-প্রমাণে তা প্রমাণিতও হয়, তবে তার উপর থেকে ক্বিছাছ গ্রহণ করা হবে, হত্যার বদলে তাকে হত্যা করা হবে। হ্যাঁ, যদি শাহাদাতী শান মুবারক গ্রহণকারী ব্যক্তির উত্তরাধিকারী রক্তপণ নিয়ে তাকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়। আর সমস্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের তাতে সায় থাকলে তাহলে স্বতন্ত্র কথা। এ ছাড়া আর কোন বিকল্প ব্যবস্থা নেই অর্থাৎ এটা অবশ্যই করতে হবে।
২৩- وَإِنّهُ لَا يَحِلّ لِمُؤْمِنِ أَقَرّ بِمَا فِي هَذِهِ الصّحِيفَةِ وَآمَنَ بِاَللّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ يَنْصُرَ مُحْدِثًا، وَلَا يُؤْوِيهِ وَأَنّهُ مَنْ نَصَرَهُ أَوْ آوَاهُ فَإِنّ عَلَيْهِ لَعْنَةَ اللّهِ وَغَضَبَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُؤْخَذُ مِنْهُ صَرْفٌ وَلَا عَدْلٌ
২৩. আর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এই লিপি বা সন্ধির বক্তব্য স্বীকার করে নিয়েছেন। আর যারা মহান আল্লাহ পাক উনার উপর ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান এনেছেন, উনাদের জন্যে কোন বিদয়াতীকে সাহায্য করা বা তাকে আশ্রয় দান করা বৈধ হবে না। যে ব্যক্তি তাকে সাহায্য করবে বা আশ্রয় দিবে তার প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত ও তার উপর গযব পতিত হবে ক্বিয়ামতের দিনে এবং তার থেকে কোন মুক্তিপণ বা বদলা গ্রহণ করা হবে না।
২৪- وَإِنّكُمْ مَهْمَا اخْتَلَفْتُمْ فِيهِ مِنْ شَيْءٍ فَإِنّ مَرَدّهُ إلَى اللّهِ عَزّ وَجَلّ وَإِلَى حَضْرَتْ مُحَمّدٍ صَلّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ
২৪. আর যখন তোমাদের মধ্যে কোন বিরোধ উপস্থিত হয়, তখন মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট তা পেশ করতে হবে।
(অসমাপ্ত)
-আল্লামা সাইয়্যিদ আহমদ শাবীব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)