প্রসঙ্গ: প্রকল্পের নামে অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ।
রাষ্ট্রের অপচয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ, বাস্তব দক্ষতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তারা। সরকারের উচিত, দেশের স্বার্থে অহেতুক বিদেশ ভ্রমণের লাগাম টেনে ধরা।
, ০৫ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৮ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ২৬শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ১২ই ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম
এভাবেই প্রশিক্ষন, অভিজ্ঞতা অর্জন, পুকুর খাল কুপ খনন, গরুর প্রজনন, আলু ও ধান চাষ শেখা, লিফট দেখা ইত্যাদি তুচ্ছ কাজে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক সময়ে অযথা বিদেশ সফর না করতে নির্দেশনা দিলেও এই নির্দেশনা মানছেই না সংশ্লিষ্টরা। নানা অজুহাতে তারা বিদেশ সফর করছে। এতে করে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় হচ্ছে।
অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, এ ধরনের বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে নন-টেকনিক্যাল কর্মকর্তারাও টেকনিক্যাল বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, প্রশিক্ষণ শেষে সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা মানা হচ্ছে না। উচ্চপদস্থ সচিব থেকে এই প্রবণতার বাইরে নয় জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কর্মকর্তারাও। অবস্থা এমন দাঁড়িয়ে গেছে যে, কোন পর্যায়ের কর্মকর্তারা কেন বা কোন বিষয়ে কী প্রশিক্ষণ নিতে কোন দেশে যাবে সেসব উল্লেখ করা না হলেও, প্রকল্প অনুমোদনের সময়ই আগে কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের বরাদ্দ নিশ্চিত করে নেওয়া হয়। সংবাদ মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের এমন বিদেশ সফরের আশ্চর্য রোগ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হলেও কিছুতেই তা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
প্রশ্ন উঠছে, রাষ্ট্রের এই বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় করে বিদেশ ভ্রমন কতটুকু সুফল বয়ে আনে? বাস্তবতার নিরিখে ফলাফল প্রায়ই শূন্য। যেমন: রেলওয়ের সংস্কার প্রকল্পের কাজ। এই সংস্কারের নামে অভিজ্ঞতা অর্জনে ছিল বিদেশ সফর। অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন ও মালয়েশিয়ার সফর হয়ে গেছে। রেলকে ঘিরে এই বিদেশ সফর আসলেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন ও মালয়েশিয়ার রেল ব্যবস্থাপনার সাথে বাংলাদেশ রেলওয়ের কোন সামঞ্জস্য নেই। ইতিমধ্যে এই সফরগুলোতে কোটি টাকার উপর ব্যয় হয়ে গেছে। কর্মকর্তাদের এই মানসিক চিন্তাধারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার পরিবর্তে কতটুকু পিছিয়ে দিচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর যতই দিন যাচ্ছে এই প্রতিযোগিতা যেন বেড়েই চলছে। দেশটাকে যেন মহালুটের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের এমন মানসিকতা দেশের অবনতি ছাড়া আর কিছুই নয়।
ভয়াবহ বিষয় হলো সত্যিকার অর্থেই প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না নিয়ে প্রমোদ ভ্রমণের ফলে শুধু দেশের অর্থই অপচয় হচ্ছে না, বাস্তব দক্ষতার বিকাশ থেকেও কর্মকর্তারা বঞ্চিত হচ্ছে। যার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিভিন্ন প্রকল্প এবং দেশের ওপরই পড়বে। এ অবস্থায় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবশ্যই দেশের টাকার এমন অপচয় রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে অবশ্যই কর্মকর্তারা বিদেশে যাবে, প্রশিক্ষণ নেবে, পড়ালেখা করবে, কিন্তু তা যেন কোনোভাবেই শিক্ষাসফরের নামে প্রমোদ ভ্রমণে পর্যবসিত না হয়।
পাশাপাশি, কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়ন দ্রুত করতে গতি বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছে, উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন দেরি হলে ব্যয় যেমন বারে, তেমনি জনগণও সঠিক সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়। তাই বারবার প্রকল্প সংশোধন বন্ধ করতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
পরিকল্পনা কমিশনের আপত্তি এবং ফিজিবিলিটি রিপোর্ট ছাড়াই কিভাবে একনেকে প্রকল্প অনুমোদিত হয়ে যায়, তা নিয়েও প্রশ্ন প্রসঙ্গত আমরা মনে করি স্বাভাবিক। এসব বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রীর মন্তব্য ও পদক্ষেপ যর্থাথ ও সময়োপযোগী। পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগের পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফর, অস্বচ্ছতা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার অবস্থান সৎ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের জন্য আশাব্যঞ্জক। যেখানে অর্থাভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রাধিকারযোগ্য অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না, সেখানে খাল-পুকুর খনন বা ফল উৎপাদন শিখতে কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কোটি কোটি ব্যয় বা অপচয়ের এই মচ্ছব চলতে পারে না। এমন খরচের অনুমোদনের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি না ঘটলেও লোকসান কমানোর অজুহাত তুলে প্রতিবছর বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করা হচ্ছে। এভাবে জনগণের উপর চাপছে বাড়তি ব্যয়ের বোঝা। যে খাতে দুর্নীতি-লুটপাট যত বেশি, সে খাতে কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের বহরও বেশি দেখা যায়। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক বাস্তবতায় এ ধরনের অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, অপচয় এবং লুটপাট বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)